জাভেদ আখতার বলে চলেন যে, ১৯৮৪ সালে শাবানার সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি। সেই সময় তৈরি হয়েছিল এক চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি। কারণ তখনও পর্যন্ত প্রথম স্ত্রী হানি ইরানির সঙ্গেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন জাভেদ আখতার। আসলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের থেকেও বেশি প্রথম স্ত্রী হানির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা ছিল অনেকটা বন্ধুর মতো।বরখা দত্তের মোজো স্টোরি-র কাছে বর্ষীয়ান এই লেখক এবং গীতিকার বলেন যে, “আসলে আমাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক খুবই কম। আমরা খুবই ভাল বন্ধুত্ব। আসলে একটা ভাল বিবাহের জন্য আমার কাছে একমাত্র যোগ্যতা হল – তুমি কি বন্ধু না কি বন্ধু নও? বিয়ে-টিয়ে আসলে বেকার কাজ।”
advertisement
বিয়ের বিষয়েও নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নিয়েছেন জাভেদ আখতার। তিনি জানান, বিয়ে শুধু ‘বর’ এবং ‘বউ’-এর মতো তকমা নয়। এটা আসলে ভাল বন্ধুত্ব গড়ে তোলা এবং একে অপরের প্রতি বোঝাপড়া। জাভেদ আখতারের কথায়, “স্বামী এবং স্ত্রী-র মতো শব্দ আবার ভিন্ন ভিন্ন অর্থে পরিণত হয়েছে। এটা তা-ও ভুলে যাওয়া যাক। দু’টি মানুষ, তাঁদের লিঙ্গ নির্বিশেষে তাঁরা একসঙ্গে আনন্দে আর সুখে থাকতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন পারস্পরিক বোঝাপড়া। সেই সঙ্গে পারস্পরিক বিবেচনারও প্রয়োজন হয়। এর পাশাপাশি জরুরি একে অপরকে স্পেস দেওয়াও।”
জাভেদ আখতার আরও জানান যে, একটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে উভয় পার্টনারকে এটা বুঝতে হবে যে, প্রত্যেকেরই নিজস্ব লক্ষ্য এবং স্বপ্ন রয়েছে। আর উভয়েরই তার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার সমানাধিকার রয়েছে। জাভেদ বলে চলেন যে, “আমদের সকলেরই মনে রাখা উচিত যে, অন্যদিকে থাকা ব্যক্তিটিও রক্তমাংসে গড়া মানুষ। তাঁদেরও নিজস্ব আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং স্বপ্ন রয়েছে। আমার স্বপ্নের উপর আমার যতটা অধিকার রয়েছে, ঠিক ততটাই তাঁরও নিজের স্বপ্নের উপর অধিকার রয়েছে। এর এটাই হল আসল বিষয়। এটা কোনও রকেট সায়েন্স নয়। আসলে বিষয়টা খুবই সাধারণ। আপনারা নিজেরা যদি সুখী থাকেন, তাহলেই একে অপরের সঙ্গে সুখে জীবন কাটাতে পারবেন।”
তিনি আরও বলেন যে, “আর একটা বিষয়ও মাথায় রাখা আবশ্যক। আর সেটা হল সম্মান ছাড়া ভালবাসা কিন্তু একটা প্রতারণাও বটে! বলে রাখা ভাল যে, একজন স্বাধীনচেতা মহিলা, যাঁর নিজস্ব মতামত, নিজস্ব কাজ রয়েছে, তাঁরা খুব একটা উপযুক্ত নন। অবশ্যই একজন মানুষ, যিনি আপনার সঙ্গে বসবাস করছেন এবং আপনার দাস নন, তিনি অসুবিধায় পড়তে বাধ্য! কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে যে, তাঁরা কোনও ক্রীতদাস নন।”