বিধায়ক বীরজিত সিনহা ও বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মার আনা একটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এই তথ্য জানান মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়কদের প্রশ্ন ছিল – রাজ্যের প্রাইভেট স্কুলগুলিতে ফি কমানো এবং ডোনেশন সম্পর্কিত বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে। জবাবে দফতরের মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই বিষয়টি নিয়ে একটি কমিটি গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। যাতে প্রাইভেট স্কুলগুলিতে ফি অভিভাবকদের সাধ্যের মধ্যে থাকে। এছাড়া স্কুলগুলিতে ডোনেশনের বিষয়টিও সরকারের গোচরে রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্য সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলিকে একসঙ্গে মেলানো যাবে না। এরমধ্যেও রাজ্য সরকার গোটা বিষয়টির উপর নজর রাখছে। প্রাইভেট স্কুলগুলির জন্য একটা রেগুলেশন আনা যায় কিনা সেটাও দেখা হচ্ছে।
advertisement
আরও পড়ুন: টয়লেটে এক চামচ নুন ফেলে দিলে কী হয় জানেন? এই চূড়ান্ত রহস্য জানলে মাথা ঘুরে যাবে!
পাশাপাশি, গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষক নিয়োগে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে বর্তমান রাজ্য সরকার। এর ফলে ত্রিপুরায় রাজ্য সরকার পরিচালিত স্কুলগুলির মধ্যে এখন একটিতেও একক শিক্ষক পরিচালিত স্কুল নেই। রাজ্য সরকার প্রত্যেক বছর সুষ্ঠু নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষক নিয়োগ করে চলছে। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কিত এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানান মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। ত্রিপুরা বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা জানান, রাজ্যে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষার পরিকাঠামো এবং শিক্ষক নিয়োগ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুন: অপেক্ষার আর মাত্র ১০০ দিন, কাউন্টডাউন শুরু দুর্গাপুজোর
তিনি আরও জানান, একথা সত্য যে, বর্তমানে রাজ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষকের স্বল্পতা রয়েছে। মূলত নিয়ম করে প্রতি মাসে কিছু সংখ্যক শিক্ষক অবসর গ্রহণ করেন। তাছাড়া শিক্ষক স্বল্পতার পেছনে আরেকটি কারণ মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আদেশে ১০৩২৩ জন শিক্ষকের নিযুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসাবে রাজ্য সরকার প্রতি বছর নতুন শিক্ষক নিয়োগ করে থাকে। এক্ষেত্রে টিচার্স রিক্রুটমেন্ট বোর্ড, ত্রিপুরা (TRBT) নিয়মিতভাবে শিক্ষকদের যোগ্যতা পরীক্ষা (T-TET) পরিচালনা করছে এবং যোগ্য প্রার্থীদের বাছাইয়ের মাধ্যমে অস্নাতক শিক্ষক এবং স্নাতক শিক্ষক পদে নিয়োগ করছে। তাছাড়া মাধ্যমিক স্তরের স্নাতক শিক্ষক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিষয় শিক্ষকের জন্য নিয়মিতভাবে টিচার্স রিক্রুটমেন্ট বোর্ড, ত্রিপুরা (টিআরবিটি) এর মাধ্যমে চাকরির পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।গত বছর প্রথমবারের মতো স্পেশাল এডুকেটর নিয়োগ করা হয়।
এসব পদ্ধতির মাধ্যমে বিগত ৫ বছরে বেশ কিছু শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। গত ৫ বছরে মোট ৬,৭৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এরমধ্যে অস্নাতক শিক্ষক ১০৬২ জন, স্নাতক শিক্ষক (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী) ৩,৭০১ জন, স্নাতক শিক্ষক (নবম থেকে দশম শ্রেণি) ১,৪৭১ জন, বিষয় শিক্ষক ৪৪৪ জন ও স্পেশাল এডুকেটর ৮৮ জন নিয়োগ করা হয়েছে। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের আর্থিক সংস্থানের উপর নির্ভর করে প্রতি বছর শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। প্রতি বছর শিক্ষক নিয়োগের ফলে রাজ্যে বর্তমানে রাজ্য সরকার পরিচালিত স্কুলগুলির মধ্যে একজন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত স্কুল আর নেই। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্তরে শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।তিনি আরও জানান, ধারাবাহিক নিয়োগ প্রক্রিয়া গ্রহণ করার মাধ্যমে আশা করা যায় যে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শিক্ষক শূন্যপদের সংখ্যা অনেকাংশে হ্রাস করা যাবে।
আবীর ঘোষাল