গত বছর সেপ্টেম্বরে ঠানের ওই রেস্তরাঁয় কাজ করতে শুরু করে শরিফুল৷ তার আগে ওরলির এক রেস্তরাঁয় চাকরি করত৷ বেতন ছিল ১৩ হাজার টাকা৷ তার থেকে নিজের জন্য ১ হাজার টাকা রেখে বাকিটা বাংলাদেশে মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিত, জানিয়েছে পুলিশি জেরায়৷ সেখান থেকে চুরির দায়ে চাকরি হারানোর পর ঠানের রেস্তরাঁয় কাজ শুরু করে৷ কিন্তু সেখানে বিনা কারণে কাজ চলে যাওয়ার পর ডাকাতি করার কথা ভাবে শরিফুল৷
advertisement
জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে মেঘালয়ের ডাওকি নদী পেরিয়ে ভারতে ঢোকে৷ সেখান থেকে পৌঁছয় অসমে৷ তার জন্য দালালকে ১০ হাজার টাকা ঘুষও দিতে হয় তাকে৷ অসম থেকে বাসে কলকাতায় পৌঁছয় শরিফুল৷ কলকাতায় ৩ দিন কাটিয়ে বাসে মুন্বই পৌঁছয় মে মাসে৷ মুম্বইয়ে প্রথম কয়েক দিন কাটায় পথের ধারে, এদিক ওদিক ঘুরে৷ মাসখানেক পর ওরলির রেস্তরাঁয় কাজ শুরু করে৷
ডিসেম্বরের শেষে এবং জানুয়ারির শুরুতে বান্দ্রার অভিজাত এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে রেকি চালায় শরিফুল৷ তার পর ১৫ জানুয়ারি গভীর রাতে ডাকাতির পরিকল্পনায় সইফ আলি খানের বাড়িতে হানা দেয়৷ সইফকে ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত করে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায় শরিফুল৷ বান্দ্রা-খের থেকে ট্রেনে পৌঁছয় দাদারে৷ তখনও সে জানত না তার হাতে গুরুতর জখম যিনি হয়েছেন তিনি নামী বলিউডি তারকা৷ পুলিশের কাছে এমনটাই জানিয়েছে সে৷ পাশাপাশি, পুলিশকে ধৃত শরিফুল এও জানিয়েছে যে সে শাহরুখ খানের ফ্যান৷ বান্দ্রায় কিং খানের বাংলো ‘মন্নত’-এ উঁকিঝুঁকি দেওয়ার চেষ্টাও করে৷ কিন্তু ব্যর্থ হয়৷ তার বন্ধুবান্ধবরা নাকি প্রায়ই বলত শরিফুলকে দেখতে শাহরুখ খানের মতো৷
আরও পড়ুন : মাদারিহাট উপনির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের পরে প্রথম আলিপুরদুয়ার সফরে মুখ্যমন্ত্রী, বিশেষ গুরুত্ব চা বলয়কে
কিন্তু কী করে পলাতক শরিফুলের সন্ধান পেল পুলিশ? সেখানে সূত্র হিসেবে কাজ করে মোবাইল৷ গত ১৮ জানুয়ারি ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে ৬ টাকায় এক কাপ চা এবং ৬০ টাকা দিয়ে এক প্লেট পাও ভুর্জী কিনে খায় সে৷ এটাই তার কাল হয়৷ ই-ওয়ালেট ব্যবহার করা মাত্র তার লোকেশন ট্র্যাক করে ফেলে পুলিশ৷ তার পর ধরতে আর সময় লাগেনি৷ মোবাইলের পাশাপাশি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে শরিফুলের টুপি, স্কার্ফ এবং জামা৷ অপরাধের পর এগুলি সে পরিবর্তন করেছিল৷ তবে যে ছুরি দিয়ে সইফ আলি খানকে আঘাত করা হয়েছিল তার খোয়া যাওয়া অংশ এখনও পায়নি পুলিশ৷