দুই বলি নায়িকা কামিনী কৌশল আর মধুবালার সঙ্গে দুরন্ত প্রেম । বিয়ে করেছিলেন নিজের অর্ধেক বয়সের সায়রা বানুকে (Saira Banu) । ৪৪ বছরের দিলীপের নতুন বৌ তখন মাত্র বাইশের । শুরু হল তাঁদের রূপকথার পথচলা । তাঁদের দাম্পত্য যেন চির নবীন, চির যুবতী। এমন আদর্শ দাম্পত্যের উদাহরণ বলিউডে খুব বেশি দেখা যায় না । ৫৪ বছর একে অপরের ভরসার কাঁধ হয়ে ছিলেন তাঁরা । কিন্তু কোনও সন্তান ছিল না তাঁদের ।
advertisement
২০১২ সালে একবার হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে দিলীপ কুমার এ বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন । বলেছিলেন, ‘হয়তো খুব ভাল হত আমাদের ছেলেমেয়ে থাকলে । কিন্তু আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা মেনে নিয়েছি । এ জন্য আমাদের কোনও দুঃখ নেই, অনুশোচনাও নেই । যদি শূন্যতার কথা বলেন, তা হলে সেটা নিয়েও আমাদের মধ্যে অনুযোগ নেই কোনও । আমাদের বিশাল পরিবার । আমার ভাইপো-ভাইঝি, তাঁদের সন্তানাদি রয়েছে । তাঁদের সঙ্গে হাসিতে, মজায় দিন কেটে যায় । সায়রা ছোট পরিবার । তাঁর ভাই সুলতানের ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনিরা রয়েছে । আমরা নিজেদের খুব লাকি মনে করি ।’’
তা হলে তাঁর নিজের বংশ, তাঁর উত্তরাধিকারী কে হবেন, কে এই বিপুল মান, সম্মান, খ্যাতির ধারক-বাহক হবেন? এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ সাহাব উত্তর দেন, ‘‘আমি অনেক নায়ককে দেখেছি, আমার ধারা তাঁরা স্বেচ্ছায় বহন করতে ইচ্ছুক । একবার এক নব-প্রজন্মের ঝকঝকে তরুণ এসে আমাকে বলেছিল, স্যার আমি আপনার দেখা পথে চলতে চাই । এই কথা শুনে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতায় আমার মন পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল । তিনি যা আমাকে দিয়েছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না ।’’
বহুদিন ধরেই ভুগছিলেন তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে ভুগছিলেন ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তী দিলীপ কুমার (Dilip Kumar) । বুধবার সকালে ৯৮ বছরে প্রয়াত হলেন তিনি । শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় এর মধ্যে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে । বহু বার তাঁর মৃত্যুর গুজবও রটেছিল । কিন্তু সমস্ত গুঞ্জনকে মিথ্যে প্রমাণ করে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি । এ বার আর তা হল না । মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে গত ৩০ জুন থেকে ভর্তি ছিলেন তিনি । গতকালও তাঁর স্ত্রী সায়রা বানু জানান, দিলীপ সাহাবের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে পারলেন না আর । সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও শতক ছোঁয়া হল না দিলীপ সাহাবের ।