আরও পড়ুন: কোন মিউচুয়াল ফান্ডটি আপনার জন্য সঠিক, বুঝবেন কী ভাবে?
সেভিংস অ্যাকাউন্টের প্রকারভেদ--
১. রেগুলার সেভিংস অ্যাকাউন্ট:
- কিছু প্রাথমিক শর্তাবলীর সাপেক্ষে এই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়।
- রেগুলার সেভিংস অ্যাকাউন্টে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিতে হয় না। এটা অনেকটা বাড়িতে সিন্দুক জাতীয় নিরাপদ জায়গায় টাকা রাখার মতো বিষয়।
advertisement
২. বেতন-ভিত্তিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট:
- কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কোম্পানি এই ধরনের সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়।
- এই অ্যাকাউন্টগুলিতে ব্যাঙ্ক শর্ত সাপেক্ষে সুদের হার প্রদান করে। বেতনের তারিখ এগিয়ে এলে কোম্পানি ব্যাঙ্কে টাকা জমা করে এবং ব্যাঙ্ক বেতনের টাকা ওই কোম্পানির কর্মচারীদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয়।
- প্রায় সমস্ত বেতন-ভিত্তিক অ্যাকাউন্টে কোনও ন্যূনতম ব্যালান্স রাখা বাধ্যতামূলক নয়।
- পর-পর তিন মাস যদি কোনও বেতন-ভিত্তিক অ্যাকাউন্টে বেতন না-আসে, তা হলে সেটিকে রেগুলার অ্যাকাউন্টে রূপান্তরিত করে দেয় ব্যাঙ্ক।
আরও পড়ুন: ১৬ মার্চ থেকে ১২ টাকা করে বাড়তে পারে পেট্রোল-ডিজেলের দাম!
৩. সিনিয়র সিটিজেনস্ সেভিংস অ্যাকাউন্ট:
- এই জাতীয় অ্যাকাউন্টগুলি রেগুলার সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতোই প্রায় কাজ করে। তবে প্রবীণদের সুবিধার্থে এই ধরনের অ্যাকাউন্ট সুদের হার বেশি দেয়। এ ছাড়া আরও অন্যান্য ব্যাঙ্কিং সুবিধাও দেওয়া হয়।
- এই অ্যাকাউন্টগুলিকে অন্যান্য সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের সঙ্গে যুক্ত করা হয়, যাতে পেনশন ফান্ড, রিটায়ারমেন্টের ফান্ড-সহ সমস্ত অর্থকে একটি অ্যাকাউন্টের মধ্যেই আনা যায়।
৪. মাইনরস্ সেভিংস অ্যাকাউন্ট:
- এই অ্যাকাউন্টগুলিতে কোনও ন্যূনতম ব্যালান্স রাখার প্রয়োজন হয় না। মাইনরস্ সেভিংস অ্যাকাউন্ট সাধারণত শিশু অথবা নাবালকদের ব্যাঙ্কিং সুবিধা এবং সেভিংস অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবগত করার জন্য বানানো হয়।
- এই জাতীয় অ্যাকাউন্ট অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে খোলা যেতে পারে এবং শিশুর ১০ বছর বয়স পর্যন্ত অভিভাবককেই তা পরিচালনা করে হবে।
- শিশুর বয়স ১০ বছর পার হওয়ার পর সে নিজেই এই অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারে।
- নাবালক অবস্থা থেকে ১৮ বছরে পা দিলেই এই অ্যাকাউন্টকে রেগুলার সেভিংস অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করা হবে।
৫. জিরো ব্যালান্স সেভিংস অ্যাকাউন্ট:
- সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্টের সুবিধা এই জাতীয় অ্যাকাউন্টগুলিতে একসঙ্গে উপভোগ করা যায়।
- যে হেতু এ ক্ষেত্রে টাকা তোলার সীমা বেঁধে দেওয়া থাকে, তাই টাকা নির্ধারিত ন্যূনতম ব্যালান্সের নীচে চলে গেলেও কোনও জরিমানা দিতে হবে না।
আরও পড়ুন: এখনও আসেনি ইনকাম ট্যাক্স রিফান্ড ? অনলাইনে চেক করে নিন স্টেটাস ....
৬. উইমেনস্ সেভিংস অ্যাকাউন্ট:
- অ্যাকাউন্টধারীর সুবিধার্থে বিশেষ কিছু দিক থাকে এই ধরনের অ্যাকাউন্টে।
- উইমেনস সেভিংস অ্যাকাউন্টে কেনাকাটায় ছাড়, লোনের ওপর কম সুদের হার এবং ডিম্যাট অ্যাকাউন্টের চার্জে ছাড় পাওয়া যায়।
সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার যোগ্যতার মানদণ্ড--
সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার যোগ্যতার মানদণ্ড বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণ ভাবে কারা ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন, তার একটি তালিকা দেওয়া হল।
- ভারতীয় নাগরিক
- ভারতে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিক
- অনাবাসী ভারতীয় নাগরিক
- ১৮ বছর বয়সি অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্করা
সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র--
- বয়স এবং পরিচয়ের প্রমাণ: প্যান, ভোটার আইডি, পাসপোর্ট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স
- ছবি: কমপক্ষে ২টি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ঠিকানার প্রমাণ: ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার আইডি, পাসপোর্ট, ইলেকট্রিক বিল
- সিনিয়র সিটিজেন কার্ডঃ বয়সের প্রমাণ-সহ নথি। সিনিয়র সিটিজেন কার্ড সমাজকল্যাণ দফতরের তরফে প্রদান করা হয়। নাগরিক প্রবীণ কি না, তা প্রমাণ করার জন্য এই কার্ডকেই সব চেয়ে উপযুক্ত নথি হিসেবে ধরা হয়।
সেভিংস অ্যাকাউন্টের বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা--
- সারপ্লাস তহবিল সংরক্ষণ করার সব চেয়ে নিরাপদ জায়গা হল, সেভিংস অ্যাকাউন্ট
- সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখা অর্থের ওপর সুদ পাওয়া যায়
- সেভিংস অ্যাকাউন্টে বার্ষিক সুদের হার ৩.৫ শতাংশ থেকে শুরু করে ৭ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে
- মোবাইল ব্যাঙ্কিং এবং ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং-এর সুবিধা
- সেভিংস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম এক চতুর্থাংশ ব্যালান্স বজায় রাখলে লকারের ভাড়ায় সাধারণত কিছু ছাড় দেয় ব্যাঙ্ক
- সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকলে বেশির ভাগ ব্যাঙ্ক দুর্ঘটনা, মৃত্যু-সহ নানা ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম জীবনবিমার সুবিধা দেয়
- এই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে পাওয়া ATM কার্ড দেশের যে কোনও জায়গায় ব্যবহার করা যায়
সেভিংস অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সুদের হার--
- কানাড়া ব্যাঙ্ক (Canara Bank): বার্ষিক ৩.২০ শতাংশ পর্যন্ত
- ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক (IndusInd Bank): বার্ষিক ৫.৫০ শতাংশ পর্যন্ত
- সাউথ ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক (South Indian Bank): বার্ষিক ৪.৫০ শতাংশ পর্যন্ত
- সিটি ব্যাঙ্ক (Citi Bank): বার্ষিক ২.৫ শতাংশ
- ইয়েস ব্যাঙ্ক (YES Bank): বার্ষিক ৫.২৫ শতাংশ পর্যন্ত
- ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (Bank of India): বার্ষিক ২.৯০ শতাংশ