যোধপুর: ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শ্যুটিং চলাকালীন কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের অভিযোগ ওঠে সলমন খানের বিরুদ্ধে। সেটা ১৯৯৮ সাল। তারপর কেটে গিয়েছে ২৬ বছর। সলমনের উপর কী এখনও রাগ আছে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের? তাঁরা কী এখন ভাইজানকে ক্ষমা করবেন?
অল ইন্ডিয়া বিষ্ণোই মহাসভার জাতীয় সভাপতি দেবেন্দ্র বুদিয়া বলছেন, অনেক পুরনো মামলা। বিষ্ণোই সম্প্রদায় এখন সলমন খানকে ক্ষমা করতেই পারে। তবে সম্প্রদায়ের বর্ষীয়াণ সদস্যরা একসঙ্গে বসে এই সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁর মতে, সলমন যদি এখানে এসে তাঁর ভুল স্বীকার করেন এবং ক্ষমা চান তাহলে বিষ্ণোই সমাজ তার ২৯টি নিয়মের অধীনে ক্ষমা করতেই পারে।
advertisement
দেবেন্দ্র বুদিয়া জানান, বিষ্ণোই সমাজ ২৯টি নিয়মে বাঁধা। এর মধ্যে কেউ ভুল ত্রুটি করলে তাঁকে ক্ষমার বিধানও রয়েছে। ২৯টি নিয়মের মধ্যে এটি দশম বিধান। তিনি বলেন, “বিষ্ণোই সমাজের ধর্মীয় গুরু ভগবান জাম্বেশ্বরজি প্রণীত ২৯টি নিয়মের মধ্যে এমন একটি নিয়ম রয়েছে যার মাধ্যমে কেউ কোনও অপরাধ করলে আমরা তাঁকে করুণা এবং ক্ষমা করতে পারি।’’
মন থেকে ক্ষমা চাইলে দয়া দেখানো যায়: যদি কেউ মন থেকে ক্ষমা চায়, তাহলে তাঁর প্রতি দয়া দেখানো যায়। লোকাল 18-কে এমনটাই বললেন দেবেন্দ্র বুদিয়া। অল ইন্ডিয়া বিষ্ণোই মহাসভার জাতীয় সভাপতির কথায়, “বিষ্ণোই সমাজ কখনও কারও ক্ষতি চায় না। যখন কেউ মন থেকে ক্ষমা চায়, তাঁর প্রতি আমরা করুণা দেখাই। সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বসে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।“
সেদিনের ঘটনা এখনও মনে জ্বলজ্বল করছে: বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের মহীপাল বিষ্ণোই বলেন, “১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসের সেই রাতের কথা আজও মনে আছে। রাত তখন ২টো। গাড়ির আলো জ্বলতে দেখে সন্দেহ হয় যোধপুরের কানকানি গ্রামের বাসিন্দাদের। এরপর আচমকাই গুলির শব্দ। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সবাই। দেখেন দুটি কৃষ্ণসার হরিণ মরে পড়ে রয়েছে। আর জিপসিতে চেপে কয়েকজন পালাচ্ছে। পরে জানা যায়, হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শ্যুটিং চলাকালীন সহ অভিনেতাদের সঙ্গে শিকারে গিয়েছিলেন সলমন খান।“
বিষ্ণোই সমাজের ২৯ নিয়ম: সামাজিক শান্তি, প্রকৃতি প্রেম এবং ধর্মীয় অনুশাসন বজায় রাখতে ২৯টি নিয়ম মেনে চলে বিষ্ণোই সমাজ। এই নিয়ম জীবনের প্রতিটা দিককে স্পর্শ করে তা ব্যক্তিগত আচার-আচরণ, প্রকৃতির প্রতি দায়িত্ব বা সামাজিক দায়বদ্ধতাই হোক না কেন। সেগুলি হল –
সকালে স্নান এবং পবিত্রতা বজায় রাখা।
শালীনতা, তৃপ্তি এবং শুদ্ধতা পালন করা।
সকাল-সন্ধ্যা প্রার্থনা।
সন্ধ্যায় আরতি এবং ভগবান বিষ্ণুর স্তব গাওয়া।
সকালে যজ্ঞা করা।
জল ফিল্টার করে পান এবং স্পষ্ট কথা বলা।
জ্বালানী এবং দুধ পরিশোধন করা।
ক্ষমা ও সহনশীলতার অনুশীলন।
দয়া ও বিন্ম্রভাবে জীবনযাপন।
চুরি করা পাপ।
নিন্দা করা উচিত নয়।
মিথ্যা বলা যাবে না।
তর্ক-বিতর্ক এড়িয়ে চলা।
অমাবস্যায় উপবাস।
বিষ্ণুর পূজা।
সকল জীবের প্রতি সদয় ভাব।
গাছ রক্ষা করা।
নিজের হাতে রান্না।
তামাক, গাঁজা এবং অ্যালকোহল সেবন না করা।
মাংস আহার নিষেষ।
নীল রঙের পোশাক পরা উচিত নয়।