একটা সময় ছিল, যেখানে তাঁকে মাদকের কাছে হার মানতে হয়েছে। আর সেই পরাজয়ের কথা স্বীকার করতে হয়েছে তাঁকে। আর সেই স্বীকারোক্তিই আজ তাঁকে জিতিয়ে দিয়েছে। আজ তিনি নেশামুক্ত। আজ আনন্দ হলে বা কষ্ট হলে মদও খেতে হয় না অনিন্দ্যকে। নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে তাই তিনি বারবার বলেন, ''নেশা ছাড়া বেঁচে থাকা যায়।''
advertisement
সদ্যই একটি ছবি পোস্ট করেছেন 'গাঁটছড়া'র 'রাহুল'। যেখানে তাঁর কিশোর বয়সের একটি ছবির পাশে এখনকার ছবি। না এই ছবিতে তিনি তাঁর নস্টালজিয়াকে উদযাপন করেননি। বরং অন্ধকার থেকে আলোয় আসার কথা বলেছেন। সেই সময়টা তাঁর কাছে বড়ই কঠিন।
ছবির সঙ্গে লিখেছেন, 'ছবিটা খুঁজে পেলাম। সম্ভবত ২০০৪ অথবা ২০০৫ সালের। তখন আমি ড্রাগ নিতাম। শরীরের কোনও শিরা আর বাকি ছিল না। চোখের সামনে বন্ধুদের মারা যেতে দেখছি। তার পর কেটে গিয়েছে ১৫টা বছর। আমি একটানা নেশামুক্ত। কী ভাবে বেঁচে ছিলাম ওই নরকে?... ম্যাজিক বোধহয়... বিশ্বাস করি তাই।'
আরও পড়ুন: ‘এর ছেলে নেশা করে বা পাতাখোরের বাবা, সকলে বলত বাবাকে', অভিনেতার সাদাকালো স্মৃতি
কখনওই নিজের অতীতের দিনগুলির কথা লুকিয়ে রাখেননি তিনি। একাধিক অনুষ্ঠানে মাদকের কাছে হেরে যাওয়ার গল্প বলেছেন তিনি। একটাই উদ্দেশ্যে, তাঁর মতো ছেলেমেয়েরা যেন আশার কথা শুনে অনুপ্রেরিত হয়।
২০০৮ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত তিনি প্রতি দিন ড্রাগ নিতেন। কড়া ড্রাগ। যা কেনার পয়সা জোগাড়ের জন্য মায়ের গয়না চুরি করে বিক্রি করেছেন, রাস্তায় হার ছিনতাই করেছেন, পাড়ার সমস্ত বাড়ি থেকে অ্যানটেনা চুরি করে বিক্রি করেছেন। পুলিশের ডেরায় রাত কাটিয়ে, নেশামুক্তি কেন্দ্রে দিনের পর দিন থেকেও কোনও লাভ হয়নি। পরিবার তাঁকে বাড়ির বাইরে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়ে যেত না। ভয় ছিল, ছেলে যদি কিছু চুরি করে।
কিন্তু এক দিন। হঠাৎই বাঁচতে চাইলেন তিনি। একটা একটা দিন কাটাতেন নেশা না করে। বিভিন্ন সাপোর্ট গ্রুপের সঙ্গে কথা বলে। ২০০৮ সালের ২২ জানুয়ারির পর আর কোনও দিনও মাদক ব্যবহার করেননি তিনি। আজ সেই অনিন্দ্য জয়ী। পরাজয় স্বীকার করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। সেই ভাবেই অন্ধকার গহ্বর থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন টলি নায়ক।