- ভারতের ১০০০ টি শহর ও পুর এলাকায় উৎসব সংক্রান্ত পরিষেবার চাহিদা ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
-দেশের প্রথম শ্রেণির শহরগুলির তুলনায় দ্বিতীয় শ্রেণির শহরগুলিতে এই চাহিদা বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ।
- প্রতিমা প্রস্তুতকারক এবং মণ্ডপ সজ্জার চাহিদা শীর্ষে অবশ্যই রয়েছে কলকাতা
জাস্ট ডায়াল (Just Dial) কনসিউমার ইনসাইটের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ অতিমারীর প্রেক্ষিতে গত দু’বছর প্রায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়া উৎসব আমেজ এ বার আবার ফিরছে স্বমহিমায়। দুর্গাপুজো (Durga Puja 2022) এবং নবরাত্রি (Navratri 2022) উপলক্ষে সারা দেশে ফের মণ্ডপ সজ্জা, প্রতিমা শিল্পী, ক্যাটারিং প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে, যা ভারতের বর্তমান অস্থির অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে একটা নতুন আশার সঞ্চার করতে পারে।
advertisement
আরও পড়ুন- 'ডোন্ট টাচ মি...'! অভিষেককে বেনজির আক্রমণ করে পাল্টা জবাব শুভেন্দুর
ভারতের এক হাজারটি শহর ও নগরে প্রতিমা শিল্পী, মণ্ডপ সজ্জা, মিষ্টি ব্যবসায়ী, ফুল ও পুজোর সরঞ্জাম বিক্রেতা এবং নবরাত্রি ও দুর্গা পুজোর অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহকারী সংস্থার মতো বহু পরিষেবার ক্ষেত্রেই চাহিদা (YoY) প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছে। প্রথম শ্রেণির শহরগুলিতে এই চাহিদা ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও দ্বিতীয় শ্রেণির শহরগুলিতে এই চাহিদা বৃদ্ধির হার প্রায় ৬০ শতাংশের কাছাকাছি।
আর এই প্রবণতা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে, জাস্ট ডায়াল-এর সিএমও প্রসূন কুমার বলেন, ‘পর পর দু’টি কঠিন বছর পার করে ভোক্তাদের মনোভাবে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখতে পাওয়া আনন্দদায়ক। নবরাত্রি এবং দুর্গা পুজো উপলক্ষ্যে উৎসব পরিষেবার বিস্তৃত পরিসরের চাহিদা বৃদ্ধির স্পষ্ট প্রতিফলন ঘটছে জাস্ট ডায়ালে। সারা দেশে, মণ্ডপ সাজানোর চাহিদা বেড়েছে ১২৪ শতাংশ, খাবার সরবরাহকারী সংস্থাগুলির জন্য চাহিদা বেড়েছে ৫৫ শতাংশ এবং প্রতিমা শিল্পীদের জন্য ২৩ শতাংশ চাহিদা বেড়েছে। অন্য দিকে, দ্বিতীয় শ্রেণির শহরগুলিতে এ ধরনের পরিষেবা অনুসন্ধান করার প্রবণতা বৃদ্ধি ইঙ্গিত করে ব্যবসা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাঁরাও অনলাইন উপস্থিতিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আসন্ন উৎসব মরশুম ব্যবসায়ীদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উৎসাহ প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং জাস্ট ডায়াল তাদের এই বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
আরও পড়ুন- পূর্ব বর্ধমানে সব এলাকায় বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, পুজোর আগে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি
উল্লিখিত পরিষেবাগুলির ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, সারা ভারতে পুজোর প্রয়োজনীর উপকরণ, ফুলের সাজসজ্জা এবং মিষ্টির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে উৎসব মরশুম শুরুর আগেই। পুজো উপকরণ বিক্রেতাদের জন্য অনলাইন অনুসন্ধান প্রায় ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, মিষ্টির দোকানগুলির জন্য ১৮ শতাংশ এবং ফুল বিক্রেতাদের জন্য অনুসন্ধান বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ শতাংশ।
প্রথম শ্রেণির শহরগুলির মধ্যে, মণ্ডপ সজ্জাকারীদের চাহিদা ১১৮ শতাংশ বেড়েছে, গত বছরের তুলনায়, প্রতিমা শিল্পীদের চাহিদা ২৯ শতাংশ বেড়েছে, ক্যাটারারদের জন্য ৩৬ শতাংশ, পুজো উপকরণ বিক্রেতাদের জন্য ২১ শতাংশ এবং মিষ্টির দোকানগুলির জন্য ১৩ শতাংশ বেড়েছে। ফুল বিক্রেতাদের চাহিদার হার অবশ্য গত বছরের মতোই রয়েছে। প্রতিমা শিল্পীদের চাহিদার শীর্ষে অবশ্যই রয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় মেট্রোপলিটন কলকাতা। তার পরেই রয়েছে দিল্লি এবং মুম্বই।
মণ্ডপ শিল্পীদের চাহিদা প্রাথমিক ভাবে বেশি থাকে কলকাতা, দিল্লি এবং মুম্বইতে। আবার মুম্বই, দিল্লি এবং হায়দরাবাদে চাহিদা বেশি ফুলের সাজসজ্জার ক্ষেত্রে। খাবার সরবরাহকারী সংস্থাগুলির চাহিদার শীর্ষে রয়েছে মুম্বই, দিল্লি, তার পর কলকাতায। এ সবই দুর্গাপুজো এবং নবরাত্রি উদযাপনের জন্য, তা বোঝাই যায়। কিন্তু অনলাইনে মিষ্টি সরবরাহের জন্য অনুসন্ধান সব থেকে বেশি হয়েছে মুম্বই, দিল্লি এবং বেঙ্গালুরুতে।
উৎসব পরিষেবাগুলির জন্য অনলাইন অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শ্রেণির শহরগুলি বেশ এগিয়ে এসেছে। ৬০ শতাংশ (YOY) বেড়েছে এই প্রবণতা, যা প্রথম শ্রেণির শহরগুলির প্রায় দ্বিগুণ৷ মহারাষ্ট্রের শহর নাসিক, ঔরঙ্গাবাদ, কোলহাপুর, নাগপুর এবং কর্ণাটকের মহীশূরে প্রতিমা শিল্পীদের চাহিদা বেশি ছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে এর কারণ সম্প্রতি সমাপ্ত গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi 2022)। পাশাপাশি কোয়েম্বাতোর, মাদুরাই, সুরাত, ত্রিচি এবং সালেম শহরে মণ্ডপ সজ্জাকারীদের চাহিদা বেশি। পুজো উপকরণ বিক্রেতাদের জন্য দ্বিতীয় শ্রেণির শহরে বেশিরভাগ অনুসন্ধান হয়েছে পটনা, ইন্দোর, নাগপুর, রায়পুর এবং বারাণসীতে। অন্য দিকে, চণ্ডীগড়, জয়পুর, কোয়েম্বাতোর, এর্নাকুলম এবং ইনদওরের মতো শহরে বেড়েছে ফুল ব্যবসায়ীদের অনলাইন অনুসন্ধান।
ক্যাটারারের বেশিরভাগ চাহিদা তৈরি হয়েছিল চণ্ডীগড়, কোয়েম্বাতোর, এর্নাকুলম, গোয়া এবং ইনদওর শহরে। আবার মিষ্টির দোকানগুলির জন্য অনলাইন অনুসন্ধান বেশি ছিল চণ্ডীগড়, অমৃতসর, আগ্রা, দেরাদুন এবং এলাহাবাদে।