শ্যামবাজারের মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজ থেকে সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপনে বিএ পাশ করেছেন মা-মেয়ে। প্রকাশিত ফলাফলে সঙ্গীতা পেয়েছেন ৭৫ শতাংশ নম্বর, মেয়ে সহেলী দে পেয়েছেন ৮০ শতাংশ। সঙ্গীতার পড়াশোনার লড়াই শুরু বহু বছর আগে। ১৯৯৬ সালে মাধ্যমিকে বসে গণিতে অকৃতকার্য হওয়ার পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি। এরই মধ্যে বিয়ে, সংসার, সন্তান ফলে থমকে যায় পড়াশোনা। কিন্তু স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি এই মা। অবশেষে ২০১৯ সালে ফের মাধ্যমিক দেন রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে। তার পর উচ্চমাধ্যমিকেও সফল হন মেয়ে সহেলীর সঙ্গেই। ২০২২ সালে মা-মেয়ে একসঙ্গে ভর্তি হন মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে। তিন বছরের টানা পরিশ্রম শেষে সাফল্যের সঙ্গেই স্নাতক হলেন দু’জনে। তবে এই পথ ততটাও সহজ ছিল না। প্রথম অবস্থায় সঙ্গীতা দেবীর এই সিদ্ধান্তে রাজি ছিলেন না স্বামী। তবে মেয়েদের জেদেই একপ্রকার মায়ের এই উচ্চশিক্ষার স্বপ্নপূরণ হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। সংসারের দায়িত্ব সামলেই কলেজের ক্লাসে হাজির হতেন সঙ্গীতা। মেয়ে সহেলীও যেন মায়ের সঙ্গে একেবারে সহপাঠীসুলভ আচরণেই কলেজের ক্লাস করেছেন। বন্ধু-বান্ধব রাও মায়ের সঙ্গে একেবারে স্বাভাবিকভাবেই মিসতেন।
advertisement
সঙ্গীতা দেবী জানান, ১৯৯৬ সালে মাধ্যমিক। তারপর বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারণেই বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। সংসার পরবর্তীতে দুই মেয়েকে নিয়ে চলে জীবন। পরবর্তী জীবনে কিছু করে দেখানোর তাগিদ থেকেই উৎকর্ষ বাংলায় নার্সিং ট্রেনিং নিতে যাওয়া। তবে সার্টিফিকেট না থাকার কারণেই ফিরে আসতে হয়। এরপর জেদের বসে রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা। ছোটমেয়ের সঙ্গেই একেবারে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক দিয়ে কলেজ। এখন সঙ্গীতা ও সহেলী মা-মেয়ের লক্ষ্য এমএ পাশ করার, পাশাপাশি মা সঙ্গীতা চান এই বিষয়ের উপরই কোন চাকরি করতে। এখন তারও চেষ্টা চালাচ্ছেন বছর ৪৫ এর এই সফল ছাত্রী।