রতন সিং ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে সেই স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায়। যদিও ছেলের লেখাপড়ায় তিনি কোনও খামতি রাখেননি। সেই ছেলের কঠোর পরিশ্রম এবং বাবার অনুপ্রেরণা আজ তাঁর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে।
বাসুদেব তাঁর চতুর্থ প্রচেষ্টায় NEET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি সারা ভারতে ৬১৬৮তম স্থান অর্জন করেছেন এবং ক্যাটাগরিতে ৫৬৭তম স্থান অর্জন করেছেন। এগুলো নিছক পরিসংখ্যান নয়, এগুলো বস্তুত সংগ্রাম এবং নিষ্ঠার দীর্ঘ যাত্রার ফলাফল যেখানে বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পরেও ছেলে হাল ছাড়েননি। তিনি তাঁর বাবার শেষ ইচ্ছাকে নিজের পড়াশোনার শক্তি করে তুলেছিলেন এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও এমন একটি স্থান অর্জন করেছেন যে, কেবল পরিবারই নয়, পুরো গ্রাম গর্বিত। বাবার অসম্পূর্ণ ইচ্ছাই ছেলের সম্পূর্ণ জীবন হয়ে ওঠে।
advertisement
আরও পড়ুন: উচ্চ শিক্ষায় সরকারি স্কলারশিপ, মাধ্যমিক-HS-এর পর কত নম্বরে কোন স্কলারশিপ পাওয়া যায়? বিশদে জানুন
রতন সিং এতটাই দরিদ্র ছিলেন যে, স্কুলের পরে আর পড়াশোনা করতে পারেননি। তিনি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছেড়ে দিয়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু, তিনি সর্বদা তাঁর ছেলেকে পড়াশোনা করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করতেন। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাসুদেব তাঁর বাবাকে হারিয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি তাঁর লক্ষ্যপূরণে দমে যাননি। পরিবার এবং শিক্ষকদের উৎসাহে তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন।
চতুর্থ প্রচেষ্টায় যোগ্যতা অর্জন করেন –
NEET-এর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বাসুদেব তিনবার ব্যর্থতার মুখোমুখি হন। কিন্তু, তাঁর বাবার অসম্পূর্ণ স্বপ্ন তাঁকে প্রতিবারই আবার ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে। চতুর্থ প্রচেষ্টায় বাসুদেব কেবল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি, বরং সমগ্র অঞ্চলের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন যে, এই সাফল্য কেবল তাঁর নয়, বরং বাবার বিশ্বাস এবং ত্যাগের জয় যা তাঁকে প্রতিটি কঠিন সময়ে সমর্থন করেছিল।
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের ঐক্যশ্রী স্কলারশিপের আবেদন শুরু, কতদিন চলবে? কারা পাবেন? বিশদে জানুন
বাসুদেবের সাফল্য দেখায় যে, যদি স্বপ্নকে জীবিত রাখা হয় এবং কঠোর পরিশ্রমের আগুনে নিজেকে নিমজ্জিত করা যায়, তাহলে কোনও বাধাই স্বপ্নের উড়ান থামাতে পারে না। এখন বাসুদেবের লক্ষ্য হল একজন ভাল ডাক্তার হওয়া এবং নিজের গ্রাম ও অঞ্চলের সেবা করা, যাতে তাঁর বাবার স্বপ্ন কেবল কাগজে কলমে না থেকে বাস্তবে পরিণত হয়।