পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম কুণাল সিং (১৯)। আর তাঁকে খুনে যে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা বিশ্বজিৎ শীল ওরফে বাবাই এবং মহম্মদ মফিজ। বিশ্বজিতের বাড়ি বাগডোগরার টাইগার বস্তিতে। মফিজের বাড়ি মাটিগাড়া মাছ বাজার এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তের পর বাগডোগরা থানার পুলিশের অনুমান, ওই যুবককে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। খুনের পর যে টোটোয় চেপে দুষ্কৃতীরা অকুস্থল থেকে চলে গিয়েছিল, সেই টোটোটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ঢুকল বাঘ, বাঁধে বসে আস্ত ছাগল সাবাড়, ভাইরাল ভিডিও
প্রসঙ্গত, সমকামী সম্পর্কের মধ্যে চিড় ধরেছিল, জন্মেছিল সন্দেহ। সঙ্গী অন্যজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল এই সন্দেহে সঙ্গী খুন করে আরেক যুবককে। ঘটনার তদন্তে নেমে অবাক পুলিশ। যদিও সঙ্গীকে খুন করে শেষমেষ ধরা পড়তেই হল আরেকজনকে। এরপরই প্রকাশ্যে এসেছে গোটা ঘটনা। শিলিগুড়িতে এই খুনের ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
বুধবার সকালে শিলিগুড়ি মহকুমার বাগডোগরার ফয়রানি জোতের কাছে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। দেহ যে অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, তাতে পুলিশের অনুমান ছিল খুন হয়েছেন তিনি। কিন্তু মৃতের নাম পরিচয় কী? তা জানতে তদন্ত শুরু হয়। এরপরই পুলিশ জানতে পারে মৃত যুবকের নাম কুনাল সিং। শুরু হয় তাঁর পরিচিতদের খোঁজ। বুধবার মৃতের পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তখনই পুলিশ বিশ্বজিৎ শীল নামে একজনের খোঁজ পায়।
আরও পড়ুনঃ কচুরির মধ্যে আস্ত ইঁদুর! মিষ্টির দোকানে হুলুস্থুল, ভিডিও ফাঁস হতেই কৃষ্ণনগর তোলপাড়
বাগডোগরায় বিশ্বজিতের খেলনার দোকানে কাজ করত কুণাল। তারা সমকামী ছিলেন। এমনকি কয়েক বছর ধরে বিশ্বজিতের বাড়িতেই থাকত কুণাল। বুধবার পুলিশ বিশ্বজিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাতেই জানা যায় বিশ্বজিতের সন্দেহ ছিল কুনাল অন্য কোনও সম্পর্কে জড়িয়েছে। যা নিয়ে সমস্যা চলছিল দু'জনের মধ্যে। মঙ্গলবার অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর কুণালের জন্মদিন ছিল। বিশ্বজিত তার আরেক বন্ধু মহম্মদ মাফিজকে সঙ্গে নিয়ে কুণালকে ডাকে। টোটোয় চেপে তিনজন ফয়রানি জোতে যায়। সেখানে গিয়ে তিনজনই মদ্যপান করে। সেখানেই দুজন মিলে কুণালকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে অভিযোগ। এরপর টোটোতে করে বিশ্বজিৎ ও মাফিজ ফিরে আসে।
বুধবার সকালে কুনালের দেহ উদ্ধার হয়। এরপর বুধবার রাতেই খুনের অভিযোগে বিশ্বজিত শীল ও মহম্মদ মাফিজ নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করে বাগডোগরা থানার পুলিশ। টোটোটিও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাদের বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়।
অনির্বাণ রায়