১৯৩৭ সালের ২৪ জুলাই অবিভক্ত ভারতের অ্যাবটাবাদে জন্ম হয় মনোজের। মাত্র দশ বছর বয়সে চোখের সামনে দেখেন দেশভাগ। উত্তাল সেই সময়ে তাঁর পরিবার চলে আসে দিল্লি। আশ্রয় হয় শরণার্থী শিবিরে। সেই দিনগুলোর কথা কোনওদিনই ভোলেননি অভিনেতা।
অনেকেই জানেন না, মনোজ ছিলেন অভিনেতা দিলীপ কুমারের ভক্ত। ১৯৪৯ সালে মুক্তি পায় ‘শবনম’। সেই ছবিতে দিলীপ কুমারের চরিত্রের নাম ছিল ‘মনোজ’। ব্যস, হরিকৃষ্ণ গিরি গোস্বামী নিজের নাম বদলে ফেললেন। হয়ে গেলেন মনোজ কুমার। তখনও তিনি রূপালি পর্দায় পা রাখেননি। ১৯৫৭ সালে ‘ফ্যাশন’ ছবির হাত ধরে তিনি বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন। ততদিনে তিনি মনোজ কুমার হয়ে গিয়েছেন।
advertisement
মনোজের ছবি মানেই দেশ, ভারত। ভারতে তাঁর দেশ, তিনি ভারতের কথা বলেন। এ যেন তাঁর স্টাইল স্টেটমেন্ট। “শহীদ” (১৯৬৫), “উপকার” (১৯৬৭), “পুরব অউর পশ্চিম” (১৯৭০), “রোটি কাপড়া অউর মকান” (১৯৭৪)-এর মতো একের পর এক ছবিতে দেশমাতৃকাকেই গর্বের সঙ্গে তুলে ধরেছিলেন অভিনেতা। তাঁর ছবির দেশাত্মবোধক গান আজও রক্তে আগুন ধরায়। “আয়ে বতন আয়ে বতন হামকো তেরি কসম”, “মেরে রঙ দে বাসন্তী চোলা”, “মেরি দেশ কি ধরতি”, “সারফারোশি কি তমান্না”-এর মতো গান তাঁকে এনে দেয় নয়া খেতাব, ‘ভারত কুমার’। মনোজ আর ভারত যেন একে অপরের সমার্থক হয়ে যান।
শুক্রবার সকালে ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন মনোজ কুমার। অভিনেতার মৃত্যুর পর বিবৃতি দিয়ে তাঁর পুত্র কুণাল গোস্বামী জানিয়েছেন, বর্ষীয়ান অভিনেতা দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ঈশ্বরের কৃপায় তিনি শান্তিপূর্ণভাবেই বিদায় নিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে কুণাল বলেছেন, “দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ঈশ্বরের কৃপায় তিনি শান্তিতেই এই পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছেন। আগামীকাল তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে।“ মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, মনোজ কুমারের মৃত্যুর কারণ সিভিয়ার হার্ট অ্যাটাক। ডিকম্পেনসেটেড লিভার সিরোসিস-এও ভুগছিলেন, যার কারণে তাঁর স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটে।