তবে ধনতেরসে সোনা বা পিতল কেনার আরও একটা কারণ রয়েছে। সেটা যমরাজের সঙ্গে সম্পর্কিত। ধনতেরসে সোনা, রুপো কেনার কারণ নিয়ে বিস্তারিত জানালেন কাশীর জ্যোতিষী চক্রপাণি ভট্ট।
আরও পড়ুন: সোনা না কি রুপো? এই ধনতেরসে কোনটা কিনলে লাভের মুখ দেখা যাবে? জানুন বিশদে
ধনতেরস ২০২২-এ কেন সোনা কেনা উচিত?
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময় হাতে অমৃতের কলস নিয়ে আবির্ভূত হন ধন্বন্তরী। সেই সমুদ্র মন্থন থেকে মা লক্ষ্মীও আবির্ভূতা হয়েছিলেন। এই কারণে ভগবান ধন্বন্তরীকে লক্ষ্মীর ভাই বলে মনে করা হয়। ধন্বন্তরী স্বাস্থ্য, বয়স এবং সুখ ও সমৃদ্ধির দেবতা। তিনি পিতলের জিনিস এবং হলুদ রঙ পছন্দ করেন। এই কারণে ধনতেরসের দিন, ভগবান ধন্বন্তরীর পূজা করা হয়। কেনা হয় সোনা অথবা পিতলের সামগ্রী বা অলঙ্কার। বিশ্বাস, এতে পরিবারের সুখ এবং সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। আয়ু বাড়ে এবং স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। এই দিনে পিতলের থালায় ভগবান ধন্বন্তরীকে অন্ন নিবেদন করা হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: কীভাবে চিনবেন খাঁটি সোনা? জানুন ২৪, ২২, ১৮ এবং ১৪ ক্যারেটের ফারাক!
ধনতেরসে সোনা কেনার গল্প:
ধনতেরসে সোনা কেনা নিয়েও কিংবদন্তি রয়েছে। বলা হয় যে, হিম নামক এক রাজার পুত্রকে অভিশাপ দেওয়া হয় যে, বিবাহের চতুর্থ দিনে তাঁর মৃত্যু হবে। এক দিন তাঁর বিয়ে হয়। অভিশাপের কথা জানতে পারেন তাঁর স্ত্রীও। ভাবতে লাগলেন, স্বামীকে কীভাবে বাঁচানো যায়! মাথায় একটা বুদ্ধি এল। তিনি স্বামীকে বিয়ের চতুর্থ দিনে জেগে থাকার পরামর্শ দিলেন। কোনও ভাবেই ঘুমোনো যাবে না। সারাদিন রাত জেগে থাকতে হবে। আর স্ত্রী ঘরের দরজায় রাখলেন সোনা-রুপো-হিরের গয়না। চারিদিকে জ্বালিয়ে দিলেন প্রদীপ। স্বামী যাতে ঘুমিয়ে না-পরেন, সেই জন্য গান-গল্প করতে শুরু করলেন।
কিন্তু অভিশাপ খণ্ডাবে কী ভাবে? রাজপুত্রের মৃত্যুকাল ঘনিয়ে আসতেই সাপের বেশে সেখানে হাজির হলেন যমরাজ। কিন্তু উজ্জ্বল আলো আর সোনা, রুপোর দীপ্তিতে তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। তিনি আর রাজপুত্রের কাছেই পৌঁছতে পারলেন না। দরজায় সোনা, রুপোর স্তূপে বসে গান শুনতে লাগলেন। এভাবে সকাল হয়ে গেল। আর তিনিও রাজপুত্রের প্রাণ না-নিয়েই যমলোকে ফিরে গেলেন।
এই পৌরাণিক গল্প থেকে বিশ্বাস জন্মায় যে, ধনতেরসে সোনা কেনা অত্যন্ত শুভ। ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। অশুভ দুর্ভাগ্যের যোগ কেটে যায়। ধনতেরসে যমকে প্রদীপ দান করলে মৃত্যুভয় দূর হয় বলেও মনে করা হয়।