প্রশাসনিকভাবে ওই সকল বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। সেই কাজ এখনও চলছে। অন্যদিকে এই বছর এই গ্রামের চারজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আজ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে। বন্যায় সমস্ত জিনিসপত্র ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি এই পড়ুয়াদের বইপত্রও ভেসে চলে যায়। তবে সেই সকল দুর্দশা এবং প্রতিকূলতাকে জয় করে তারা আজ জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষায় পা রাখল। জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষায় পা রাখার ক্ষেত্রে তাদের যে ভাবে পরিশ্রম করতে হয়েছে তা যেমন চোখের কোনে জল এনে দেওয়ার মত, তেমনই নজিরবিহীন।
advertisement
আরও পড়ুন : কোভিডে প্রিয়জনকে হারানোর দুঃখ নিয়েই বসতে হচ্ছে মাধ্যমিকে? মন শক্ত করার উপায় বললেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ
বইপত্র বানের জলে ভেসে যাওয়ার পর ওই পড়ুয়াদের মধ্যে একজন, চিন্ময় গঙ্গোপাধ্যায় পাশের গ্রামের এক দাদার কাছ থেকে বইপত্র জোগাড় করে। অন্যদিকে বাকি তিন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ধ্রুব ঘোষ, বুদ্ধদেব মাঝি, তরুণ মাঝি কোন বই জোগাড় করতে পারেনি। কিন্তু তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টা পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। চিন্ময়ের জোগাড় করা ওই এক সেট বই চার জন মিলে ভাগ করে পড়াশোনা শুরু করে।
আরও পড়ুন : মরশুমি রোগ থেকে দূরে থেকে মাধ্যমিক দিতে কেমন হবে পরীক্ষার্থীর ডায়েট? জানালেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
একসঙ্গে পড়াশোনা করার পাশাপাশি বুদ্ধদেব, তরুণ এবং ধ্রুব নোট লিখে নিয়ে যেত চিন্ময়ের বই দেখে। এই ভাবেই পড়াশুনো করে তারা এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। বীরভূমের সুন্দরপুর গ্রামের এই চারজন পড়ুয়া নানুরের ব্রাহ্মণ খণ্ড বাসাপাড়া হাইস্কুলের ছাত্র। তারা এখন কেউ অর্ধনির্মিত বাড়িতে অথবা কেউ ত্রিপল দিয়ে তৈরি করা কুঁড়েঘরে মাথা গুঁজে পড়াশোনা চালাচ্ছে। তাদের এই অদম্য প্রচেষ্টায় ফল তারা পাবে বলে আশা করছে।
(প্রতিবেদন : মাধব দাস)