'পাঠান'-এর বাজারে গতকালও ১০টা হাউজফুল! 'দিল খুশ' হয়ে গিয়েছে। কারণ প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা না কমলেও, শো-এর সংখ্যা এসে ঠেকেছে একটা কি দু'টোয়। মোটা থেকে রোগা হওয়ার পর যেভাবে 'আগে ও পরে'র ছবি দেয়, ঠিক সেভাবেই 'দিলখুশ'-এর শো-এর তালিকা ক্রমশ শীর্ণকায় হয়ে চলেছে। তার কারণ অবশ্যই শাহরুখ খান। কিন্তু পরিচালক হিসেবে আমি রেগে আছি কিনা জিজ্ঞাসা কললে, আমি বলব, না। রেগে নেই আমি।
advertisement
উনি শাহরুখ খান। যেভাবে দু'দিন ধরে হলে হলে মানুষের পাগলামি চলছে, তাতে ভাল লাগছে। আহা! এই ভিড়টা কতদিন দেখিনি। চার বছর পর বাদশা ফিরেছেন। হলমালিকরা তো এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, এই ছবি ভারতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। আর আমি, এখন শাহরুখের 'কভি হাঁ, কভি না' পর্যায়ে আছি। নিশ্চয়ই কোনও দিন 'পাঠান'-এর পর্যায়ে পৌঁছতে পারব। সেদিন না হয় আমার ছবির জন্য এমনই ভিড় হবে।
রাগ হয় নিজের উপর। এমন ছবি তো বানাতে পারিনি যা দেখার জন্য প্রেক্ষাগৃহ উপচে পড়বে। এমনও কিছু ইতিহাস গড়ে ফেলিনি। মানুষের মধ্যে এত উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারিনি। সেটা অস্বীকার করার জায়গা নেই।
আরও পড়ুন: পাঠান চললে অন্য ছবি বাদ, নির্দেশ মানা হচ্ছে সিঙ্গল স্ক্রিনে, ধাক্কা খাচ্ছে বাংলা
তবে হ্যাঁ, গত বছর আমার প্রথম ছবি 'কিশমিশ' যখন ভাল ব্যবসা করেছে বা 'কর্ণ সুবর্ণের গুপ্তধন', 'প্রজাপতি' বক্স অফিসে ভাল পারফর্ম করেছে, তখন তো ডিস্ট্রিবিউটাররা মন খুলে হল দিয়েছেন, শো দিয়েছেন।
আর আমরা কি জানতাম না যে ২৫ তারিখ 'পাঠান' মুক্তি পাবে। তাতে যে বাংলার ছবির শো টাইম কমবে, তাও জানা কথা। এটা খানিক দুঃসাহসিক কাজ করে ফেলেছি হয়তো। কিন্তু সেই হলমালিকদের কথা ভেবে ভাল লাগছে যাঁরা লাভের মুখ দেখতে পাননি এতদিন। আমার ছবি তো সেভাবে ব্যবসা দিতে পারেনি। হয়তো 'পাঠান' চালিয়ে তাঁরা সেই লোকসানের হাত থেকে বাঁচবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মুক্তি পায়নি, কলকাতায় ব্ল্যাকে টিকিট কেটে ‘পাঠান’ দেখলেন ঢাকার নায়ক!
তবে হ্যাঁ যশরাজ ফিল্মস এমন একটি শর্ত আরোপ করেছে বলে শুনেছি যে যে সিঙ্গল স্ক্রিনে 'পাঠান' চলবে, সেখানে বাংলা ছবি বা অন্য কোনও ছবি চলবে না। খুবই অনৈতিক শর্ত। ঠিকই। কিন্তু ওদের উপর রাগ করে লাভ আছে? আমাদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া আছে কি? নিজেদের রাজ্যে মাঝে মাঝেই নন্দন নিয়ে যেভাবে দ্বন্দ্ব চলে, সেটা কি মেনে নেওয়া যায়? বলিউড বনাম টলিউডের যুদ্ধে নামতে চাই না। বরং নিজেদের মধ্যে আগে সমস্যাগুলো আগে মেটানো হোক। আমরা যদি একে অপরকে শিল্পীর তকমা দিয়ে থাকি, তাহলে নন্দন পাওয়া না পাওয়ার সময়ে রাজনীতির প্রসঙ্গ উঠছে কেন? রং কেন প্রাধান্য পাচ্ছে? অনেক যুদ্ধের পর আমার ছবি যদিও নন্দন ১ পেয়েছে আজ থেকে। দুপুর ১টার শো টাইমটা ভাল নয়, তাও অর্ধেক হল ভর্তি হয়েছে। আর রাধা স্টুডিও পাওয়া গিয়েছে বিকেল ৬টা। যেটায় হাউজফুল হয়েছে।
তবে যদি দেখি, 'পাঠান' আর ভাল লাগছে না মানুষের, বা ছবির মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন সকলে, সপ্তাহান্ত পেরিয়ে গেল, তার পরেও সেই বাংলা ছবিগুলোর শো টাইম বাড়ানো হল না, তাতে আমার রাগ হত। যদি দেখা যায়, আমার ছবি তৃতীয় সপ্তাহেও হাউজফুল যাচ্ছে, কিন্তু অথচ সিঙ্গল স্ক্রিনে তত বেশি বাংলা ছবি চলছে না বলে লোকে চাইলেও দেখতে পাচ্ছে না, তখন হয়তো আমিও অসন্তুষ্ট হব। সেটা এবার সময়ের খেলা। শেষে আবারও লিখতে চাই, সিনেমার জয় হোক।