মাত্র ৩ বছর বয়সে অর্থাৎ ২০১১ সালের হোলির সময় অ্যাসিড হামলার শিকার হয়েছিল কাফি। আসলে সেই সময় হরিয়ানার হিসার জেলায় বুধানা গ্রামে থাকত সে। সেখানেই ঈর্ষার কারণে তিন প্রতিবেশী মিলে ছোট্ট কাফির উপর অ্যাসিড হামলা চালিয়েছিল। আর সেই হামলায় পুড়ে গিয়েছিল তার মুখ এবং হাত। নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তার দৃষ্টিশক্তিও। এই এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও হাল ছাড়েনি কাফি। বরং নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে সে।
advertisement
চোখে দেখার ক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ায় পড়াশোনার জন্য প্রাথমিক ভাবে কাফিকে অডিও বইয়ের উপরেই নির্ভর করতে হত। কঠিন অধ্যবসায়ে নিজের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এর আগে দশম শ্রেণীর পরীক্ষাতেও ৯৫.২ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল সে।
Photo: X
ইন্ডিয়া টুডে-র সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে কাফি বলে যে, তিন জন পড়শি মিলে তার দিকে অ্যাসিড ছুড়েছিল। এইমস দিল্লিতে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা তার পরিবারকে জানায় যে, কাফির দৃষ্টিশক্তি ফেরানো সম্ভব নয়। অ্যাসিড আক্রান্ত কিশোরী বলে চলে যে, “চিকিৎসকরা আমার প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন, কিন্তু আমার দৃষ্টিশক্তিটা বাঁচাতে পারলেন না।” তবে কাফির উপর যারা অ্যাসিড হামলা চালিয়েছিল, তাদের বিচার এখনও হয়নি। এই প্রসঙ্গে ওই কিশোরীর ক্ষোভ, “যাঁরা আমার এই অবস্থা করেছে, তারা এখনও দিব্যি বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
কাফির পড়াশোনা শুরু হয়েছিল তার গ্রাম থেকেই। তবে ষষ্ঠ শ্রেণীতে থাকাকালীন চণ্ডীগড়ে তাকে ব্লাইন্ড স্কুলে ভর্তি করার পরেই যেন মোড় ঘুরে যায়। এরপর থেকেই নিজের শিক্ষার লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছে কাফি। বরাবর ক্লাসে সর্বোচ্চ নম্বর পেত সে। এদিকে কন্যার এহেন সাফল্যে গর্বিত কাফির বাবাও। তিনি চণ্ডীগড়ের মিনি সেক্রেটারিয়েটে চুক্তির ভিত্তিতে পিয়নের কাজ করেন। ইতিমধ্যেই অবশ্য দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছে কাফি। আপাতত সেই পরীক্ষায় সুযোগ পাবে বলেই আশা রয়েছে তার।