শুধু বিসলেরি নয়, মাজা, থাম্বস আপ, গোল্ড-স্পট-এর মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ড-এর শ্রষ্টা যে মানুষটি, তাঁর নাম অশোক চৌহান। বলা চলে, আমাদের দেশকে সফট ড্রিংক্স-এর সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে বলা হয় 'ব্র্যান্ড ম্যান অফ ইন্ডিয়া'।
সিএনবিসি আওয়াজ-এ একটি সাক্ষাৎকারে অশোক চৌহান জানান, আমেরিকা থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পড়াশোনা শেষ করে ১৯৬২ সালে তিনি পারলে গ্রুপ-এ যোগ দেন। তাঁর ভাষায়, '' যোগ্য প্রার্থীদের আমার সঙ্গে কাজ করানোয় উদ্দীপিত করাটাই সবথেকে বড় চালেঞ্জ। এই সব ব্যবসায় কোনও ফিক্সড ফর্মুলা থাকে না। একটাই মন্ত্র--- প্রডাক্ট-এর উন্নতিকল্পে ফোকাস করতে হবে।''
advertisement
তিনি আরও জানান, '' সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করে কীভাবে প্রোডাক্ট প্রোমোট করা হচ্ছে। প্রথমদিকে সংস্থা সুনীল গাভাসকর, কপিল দেব-এর মত কিংবদন্তী ক্রিকেটার, সলমনের মতো জনপ্রিয় তারকাকে দিয়ে প্রচার করিয়েছিল।
১৯৭৭ সালে একটি দেশীয় সফট ড্রিংক ব্র্যান্ড 'ক্যাম্পা কোলা' বিদেশের মার্কেটে সাড়া ফেলে। এরপর বিসলেরি তাদের সফট ড্রিংক্স থাম্বস আপ লঞ্চ করল। থাম্বস আপ বিদেশের বাজারে খুবই জনপ্রিয়, কিন্তু ভারতে থাম্বস আপ মানে অন্য কিছু ভাবা হত। নামটা দিয়েছিলেন ত্রিকায়া অ্যাড এজেন্সির রবি গুপ্তা। বিসলেরি সেই নামটিই রাখে এবং পরিবর্তনও করে না। পরবর্তীতে সফ্ট ড্রিংক্স ইন্ডাস্ত্রিতে জ্বলজ্বলে নাম হয়ে ওঠে থাম্বস আপ।
অমিত চৌহান ১৯৬৯ সালে একটি ইতালীয় সংস্থা থেকে বিসলেরি কিনে নেন, দাম মাত্র ৪ লাখ টাকা! আর আজ? ভারতের সর্ববৃহৎ মিনারেল ওয়াটার ইন্ডাস্ট্রি এটি। এই আর্থিক বছরে বিসলেরির আয় ২,৫০০ কোটি এবং লাভ` ২২০ কোটি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কোম্পানি ১২২টি প্ল্যান্টে বিসলেরি তৈরি করে, যার মধ্যে ১৩টি নিজস্ব প্ল্যান্ট। শুধু তাই নয়, কোম্পানির ৪৫০০ ডিস্ট্রিবিউটর এবং ৫০০০-এর বেশি ট্রাক পণ্য বহন করে। প্যাকেজড ওয়াটার মার্কেটে বিসলেরির ৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।অধিগ্রহণের পর, টাটা কনজিউমার প্যাকেজড মিনারেল ওয়াটারের দুনিয়ায় বৃহত্তম কোম্পানি হয়ে উঠবে। টাটা কনজিউমারের বর্তমানে হিমালয়ম, টাটা কপার প্লাস, টাটা গ্লুকো প্লাস আছে। প্রসঙ্গত, দেশে প্যাকেজযুক্ত জলের বাজার ২০,০০০ কোটি টাকার। এর প্রায় ৬০ শতাংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রের দখলে রয়েছে।