এবার তো থ্রিলার কাম হরর! সব গোত্রের ছবিতেই অপরিহার্য হয়ে উঠছেন দেখছি! "আরে না না, কাজ পাচ্ছি মনের মতো হলেই করছি। কলকাতায় ফিরতেই পারিনি কত দিন! এখন মুম্বইয়ে। আপনার সঙ্গে ইন্টারভিউ শেষ হলেই দৌড়ব শুটিংয়ে। মুম্বই - হায়দরাবাদ শাটল করছি বহু দিন ধরেই। হায়দরাবাদে চলছে তেলুগু ছবির শুটিং । 15 ডিসেম্বর থেকে আরও একটা হিন্দি ছবির কাজ শুরু হবে। "
advertisement
এক নাগাড়ে বলে থামলেন যিশু। এখন তো তিনি সর্বভারতীয় অভিনেতা। মুম্বইয়ে এক সুসজ্জিত হোটেলের রুমে। অন্দরসজ্জায় সবুজের ছোঁয়া। এরিকা পাম।
এই একই রকম সবুজ, সতেজ তিনি নিজেও। লকডাউনে জিমে তাঁর চেহারা দেখে ঈর্ষা করেছেন অনেকেই! "তার কারণ, লকডাউন" হেসে বললেন যিশু, "বহুদিন নিজের জন্য সময় দেওয়া হয়নি। তাই একটু দিয়ে ফেললাম!"
দুর্গামতী ছবির ব্যাপারে একটা স্মৃতি চিরদিন মনে রাখবেন। "যে হাভেলিতে শুটিং হত, কেন জানি না ঠাণ্ডা না থাকলেও সারা শরীরে একটা শিরশিরানি অনুভব করতাম। আমি বেশ ভীতু। ভূতের ছবি দেখি না, খুব ভয়' করে বলে। শুটিং প্যাকআপ হওয়ার দিন একজন এসে বলল, আরে স্যর, ইস হাভেলি তো হন্টেড হ্যায়। সব জানতে হ্যায়। শুনেই আমার আত্মারাম খাঁচাছাড়া। ভাগ্যিস আগে জানা ছিল না! তবে যত দিন জানতাম না, খুব আনন্দ করে শুট করেছি। ভূমি পেডনেকর, মাহি গিল, সবার সঙ্গে দারুণ সময় কাটত।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণ তাঁর কাছে এখনও দগদগে ঘা। "সৌমিত্রজেঠুর বায়োপিকে তাঁর চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে যেন আরও বেশি করে তাঁর ভিতরে ঢুকে পড়েছিলাম। আমাকে উনি ছোটবেলা থেকে দেখেছেন। আমার বাবা (ঊজ্জ্বল সেনগুপ্ত) একসঙ্গে কাজ করেছেন। সেই সূত্রে বাড়িতে আসতেন। আমাদের প্রজন্ম, মানে আমি, আবির, পরম, ঋত্বিক ওঁকে অনেক কাছ থেকে পেয়েছি, দেখেছি, এটাই আমাদের সারা জীবনের পাথেয়। এত স্মৃতি যে মানুষটিকে ঘিরে যে বলতে গেলে হারিয়ে যাব।" স্মৃতিবিভোর হলেন যিশু।
আপনার অভিনয়ের একটা বিশেষত্ব, আপনাকে যেকোনও বয়সের চরিত্রে ফেলে দেওয়া হোক না কেন, ঠিক নিজেকে সেইমতোই বদলে ফেলে খাপে খাপে ঢুকে পড়েন! "জানি না কীভাবে। তবে এটাই বলব, চারপাশের মানুষকে দেখে অনেক ফলো করার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার অভিনয়ের প্রকৃত গুরু ঋতুপর্ণ ঘোষ। ঋতুদা আমার মা, বাবা এবং বন্ধু। একটা বড় আকাশ। উনি আমায় নিজের হাতে অভিনয় শিখিয়েছিলেন বলেই যতটুকু পারি। আজ আমায় সবাই অভিনেতা হিসেবে জানে সেটা ওঁর ক্রেডিট। উনি আমার পরিবার" বললেন যিশু।
আপনার পরিবারও তো খুব সুন্দর। আদরের দুই মেয়ে। বাবা হিসেবে পেরেন্টিং নিয়ে কিছু টিপস? "ও ব্যাপারে নীলাঞ্জনাকে জিজ্ঞাসা করুন। আমি তো ছোট মেয়ের কথা শুনে ধপাস করে পড়ে যাই মাঝে মাঝে। খাবার টেবিলে বসে প্রত্যেক দিন আমায় 'থ্যাঙ্ক ইউ' বলে। কেন জানেন? বলে, বাবা তুমি বাইরে কাজ করছ বলেই তো আমরা খাবারটা খেতে পাচ্ছি! বুঝুন একবার।" হেসে উঠলেন যিশু।
শর্মিলা মাইতি