অন্য দিকে ১২ দিনের মধ্যে তিন তিন জন মডেল-অভিনেত্রীর মৃত্যু। প্রথমে পল্লবী দে, তার পর বিদিশা দে মজুমদার, শেষে মঞ্জুষা নিয়োগী। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, তিন জনেই আত্মহত্যা করেছেন। তদন্ত এখনও চলছে। কিন্তু ইতিমধ্যে নড়েচড়ে বসেছে টলিউড। নানা তর্ক বিতর্কে বারবার উঠে আসছে একটিই বিষয়বস্তু— এই প্রজন্মের অভিনেত্রী এবং অভিনেতাদের মানসিক অবসাদ।
advertisement
ঐন্দ্রিলা তো লড়াই করে মৃত্যুকে হারিয়েছেন। তবে কি তিনিও এই প্রজন্মকেই দোষ দেবেন? না, তিনি বীতশ্রদ্ধ। তিনি এই প্রজন্মকে কাঠগড়ায় তোলার প্রবণতায় বীতশ্রদ্ধ। তাই প্রতিবাদে সোচ্চার হলেন ঐন্দ্রিলা। এই নেতিবাচকতা থেকে দূরে সরার জন্য কলকাতা ছেড়ে বহরমপুরে মা-বাবার কাছে চলে গিয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই নিউজ ১৮ বাংলার সঙ্গে কথা বললেন ক্যানসার-জয়ী নায়িকা।
আরও পড়ুন: আজ ছিল শ্রাদ্ধ, বিদিশার স্মৃতিতে গরিব মানুষের হাতে খাবার তুলে দেবে পরিবার
ঐন্দ্রিলা বললেন, ‘‘এখনও তদন্ত চলছে। কিন্তু প্রাথমিক অনুমান তো, আত্মহত্যাই। তা হলে বোঝাই যাচ্ছে, কতটা মানসিক যন্ত্রণায় ভুগে এই পদক্ষেপ করেছেন পল্লবী, বিদিশা এবং মঞ্জুষা। সেখানে তাঁদের মনের খবর না নিয়ে আমি কী ভাবে বলতে পারি যে, ‘মানসিক অবসাদ বড়লোকদের রোগ’ বা ‘এই প্রজন্মের এটাই দোষ’ ইত্যাদি? রোজ নানা জায়গায় মানুষের সাক্ষাৎকার দেখতে দেখতে অবাক হয়ে যাচ্ছি৷ সেই মানুষগুলিকে খুবই সম্মান করতাম। কিন্তু এখন শুধুই বিস্ময়! আমি তো বলতেই পারতাম, আমি শারীরিক যন্ত্রণাকে জয় করেছি, আর এই মেয়েরা কেবল মনের যন্ত্রণায় নিজেকে শেষ করে ফেলল? কিন্তু আমি সেটা কখনও বলতে পারি না। তার কারণ শরীরের মতো মনও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। তার দিকে নজর দিতে হবে। যত্ন করতে হবে।’’
ঐন্দ্রিলার আক্ষেপ, ভারতে মানুষ আজও মানসিক রোগকে নিয়ে অবহেলা করেন। ঐন্দ্রিলা জানালেন, তিনি কখনও পল্লবী, বিদিশা এবং মঞ্জুষার পদক্ষেপকে সমর্থন করবেন না। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে সেই মডেল এবং অভিনেত্রীদের চরিত্রের দিকে আঙুল তুলবেন। মানসিক রোগকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি মহিলাদের সম্মান দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন ঐন্দ্রিলা। তাঁর কথায়, ‘‘সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সময়ে তাঁকে নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কেউ তাঁর চরিত্রহনন করেমনি। সেটা ভাল। কিন্তু সেই জায়গায় এই তিন জন মহিলার সম্পর্কে যা যা শুনতে হচ্ছে, তাতে আমি বিরক্ত। তাঁরা সিগারেট খেতেন, নাকি মদ, তাঁরা লিভ ইন করতেন নাকি বাবা মায়ের সঙ্গে থাকতেন— এই সমস্ত বিষয় উঠে আসছে কেন? আর যাঁরা বলছেন, এই প্রজন্মের মানুষ বেশি আত্মহত্যা করে ইত্যাদি, তাঁদের বলতে চাই, আপনাদের সময়েও সফল অসফল শিল্পীরা আত্মহত্যা করেছেন। তখন অত খবর পাওয়া যেত না বলে জানা যায়নি। মানসিক রোগ প্রত্যেক যুগেই বর্তমান। তাই অবহেলা করবেন না।’’
আরও পড়ুন: ঘুমের ঘোরে চুম্বন, বিদিশার বন্ধুর কাছে মৃত্যুর দু’দিন আগের ভিডিও