প্রশ্ন: গজল প্রচার করতে হচ্ছে কেন? তার মানে কি আজকাল যে গান তৈরি হচ্ছে, সেগুলি গজল-এর সংস্কৃতিকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে?
অনুপ জলোটা: আজকাল যে গান তৈরি হয়, সেগুলিকে আমি খারাপ বা ভুল বলছি না৷ কারণ সেখানেও তো সাতটি সুর দিয়েই গান বানানো হয়েছে। কিন্তু যখনই সেই গানে নোংরা কথা বা শব্দ বসছে, কোথাও আবার গালিগালাজও বসানো হচ্ছে। সেই গানগুলি বাচ্চারা গাইছে। মা-বাবার সামনেও গাইছে। যেমন, 'বেবি ডল' গোছের গানগুলি। এটা তো আমাদের সংস্কৃতিই নয়। অন্য দিকে 'গজল' তো আসলেই কবিতা। সেই শব্দগুলি পরের প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিলে আমরা ভারতীয় ঐতিহ্যের কাছাকাছি পৌঁছব। 'চৌদহভি কা চাঁদ হো, ইয়া আফতাব হো, যো ভি হো তুম, খুদা কি কসম লাজবাব হো।' তবেই না এ রকম গান রচিত হয়েছে। কেন এত দিন পর্যন্ত মানুষ কেন মনে রেখেছেন এই গানগুলি? কারণ শব্দ প্রথম, সুর পরে। তাই আজও এই গানগুলি মানুষের মনে বিরাজ করছে।
advertisement
আরও পড়ুন: মনে আছে ভুতুকে? সে আজ কিশোরী, কেমন আছে আর্শিয়া? দেখুন ছবিতে
প্রশ্ন: প্রায় চার দশক ধরে আপনি সঙ্গীতের জগতে কাজ করছেন, হিন্দি ছবিতে প্লেব্যাক করতে বেশি ভাল লাগে, নাকি শ্রোতাদের সামনে ভজন, গজল গাইতে বেশি ভাল লাগে?
অনুপ জলোটা: আমি সবই গেয়েছি। ভজন, গজল, হিন্দি গানের প্লেব্যাকও করেছি। কিন্তু কী জানেন, যখনই এক সমুদ্র লোকের সামনে বসে ভজন, গজল গাই না, সেই মানুষগুলির অনেক কাছাকাছি চলে যাই। শ্রোতাদের সামনে বসে তাঁদের হাততালি, আনন্দ, সব যেন প্রাণ ছুঁয়ে যায়। কিন্তু প্লেব্যাক করা মানে তো রেকর্ডিং স্টুডিওতে দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে একা একা গান গাওয়া, ওতে প্রাণ নেই। তাই প্লেব্যাককে আমি বাকি সব ধরনের গানের পরে রাখব।
প্রশ্ন: কলকাতা কেমন লাগছে? বাঙালি খাবার খেলেন?
অনুপ জলোটা: কলকাতা যত বারই আসি না কেন, মন ভরে না। বার বার ভাবি, আবার কবে আসব। কারণ এই শহরের বাতাসে বাতাসে সংস্কৃতি বয়ে বেড়ায়। আর বাঙালি খাবারও আমার খুব পছন্দ। আর এখানে এসে মাছের পাতুরি খেতে খুব ভালবাসে।
আরও পড়ুন: মঙ্গলে রকেট পাঠাতে হিন্দু ক্যালেন্ডার ব্যবহার করেছে ভারত! মাধবনের মন্তব্যে ব্যাপক বিতর্ক
প্রশ্ন: 'বিগ বস ১২'-এ অংশ গ্রহণ করার জন্য রাজি কেন হয়েছিলেন?
অনুপ জলোটা (হেসে): দেখতে চাইছিলাম, কী এমন ব্যাপার ওটা? লোকে একটা বাড়িতে থাকে সবাই একসঙ্গে। খেলাধুলো হয়। মজা লাগত দূর থেকে। আমিও চেখে দেখতে চেয়েছিলাম। নতুন স্বাদ, বেশ মজা লেগেছিল। আবার ডাকলে আবারও যাব।
প্রশ্ন: প্রেম কেমন চলছে আপনার? আপনি তো প্রেমিক মানুষ...
অনুপ জলোটা: প্রেম তো মানুষের জীবনে মুক্ত বাতাস। প্রেম না থাকলে গান হবে কী করে? যাকে ভালবেসেছিলাম, তাকেই বিয়ে করেছিলাম। তবে হ্যাঁ, এই প্রেম বার বার আসতে পারে। প্রেম যেন চিরকাল থাকে।
প্রশ্ন: জ্যাসলিন মাথারুর সঙ্গে প্রেম রয়েছে এখনও? সবাই তো জানতে চায়...
অনুপ জলোটা: ওই সম্পর্ক তো 'বিগ বস' পর্যন্তই ছিল। এখন তো আর কথাও হয় না তেমন। শো-এর পর এক দু'বারই দেখা হয়েছে। আর আমাদের সম্পর্ক ঠিক প্রেমের নয়। জ্যাসলিন তো আমার কাছে গান শিখত। এখন খুব একটা সময় পায় না। যদিও বেশ ভাল গান গায়, নাচও করে ভাল।
প্রশ্ন: অভিনয় করবেন আবার? আপনার ভ্রাতুষ্পুত্র তুষার জলোটা তো 'দসভি' পরিচালনা করে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার সঙ্গে কাজ করবেন পর্দায়?
অনুপ জলোটা: অভিনয় তো আমি অনেক করেছি। আরও করতে পারি সুযোগ এলে। তুষারের সঙ্গেও কাজ করতে পারি। নিশ্চয়ই। এসব আসলে একঘেয়েমি কাটানোর জন্য করা। জীবনে সব শিল্প ক্ষেত্রেই এক বার করে পা ফেলতে চাই।