নন্দনের ৪০ বছর উদযাপনে আজ নিউজ 18 বাংলায় কলম ধরলেন তিনজন উঠতি অভিনেতা-অভিনেত্রী। ননন্দ যাঁদের স্বপ্ন দেখিয়ে ছেড়ে দেয়নি, সত্যিও করেছে।
আরও পড়ুনঃ ‘ব্রাত্যবাবুকে অনুরোধ করেছি…’ ব্রাত্য বসুকে কী বিষয়ে চিঠি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের!
দেবাশীষ রায়: নন্দন মানে আমার কাছে জীবনে প্রথমবার বাবার হাত ধরে সিনেমা দেখতে যাওয়া। ফেলুদাকে চেনা, ঋতুপর্ণ ঘোষ কে বড়পর্দায় দেখা, টিন টরেটো যীশু দেখতে দেখতে এই নন্দনেই বাবাকে প্রথম জানিয়েছিলাম যে আমিও বড়পর্দায় অভিনয় করতে চাই। বৃষ্টি ভেজা দিনে নন্দনের ফোয়ারার কাছে দাঁড়িয়ে ওপারে তাকালে ক্যাথিড্রাল চার্চকে দেখে মনে হয় যেন কেউ ছবি এঁকে দিয়েছে। নন্দনের পাশে একাডেমির আড্ডাটা অনেক দুঃখ কষ্ট আবেগ যন্ত্রণা ভুলিয়ে দেয় তার সঙ্গে হরিদার দোকানে চা। এই নন্দন চত্বরেই আমার প্রথম পথনাটকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সেবার দেবাদিত্য মুখোপাধ্যায়ের সাথে অভিনয় করেছিলাম। তবে সেই আনন্দ আরও ছাপিয়ে গেল সেদিন, যেদিন নিজেকে প্রথমবার নন্দনের বড়পর্দায় ‘ব্রহ্মা জানে গোপন কম্মটি’ ছবিতে, এবং একই সঙ্গে ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ ছবিতে দেখলাম। নন্দন আমার কাছে স্বপ্নঘর।
advertisement
শ্রীতমা দে: নন্দন আমার কাছে সিনেমা হল হিসেবে পরিচিত নয়। আমার কাছে নন্দন মানে কলেজ শেষে নন্দন বসে লেবু চা আর প্রতম সিগারেট। পরবর্তীতে ‘সাহেবের CUTLET’ ছবিতে নিজেকে বড়পর্দায় দেখা সেটা একটা অন্যরকম ফিলিং আমার কাছে। আমার মনে হয় নন্দন সবার, একজন বাচ্চারও যতটা নন্দন ততটাই একজন বৃদ্ধারও। এখন নন্দনে আড্ডার পরিমাণ কমেছে তবে সেটা মিস করি খুব।
মৃত্যুঞ্জয় নাথ: আমার কাছে নন্দন নিজের কাছে নিজেরই একটা চ্যালেঞ্জের নাম। যেকোনো অভিনেতার কাছেই নন্দন একটা আবেগ অন্তত: আমার কাছে তো বটেই। প্রথম যখন অভিনয় করার জন্য একটু একটু করে পা বাড়াচ্ছি বাড়ি থেকে বাইরে প্রথম যেদিন কলকাতা আসি সবার প্রথমে নন্দনে যাই জায়গাটাকে চোখের দেখা দেখবো বলে,কারণ এই জায়গাটি সিনেমাকে বছরের পর বছর ধরে কথা বলতে সাহায্য করছে,আমার প্রথম একটি ছবির কথা হয় নন্দনের চলচ্চিত্র উৎসব থেকে বাসে করে ফেরার পথে, প্রথম যখন নন্দনে ঢুকি তখন দেখি একজন সনামধন্য অভিনেতা নন্দন থেকে বেড়িয়ে আসছেন সম্ভবত নিজের কোনো সিনেমার Hall Visiting থেকে,তখন বহু মানুষ তাঁকে ঘিরে উচ্ছসিত হয়ে পড়েন তখন থেকে যতবার নন্দনে যাই সেখানে দাঁড়িয়ে আমি বারবার ভেবেছি প্রেক্ষাগৃহে আমার নিজের অভিনীত ছবিও চলবে একদিন। চলেওছে একটি Documentory Film”The Transformer”, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক অশোক ভিশ্বনাথন স্যারের পরিচালনায় “হেমন্তের অপরাহ্ন”, তথাগত মুখার্জির পরিচালনায় “পারিয়া”।
নন্দনে বসে সময়ে অসময়ে আড্ডা দেওয়াটা ম্যান্ডেটরি। এছাড়া আমার মন খারাপে মন ভালো করার জায়গাও নন্দন।যদি কোনো দিন মন খারাপ হয় নন্দনে গিয়ে চুপ করে বসে থাকি আপনা থেকেই মনটা ভালো হয়ে যায় অদ্ভুত ভাবে।কত মানুষ আছে যাদের সাথে হয়ত বহু দিন কথা হয় না, কথা হওয়া দেখা হওয়ার অভাবে ভুলতে বসি তাদেরকেও নন্দনে নতুন করে খুঁজে পাই। নন্দনের এটাই ম্যাজিক।