গত ৭ জুলাই প্রাক্তন বিচারপতি শুভকামনা মুখোপাধ্যায়কে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের দায়িত্ব দেন রাজ্যপাল। নিউজ এইট্টিন বাংলার মুখোমুখি হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য শুভ্র কমল মুখোপাধ্যায় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন। তিনি বলেন “আমি শুক্রবার পর্যন্ত ক্যাম্পাসে গেছি। এর আগে যা পরিস্থিতি হয়েছে আমার মনে হচ্ছে না যে আমি বিশ্ববিদ্যালয় গেলে সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারব। প্রায় প্রত্যেকদিন কর্মচারীরা আমার ঘরে ঢুকছেন এবং যাচ্ছে তাই ভাবে অপমান করছেন। বারবার তারা আমাকে বলছে কেন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আপনি দেখা করছেন না? শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আমার কি আছে? আমি রাজ্যপালকে নিয়োগ পত্র নেওয়ার সময় জানিয়ে দিয়েছিলাম আমি কোনও পারিশ্রমিক নেব না। আমি একটা সোশ্যাল সার্ভিস দেব। আমি যা শুনেছি ওরা আমাকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করবে।”
advertisement
শুধু তাই নয় তার অভিযোগ বিভিন্ন সময় বিজেপি আরএসএস-এর কথা বলে তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন “এরা বারবার বলছে আরএসএস – বিজেপির ইন্টারফিয়ারেন্স চায়না। আমিও চাই না। কিন্তু এরা বেরিয়ে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ,অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বলছে। এদেরকে কে লেলিয়ে দিয়েছে আমি চলে গেলে এদের পছন্দমত উপাচার্য চলে আসবে।” এরা কারা সেই প্রশ্ন করলে রবীন্দ্রভারতীর অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বলেন ” এরা যখন অভিষেক ব্যানার্জি জিন্দাবাদ মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ বলছে তাহলে ধরে নিতে হবে এরা তৃণমূলের লোক।” তিনি বলেন “আমি এদের বারবার বলেছিলাম কাজটা আমাকে সুস্থ ভাবে করতে দিন। ওরা আমাকে বলেছে নির্বাচন সরকার তো আপনাকে নির্বাচন করেনি তাই আপনাকে কাজ করতে দেব না।”ইতিমধ্যেই রাজ্যপালকে ইমেইল করার পাশাপাশি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেও গোটা বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য।
আরও পড়ুন – West Bengal Weather Update: গরমে-ঘামে নাকাল হচ্ছেন, আরও দুঃসংবাদ আপনার জন্য, রইল ‘গরমাগরম’ ওয়েদার আপডেট
তিনি বলেন ” আমি গত ২৬ তারিখ আচার্যকে দেখা করে বলে এসেছি যা পরিস্থিতি তাদের কাজ করা সম্ভব নয় ক্যাম্পাসে গিয়ে।” পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়কে বেশ কিছু নির্দেশও দিয়েছেন উপাচার্য। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন “আমি তাই রেজিস্ট্রার ফিনান্স অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি administrative ব্লকটাকে পুরো কভার করে দিতে। আর ওই ব্লকে যাওয়ার জন্য অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে এক্স সার্ভিস ম্যানদের রাখার কথা বলেছি।” বিশ্ববিদ্যালয় গেলে নিগ্রহের আশঙ্কাও উপাচার্যের মুখে। তিনি বলেন “আমি তো বিশ্ববিদ্যালয় গেলে শারীরিকভাবে নিগ্রহ হব। আমি চাই না বারবার ক্যাম্পাসে পুলিশ আসুক। একজন উপাচার্য ভুল কাজ করলে তার প্রতিবাদ হতে পারে। তার সংশোধন করা যেতে পারে। কিন্তু বারবার গ্রুপ সি গ্রুপ ডির কর্মচারীরা অপমান করে যাবে এটা কি কাম্য?”
যদিও উপাচার্য এর তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় এর তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায়।তিনি বলেন “আমরা বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে উপাচার্য রেজিস্টারদের কাছে ডেপুটেশন দিতে যাই। কিন্তু উনি যে শারীরিক নিগ্রহের আশঙ্কা করছেন তা সর্বিবো মিথ্যে। ২০২২ সালের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শান্ত রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষায় অরাজকতা তৈরি করার জন্য রাজ্যপালের মাধ্যমে বেআইনিভাবে উপাচার্য নিয়োগ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় এই ধরনের কোন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।”
SOMRAJ BANDOPADHYAY