TRENDING:

Manoj Mitra Obituray: সাজানো বাগান বা আদর্শ হিন্দু হোটেলের রান্নাঘরই নয়, তাঁর যত্নে লালিত বাঙালির মনন ও যাপন

Last Updated:

Manoj Mitra Obituray: ১৯৫৮ সালে যখন দর্শনে স্নাতক হচ্ছেন, তত দিনে তাঁর মনে নাটকের বীজ অঙ্কুরিত হয়ে গিয়েছে৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের সময় ভূমিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে মনোজ মিত্রের নাটকের দল ‘সুন্দরম’

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
ওপার বাংলায় বাড়ির উঠোনে পুজোর সময় যাত্রাপালায় অভিনয়ের ইচ্ছে শৈশবে ছিল ষোলআনা৷ করা হয়নি বড়দের নিষেধে৷ সেই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য মনোজ মিত্রকে অপেক্ষা করতে হয়েছে বেশ কয়েকটি বসন্ত৷ সাতক্ষীরার গ্রামে মনের মধ্যে যে সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল, সেটি জ্বলতে শুরু করেছিল দেশভাগের পর, ইছামতীর এ পারে৷ স্কটিশ চার্চ কলেজের দর্শন বিভাগের ছাত্রজীবনে৷ ১৯৫৮ সালে যখন দর্শনে স্নাতক হচ্ছেন, তত দিনে তাঁর মনে নাটকের বীজ অঙ্কুরিত হয়ে গিয়েছে৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের সময় ভূমিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে মনোজ মিত্রের নাটকের দল ‘সুন্দরম’৷
মনোজ মিত্র (১৯৩৮-২০২৪)
মনোজ মিত্র (১৯৩৮-২০২৪)
advertisement

নাটকের টানেই আর দর্শনের অধ্যাপক হয়ে থাকা হল না৷ হয়ে গেলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য বিভাগের অধ্যাপক৷ এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই বিভাগীয় প্রধান ‘শিশিরকুমার ভাদুড়ি’ অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেন৷ পরিচালনা, অভিনয়ের মাঝেই কলম থেকে ঝরে পড়েছে ‘সাজানো বাগান’, ‘চোখে আঙুল দাদা’, ‘কালবিহঙ্গ’, ‘পরবাস’, ‘অলকানন্দার পুত্রকন্যা’, ‘নরক গুলজার’, ‘অশ্বত্থামা’, ‘চাকভাঙা মধু’, ‘মেষ ও রাক্ষস’, ‘মুন্নি ও সাত চৌকিদার’, ‘বৃষ্টির ছায়াছবি’, ‘যা নেই ভারতে’-এর মতো মণিমুক্তো৷

advertisement

নাট্যজগতের এই প্রতিষ্ঠান যখন বাংলা সিনেমায় এসেছেন অভিনেতা হিসেবে, তখন ধরা দিয়েছেন স্বকীয়তায় ভরা নতুন আঙ্গিকেই৷ দীর্ঘ কেরিয়ারে ‘গণশত্রু’, ‘ঘরে বাইরে’, ‘দামু’, ‘শত্রু’-সহ একাধিক ছবি থাকলেও মনোজ মিত্র বাঙালির হৃদমাঝারে থাকবেন বাঞ্ছারাম হয়ে৷ তাঁর নিজের লেখা ‘সাজানো বাগান’ নাটক থেকেই তপন সিনহা বানিয়েছিলেন এই ছবি৷ শুধু এই ছবিতেই নয়, মনোজ সযত্নে রক্ষা করে গিয়েছেন বাংলা অভিনয়ধারার সজীবতাকেই৷ তাঁর অভিনয়ের সহজাত কৌতুকরস সঞ্চারিত হত খলচরিত্রের অভিনয়েও৷ নীচু লয়ে, কেটে কেটে সংলাপ বলার ধরন অনবদ্য এবং অনণুকরণীয়৷

advertisement

মঞ্চ, বড়পর্দার পাশাপাশি মনোজ মিত্র দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন দূরদর্শনেও৷ আটের দশকের শেষে রাজা সেনের পরিচালনায় ১৩ পর্বের এই ধারাবাহিক মাইলফলক হয়ে আছে কলকাতা দূরদর্শনের ইতিহাসে৷ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাশ্বত উপন্যাসের মূল চরিত্র ‘হাজারি ঠাকুর’-কে ফুটিয়ে তুলেছিলেন সৃষ্টিরসের অস্থিমজ্জায়৷ জীবনে শূন্য থেকে শুরু করা হাজারি বামুন যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন, সেই ওঠাপড়াকে লাইট সাউন্ড ক্যামেরার বাইরে মূর্ত করে তুলেছিলেন মনোজ৷ পদ্ম ঝি-র ভূমিকায় সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় এবং হাজারি বামুনের চরিত্রে মনোজ মিত্রের অভিনয়ের দ্বন্দ্ব, টানাপড়েন দাগ কেটে গিয়েছিল দর্শকমনে৷ আজকের চড়াদাগের সোপ অপেরার দিনে ছোটপর্দায় তাঁদের সেই অভিনয়ের সূক্ষ্মতা বিরলতম৷ সেই সূক্ষ্মতাকে উপজীব্য করেই নাট্যব্যক্তিত্ব মনোজ মিত্রের তাঁর অবাধ বিচরণ ছিল সত্যজিৎ রায়, তপন সিনহা, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, তরুণ মজুমদার, গৌতম ঘোষ, বাসু চট্টোপাধ্যায়, শক্তি সামন্তর পরিচালনায়৷ মনোজ মিত্রের সঙ্গে অভিনয়ে সঙ্গত দিত তাঁর শরীরী ভাষাও৷ ‘বাঞ্ছারামের বাগান’-এ তাঁর শারীরিক অভিব্যক্তি, কণ্ঠস্বরও অভিনয়ের মাধ্যম৷ তরুণ বয়সে অভিনয়ে বার্ধক্যযাপন তাঁর অভ্যাস ছিল অনেক আগেই৷ নিজের ঠাকুরদাকে কেন্দ্র করে লিখেছিলেন জীবনের প্রথম একাঙ্ক নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’৷ সেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্র বৃদ্ধের ভূমিকায় অভিনয় করতেন নিজেই৷ সেই মুনসিয়ানাই ফিরিয়ে এনেছিলেন বড় পর্দায়৷.

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
​'শুভ বিজয়া' সন্দেশ স্পেশালে মন মজেছে জনতার! বর্ধমানের মিষ্টির দোকানে ভিড়
আরও দেখুন

১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর সাবেক বাংলার খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমার ধূলিহর গ্রামে ভূমিষ্ঠ হওয়া অশোককুমার মিত্রের জ্যেষ্ঠ সন্তান মনোজের জীবনের সকালবেলায় স্বপ্ন ছিল কবিতা লেখা৷ সেই কবিতাই তিনি লিখে গিয়েছেন আজীবন, তাঁর অভিনয়ে৷ হেমন্তের সকালে থেমে গেলেন তাঁর ৮৭ তম জন্মদিনের কিছু দিন আগেই৷ পড়ে রইল বাঞ্ছারামের শিশি আর ভাঁড়৷ যাতে বন্দি আমাদের মন ভাল রাখার ঠিকানা৷ রেখে গেলেন বেচু চক্কোত্তির আদর্শ হিন্দু হোটেলের হাতা খুন্তিও৷ ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানোর রসায়নে পাক দেওয়ার জন্য৷

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Manoj Mitra Obituray: সাজানো বাগান বা আদর্শ হিন্দু হোটেলের রান্নাঘরই নয়, তাঁর যত্নে লালিত বাঙালির মনন ও যাপন
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল