TRENDING:

৫০/৩০/২০-র নীতি তো না-হয় হল! কিন্তু এটা ছাড়াও নতুন বছরে সঞ্চয়ের জন্য কী কী পরিকল্পনা করা যেতে পারে? জানুন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ!

Last Updated:

নতুন একটা বছর, আবার নতুন করে ঘর-সংসারের আয়-ব্যয়-সঞ্চয়ের বাজেট তৈরি। যার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল সঞ্চয়ের বিষয়টা।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: নতুন একটা বছর, আবার নতুন করে ঘর-সংসারের আয়-ব্যয়-সঞ্চয়ের বাজেট তৈরি। যার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল সঞ্চয়ের বিষয়টা। সেভিংস অথবা সঞ্চয়ের সব থেকে প্রাথমিক কৌশল হল ৫০/৩০/২০ নীতি। তবে এই বিষয়টা অনেকের কাছে একেবারেই নতুন হতে পারে। তাই সবার আগে এই নীতির বিষয়ে একটা পরিচয় দিয়ে নেওয়া যাক।
advertisement

৫০/৩০/২০ নীতি আসলে কী? ট্যাক্স বা কর কাটানোর পরে আমাদের হাতে যে পরিমাণ টাকাটা বেতন হিসেবে পড়ে থাকে, ওই টাকাকেই আমাদের ৫০/৩০/২০ নীতি অনুসরণ করে নিজেদের প্রয়োজনের নিরিখে তিন ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। হিসেব অনুযায়ী, ওই বেতনের ৫০ শতাংশ রাখা উচিত প্রয়োজনীয় জিনিসের খরচ মেটানোর জন্য। নিজেদের শখ এবং ইচ্ছের খাতে রাখা উচিত ওই বেতনের ৩০ শতাংশ। আর বাকি থাকা ২০ শতাংশ বেতন সঞ্চয়ের জন্য আলাদা করে সরিয়ে রাখতে হবে। এই সরল এবং সাধারণ নীতি অনুসরণ করে টাকা সঞ্চয় করলে নিজেদের এবং নিজের পরিবারের আর্থিক লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়। আর এটা প্রয়োজনের সময়ও খুব উপযোগী হিসেবে প্রমাণিত হয়।

advertisement

তবে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার আগে আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা জরুরি যে, শুধু সঞ্চয়ে কাজ হবে না। আসলে সঞ্চয়ের পাশাপাশি বিনিয়োগও করতে হবে। যা যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমাদের রক্ষা করতে পারবে। ২০২২ সালে আমরা দেখেছি উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার, সঙ্কট, মন্দা নিয়ে উদ্বেগ, উচ্চ ঋণ এবং আমানতের হার ইত্যাদির মতো বিশ্বব্যাপী সমস্যা। ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, নতুন বছরে শুধু সঞ্চয় করার রেজোলিউশন নিলেই হবে না, এর পাশাপাশি নিতে হবে বিনিয়োগের রেজোলিউশনও। তাতে আর্থিক লক্ষ্য তো পূরণ হবেই, সেই সঙ্গে হাতে আসবে ভাল রিটার্নও। জেনে নেওয়া যাক, কিছু সেভিংস প্ল্যান স্ট্র্যাটেজি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ।

advertisement

আরও পড়ুন: ২০২২ সালে দ্বিগুণ হয়েছে টাকা! এই পাঁচটি স্টক থেকে প্রচুর লাভ করেছেন মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমাররাও!

এপসিলন মানি মার্ট প্রাইভেট লিমিটেড-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও অভিষেক দেব-এর পরামর্শ অনুযায়ী সেভিংস প্ল্যান স্ট্র্যাটেজি:

ইক্যুইটি সেভিংস প্ল্যান:

একটা সাধারণ ইক্যুইটি ফান্ড শুধুমাত্র ইক্যুইটিতেই বিনিয়োগ করে থাকে। স্টক মার্কেটের উন্নতির উপরেই এর প্রবণতাও নির্ভর করে। আর সেভিংস প্ল্যান হল একটি হাইব্রিড ফান্ড। যা ইক্যুইটি, ডেট এবং আর্বিট্রেজ সিকিওরিটিজে মিলিয়ে-মিশিয়ে বিনিয়োগ করে। এক দিকে সম্পদ গড়ে তুলতে সাহায্য করে ইক্যুইটি, আর অন্য দিকে আবার ডেট এবং আর্বিট্রেজ নিম্নমুখী অস্থিরতা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। আর এটা শুধুমাত্র মডারেট ক্যাপিটাল অ্যাপ্রিসিয়েশনই এনে দেয় না, তার সঙ্গে সঙ্গে একটা স্থায়ী রোজগার এবং ক্যাপিটাল প্রোটেকশনেরও সুবিধা প্রদান করে দেয়। ইক্যুইটি সেভিংস প্ল্যান হল দারুন স্থিতিশীল একটি প্ল্যান। যেখানে ঝুঁকির পরিমাণ খুবই কম থাকে। এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি আবার এর উপর ইক্যুইটি ফান্ডের মতো ট্যাক্স বা করও নির্ধারণ করা হয়। যা এর অন্যতম প্লাস পয়েন্ট।

advertisement

আরও পড়ুন: Petrol Diesel Prices : বেশির ভাগ শহরে দাম বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের, দেখে নিন আপনার শহরে কত হল

এক জন বিনিয়োগকারী যদি ৫ বছর সময়ের মেয়াদে মাঝারি অস্থিরতার মধ্যেও খুব ভাল পরিমাণে রিটার্ন পেতে চান, তা-হলে তিনি এটা এক বার যাচাই করে দেখতে পারেন। এই ফান্ড ক্যাটাগরি তুলনামূলক ভাবে আন্ডার-ট্যাপড। আর এর প্রদত্ত সুবিধাও কম কিছু নয়। বিনিয়োগকারীরা নিজেদের টাকা রাখার জন্য এইচডিএফসি ইক্যুইটি সেভিংস ফান্ড এবং এসবিআই ইক্যুইটি সেভিংস ফান্ড বেছে নিতে পারেন।

advertisement

সেভিং প্ল্যান ২০২৩:

এক বার চট করে যদি ২০২২ সালটা ফিরে দেখা যায়, তা-হলে দেখা যাবে যে, এনএফটি ম্যানিয়া, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার, যুদ্ধ, আর্থিক মন্দার আশঙ্কা ইত্যাদি ছিল গোটা বছরটায়। তবে ২০২৩ বা নতুন বছরকে বরণ করার সময় ফের আশায় বুক বাঁধছে মানুষ। পরের ১২টা মাস যাতে নির্বিঘ্নে কাটে, কোনও রকম মাথাব্যথা ছাড়াই আমরা দুর্দান্ত ভাবে নিজেদের আর্থিক লক্ষ্য পূরণ করতে পারি, তার জন্য কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।

বিনিয়োগও জরুরি:

শুধু সঞ্চয়ই নয়, এর পাশাপাশি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে এবং তার থেকে রিটার্ন আয় করতে হবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অ্যাসেট এক্সপোজার এক-এক বিনিয়োগকারীর ক্ষেত্রে এক-এক রকম।

বাস্তবসম্মত লক্ষ্য:

একটি বাস্তবসম্মত লক্ষ্য থাকতে হবে, যা একটি নির্ধারিত সময়ের মেয়াদে অর্জন করা সম্ভব হবে।

বাজেট তৈরি করতে হবে:

একটা বাজেট থাকা জরুরি। এ-ক্ষেত্রে খরচ করার আগে ৩০ শতাংশ সঞ্চয় করার একটি সহজ সাধারণ সমীকরণ দারুন সাহায্য করে। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। খরচ, সেভিংস, প্রয়োজন এবং শখ অনুযায়ী আলাদা আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যেতে পারে।

কর বা ট্যাক্স:

ট্যাক্সের বিষয়টাও আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখতে হবে। নতুন বছর পড়ে যাচ্ছে, অথচ কিছু বিনিয়োগকারী মার্চ মাসে নিজেদের ট্যাক্সের বিষয়ে পরিকল্পনা শুরু করেন। তাই আগে থেকেই গোটা বছরের ট্যাক্সের প্ল্যান করে রাখতে হবে।

ইনস্যুরেন্স বা বিমা:

ইনস্যুরেন্স বা বিমা রাখতে হবে। কোভিড কিন্তু আমাদের মানুষের জীবনের মূল্য বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছে। তাই টার্ম ইন্স্যুরেন্স এবং স্বাস্থ্য বিমা নিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

বুঝেশুনে বিনিয়োগ:

বুদ্ধি খাটিয়ে বিনিয়োগ করতে হবে। এ-ক্ষেত্রে মূল বিষয়টা হল অ্যাসেট অ্যালোকেশন। এখনও সাধারণ ভাবে মানুষ এফডি এবং রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন। এফডি-র উচ্চ দরের দিকেও নজর দিতেই হবে। তাই নতুন বছরে আমাদের রেজোলিউশন নেওয়া উচিত যে, আমরা নিজেদেরকে আর্থিক বিষয় সম্পর্কে আরও বেশি করে শিক্ষিত করে তুলব। যাতে স্বাধীন ভাবে আমরা আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি।

ফিনটু-র প্রতিষ্ঠাতা সিএ মনীশ পি হিঙ্গার-এর পরামর্শ অনুযায়ী সেভিংস প্ল্যান স্ট্র্যাটেজি

বিনিয়োগকারীর আর্থিক লক্ষ্য এবং ঝুঁকির সহনশীলতার উপর ভিত্তি করে সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের বিভিন্ন রকম বিকল্প রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীরা নিজেদের ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিওতে রাখতে পারবেন। মাঝারি মেয়াদ থেকে দীর্ঘ মেয়াদের ক্ষেত্রে পরের বছরের জন্য যেসব সেভিংস প্ল্যানের বিকল্প রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল মিউচুয়াল ফান্ডও। আসলে মুদ্রাস্ফীতিকে কাটিয়ে ভাল পরিমাণে রিটার্ন আনার ক্ষমতা রয়েছে এই ধরনের বিকল্পগুলির। তবে ছোট মেয়াদ অথবা জরুরিকালীন প্রয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় মাসির খরচ অন্ততপক্ষে ছয় থেকে নয় মাসের মেয়াদের ভিত্তিতে ব্যাঙ্ক অথবা কর্পোরেট ফিক্সড ডিপোজিট অথবা লিক্যুইড ফান্ডে রাখা যেতে পারে।

অবসরকালীন সময়ের জন্য যাঁরা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের জন্য পিপিএফ এবং এনপিএস অন্যতম ভাল বিকল্প। কারণ উভয় বিকল্পের ক্ষেত্রেই রয়েছে নির্দিষ্ট ট্যাক্স সংক্রান্ত সুবিধা এবং দুর্দান্ত রিটার্নও। যা চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরেই রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। আবার ইক্যুইটি সেভিংস ফান্ডও বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই ভাল বিকল্প। বিশেষ করে যে সব বিনিয়োগকারীরা মাঝারি মানের ঝুঁকি নিতে চান, তাঁদের জন্য এটা অত্যন্ত উপযোগী। আসলে হাইব্রিড ইক্যুইটি ফান্ড অথবা ব্যালেন্সড ফান্ডের মতো অন্যান্য অ্যাগ্রেসিভ হাইব্রিড ফান্ডের তুলনায় ইক্যুইটি সেভিংস ফান্ডের ক্ষেত্রে খুবই স্বল্প পরিমাণ ঝুঁকি থাকে। ইক্যুইটি সেভিংস ফান্ডের মূল উপকারিতা হল কিছু ডেট এক্সপোজারের কারণে এতে অস্থিরতা তেমন ভাবে থাকে না। তাই ২০২৩ সাল অর্থাৎ আগামী বছরে বিনিয়োগ শুরু করার আগে বিনিয়োগকারীর পর্যাপ্ত বিমা রয়েছে কি না, সেটা স্থির করা জরুরি। এর পাশাপাশি জরুরিকালীন যথেষ্ট ফান্ড রয়েছে কি না, সেই বিষয়টার উপরেও নজর দিতে হবে।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

এখানেই শেষ নয়, বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করে তুল্যমূল্য বিচার করতে হবে। বিষয়টা সহজ করে বুঝিয়েই বলা যাক। আসলে যে কোনও জায়গায় বিনিয়োগ করার আগে বাজারে প্রাপ্ত বিভিন্ন বিকল্প সম্পর্কে যথেষ্ট পড়াশোনা করতে হবে এবং এই সব বিকল্পকে একে অপরের সঙ্গে তুলনামূলক ভাবে বিচার করে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। এর পাশাপাশি বিনিয়োগকারীকে নিজের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক লক্ষ্য, ঝুঁকি সংক্রান্ত সহনশীলতা এবং উপলব্ধ বিভিন্ন বিনিয়োগ বিকল্পের ক্ষেত্রে কার্যকরী করের প্রভাব ইত্যাদি বিষয়গুলোকেও বিবেচনা করতে হবে। এই সমস্ত বিষয় যদি সঠিক ভাবে বিনিয়োগকারী বুঝে উঠতে না-পারেন, কিংবা যাঁরা নতুন ভাবে বিনিয়োগ শুরু করছেন, তাঁরা আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করতেই পারেন। এতে বিনিয়োগকারী তাঁর বিনিয়োগের প্রয়োজন অনুযায়ী বিকল্প বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত সহজেই নিতে পারবেন। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীর জন্য কোনটা সবথেকে ভাল, তা বোঝার জন্যই মূলত আর্থিক উপদেষ্টার কাছে যাওয়া উচিত।

বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
৫০/৩০/২০-র নীতি তো না-হয় হল! কিন্তু এটা ছাড়াও নতুন বছরে সঞ্চয়ের জন্য কী কী পরিকল্পনা করা যেতে পারে? জানুন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ!
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল