মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মানবিক দিক দিয়ে যে বিষয়টি দেখা হয়েছে তাতেই আমি খুশি৷’ বর্তমানে বিজেপি-র সাংসদ এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছিল৷ এ দিন সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশই খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ৷
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য কোনও বিতর্কে না গিয়ে বলেন, ‘আমি কারও সম্পর্কে কিছু বলব না৷ শিক্ষকরা চাকরি ফিরে পেয়েছেন এবং তাঁদের পরিবারগুলি বেঁচে গেল, এতেই আমি খুশি৷ কথায় কথায় আদালতে গিয়ে চাকরি খেয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, এটা ঠিক নয়৷ আমাদের চাকরি দেওয়া দরকার, চাকরি খেয়ে নেওয়া নয়৷ বিচার ব্যবস্থা নিজের মতো চলবে, আমরা বিচার ব্যবস্থাকে শ্রদ্ধা করি৷’
advertisement
২০২৪ সালে প্রাথমিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়৷ তারপরে হয় টেট৷ সেই টেট-এর ফলাফলের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে শুরু হয় ইন্টারভিউ৷ ২০১৭ থেকে ২০১৯, প্রায় ১৪ দফায় ৩২ হাজার প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীর নিয়োগ করা হয়৷ এরপরেই ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ সালে বেনিয়মের অভিযোগে মামলা হয় হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে৷
প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ ওঠে। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, ২০১৬ সালের নিয়োগের আইন মানা হয়নি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ বিধি মানা হয়নি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও সিলেকশন কমিটি ছিল না, থার্ড পার্টি এজেন্সি প্যানেল তৈরি করেছিল, অ্যাপটিটিউট টেস্ট নেওয়া হয়নি, অ্যাপটিটিউট টেস্টের কোনও গাইডলাইনই ছিল না, অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়, কাট অব মার্কস নিয়ে উপযুক্ত তথ্য ছিল না বোর্ডের কাছে,শূন্যপদের অতিরিক্ত নিয়োগ হয়।
যদিও, প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির অভিযোগ খারিজ করে রাজ্য সরকার ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। রাজ্য যুক্তি দেয়, দুর্নীতির কোনও প্রমাণ নেই। তবে কিছু বেনিয়ম হয়েছে বলে স্বীকার করে। পরে তা সংশোধনও করা হয়েছে বলে দাবি করে রাজ্য।
১২ মে ২০২৩, ৩২ হাজার চাকরি বাতিল করে সিঙ্গল বেঞ্চ, নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়ার নির্দেশ দেয়৷ ১৯ মে ২০২৩, সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ৷ তবে, নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়ার নির্দেশ বহাল রাখে৷
মে-জুন ২০২৩, প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে৷ ২২ জুলাই ২০২৩, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা ফেরায় সুপ্রিম কোর্ট৷ তারপর, ১২ নভেম্বর, ২০২৫, হাইকোর্টের শেষ হয় ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি৷ আজ, ৩ ডিসেম্বর ছিল রায়৷
