গত এপ্রিলে ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল হয়েছে আদালতের নির্দেশে। তার ফলে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। এঁদের মধ্যে অনেকেই আগে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকতা করতেন। পদোন্নতি বা বাড়ির কাছের স্কুলে পড়ানোর সুযোগ খুঁজছিলেন বলে ফের এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন। পেয়েছিলেন নতুন শিক্ষকতার সুযোগও।
এ বার ধাপে ধাপে পুরনো চাকরিতে ফেরানো হচ্ছে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকদের। জানা গিয়েছে, ২০১৬ নিয়োগে সুযোগ পাওয়ার আগে যে শিক্ষক যে স্কুলে পড়াতেন, সেই স্কুলেই ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ওই প্রার্থীদের। তবে, সেখানে যদি শূন্যপদ না থাকে, তা হলে নিকটবর্তী কোনও স্কুলে নিয়োগের চেষ্টা করা হবে।
advertisement
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, শুধু শিক্ষকেরা নন। বহু শিক্ষাকর্মীও এসএলএসটি পরীক্ষা দিয়ে ২০১৬ সালে শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে চাকরি হারিয়েছেন। তাঁদেরও শিক্ষাকর্মী হিসাবে পুরনো চাকরিতে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। এ জন্য দফতরের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে শুরু করা হবে।
চলতি বছর ৩ এপ্রিল দুর্নীতির কারণে ২০১৬ সালের নিয়োগ বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই, সেই সমস্ত ‘যোগ্য’দের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেয় আদালত। সেই অনুযায়ী তাঁরা বেতনও পান। পাশাপাশি যাঁরা অন্য চাকরি ছেড়ে শিক্ষাকতায় যোগ দিতে চেয়েছিলেন এবং ‘যোগ্য’ হিসাবে কাজ করছেন, তাঁরা চাইলে পুরনো চাকরিতে ফিরে যেতে পারেন বলেও জানানো হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে।
সেই অনুযায়ী প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, এসএসসি, মাদ্রাসা মিলিয়ে প্রায় ৪৩০০ ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা পুরনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ার আবেদন করেছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, “যাঁরা এসএসসি-র কাছে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের নথি যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নভেম্বরের শুরু থেকেই ধাপে ধাপে পুরনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ায় জন্য নিয়োগের সুপারিশ দেওয়া হবে।”
এসএসসি সূত্রের খবর, যাঁরা অন্য বিভাগ থেকে শিক্ষকতার কাজে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের পুরনো চাকরিতে ফেরানোর অনুমোদন আগেই দেওয়া হয়েছে। পুজোর আগেই প্রাথমিকে ২০০০ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে পুরনো চাকরিতে ফেরানো হয়েছে। মাদ্রাসার ক্ষেত্রে এখনও আবেদনের যাচাই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি বলে জানা গিয়েছে। তবে তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
