ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্কুল শিক্ষা সচিব প্রতিটি জেলার জেলাশাসকদের উচ্চমাধ্যমিকে অকৃতকার্য ছাত্রছাত্রীরা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা নিয়ে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই বিভিন্ন জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, যে স্কুলগুলিতে অকৃতকার্য পড়ুয়ারা রয়েছে, সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করতে। রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে বিভিন্ন জেলার স্কুল বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কোন কোন স্কুল থেকে কতজন করে ছাত্র-ছাত্রী অকৃতকার্য হয়েছে, তারও রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টে অনুযায়ী রাজ্যর ৩৬২০ স্কুলের বহু সংখ্যক পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হয়েছেন।
advertisement
রিপোর্টে অনুযায়ী, কলকাতার ১৬৪ স্কুলের পড়ুয়ারা উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হয়েছেন। সবথেকে বেশি অকৃতকার্য হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্কুলগুলি থেকে। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রায় ৩৩০টি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা অকৃতকার্য হয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২৭০ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা অকৃতকার্য হয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর থেকেও একাধিক স্কুলের পড়ুয়ারা উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করতে পারেননি।এই জেলার প্রায় ৩২২টি স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের অকৃতকার্য হওয়ার রিপোর্ট উঠে এসেছে। হাওড়া, নদীয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাগুলির ২০০-র অধিক স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা ফেল করেছে।
ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, দার্জিলিংয়ে সবথেকে কম সংখ্যক স্কুলে থেকে উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়ারা অকৃতকার্য হয়েছেন। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ যে রিপোর্ট রাজ্যকে দিয়েছে, সেই অনুযায়ী রাজ্যর ৩৬২০টি স্কুলের ক্ষেত্রে কোনও কোনও স্কুলে একজন, আবার কোনও কোনও স্কুলে দু-জন, আবার কোনও কোনও স্কুলে ৬০ জনের বেশিও অকৃতকার্য হয়েছেন।
রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী এবং সচিব ইতিমধ্যেই রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসককে দিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে বিডিও, এসডিও বা ডিআইদের বিভিন্ন স্কুলে পাঠানো হয়। পাশাপাশি, ছাত্র-ছাত্রীদের পাশেই রয়েছে রাজ্য সরকার, তাও যেন স্পষ্টও করা হয়। শুধু তাই নয়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গেও কথা বলে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মোতাবেক ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শকরা তাদের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে অকৃতকার্য ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট নিতে। রিপোর্ট নিয়ে তা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দ্রুত জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবারের পর সোমবারও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। রাজ্যের তিন হাজারের বেশি সংখ্যক স্কুলে অকৃতকার্য পড়ুয়াদের পাশে তাই দাঁড়াতে উদ্যোগী রাজ্য।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়