কলকাতা: Chetak, Spectra, Bullet, Yezdi, Luna, Rajdoot- এই সব নামগুলি ভারতীয়দের কাছে অত্যন্ত পরিচিত ৷ প্রতিদিনকার জীবনের সঙ্গেই অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত এটি ৷ হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি এলাকা থেকে শুরু করে সবুজে ঘেরা কেরল-সর্বত্রই দু’চাকা যানের প্রয়োজনীয়তা অনেক ৷ কারণ এর মাধ্যমে অনেক সহজেই অনেক দূর যাওয়া যায় ৷ প্রয়োজনীয় সব কাজ করা যায় দ্রুত ৷ আটের দশক থেকেই এই দু’চাকার বাহনগুলি ভারতীয়দের পরিবারের একটি অঙ্গ ৷ এগুলির সাহায্যেই দেশের মানুষ অনেক স্বাধীনভাবে যেখানে খুশি ঘুরে-বেড়াতে পারে ৷ সম্প্রতি Ola-র পক্ষ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-স্কুটার ম্যানুফ্যাকচারিং ফেসিলিটি তামিলনাডুর কৃষ্ণগিরি জেলায় তৈরি হয়েছে ৷ যা দেশের দু’চাকার যানকে আরও উন্নত পর্যায় নিয়ে যেতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যেতেই পারে ৷ দেশের অধিকাংশ মানুষই দু’চাকার যানের উপর নির্ভরশীল ৷ পাশাপাশি গোটা বিশ্বে দু’চাকা যান তৈরি এবং রফতানিতে ভারতই সবার শীর্ষে রয়েছে ৷
advertisement
সময়ে দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গেই যানবাহনের উন্নতিও অত্যন্ত প্রয়োজন ৷ মোবিলিটি সেক্টরে ভারতই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে প্রস্তুত ৷ FAME II-র সম্প্রতি রিমডেলিংয়ের পর এই সম্ভাবনা আরও বেড়েছে ৷ আইআইটি দিল্লির পক্ষ থেকে ইলেকট্রিক মোবিলিটির উপর দু’বছরের এমটেক প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে ৷ কারণ এই দু’-চাকা এবং তিন চাকার বাহনগুলিই আগামী দিনে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে চলেছে এ দেশে ৷ এই FAME II-র গুরুত্ব তাই অনেকাংশে বেড়েছে ৷
Ahmedabad BRTS- এনেছে ইকো লাইফ বাস ৷ ওই শহরে JBM Auto-র ৫০টি নতুন ইলেকট্রিক বাসের পরিষেবা চালু হয়েছে ৷ যা ‘গ্রিন ট্রানজিট’-এর আদর্শ উদাহরণ ৷ আহমেদাবাদ শহর থেকে মাত্র তিন ঘণ্টা দূরে কেওয়াডিয়া শহরে গড়ে উঠেছে ভারতের একমাত্র ইলেকট্রিক যানের শহর ৷ গুজরাতের মতোই দেশের আরও ১৮টি রাজ্য এই মোবিলিটির ফর্মুলা নিতে উৎসাহী ৷ সাইকেল রিকশা, অটো রিকশা, ছোট এবং বড় বাস-সবই এর অংশ ৷ দেশে ইলেকট্রিক মোবিলিটির প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে ৷ Energy Efficiency Services Limited(EESL) তৈরি করবে ৩ লক্ষ ইলেকট্রিক তিন চাকার যান ৷ দেশের ৯টি শহরের ৪ মিলিয়ন মানুষই এই সংস্থার টার্গেট ৷ পাবলিক ট্রান্সপোর্টের ক্ষেত্রে মানুষের সুবিধার কথা ভেবেই তৈরি করার লক্ষ্যে নেমেছে দেশের টু-হুইলার্স নির্মানকারী সংস্থাগুলি ৷
দেশের মধ্যে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট কানেক্টিভিটিতে তিন চাকার যানের গুরুত্বও অপরিসীম ৷ ভারতের রাস্তায় প্রতিদিন ২০ লাখেরও বেশি ই-রিকশা চলে ৷ যাতে চড়ে ৬ কোটিরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন ৷ E-3W দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও যাতায়াত করার জন্য আদর্শ ৷
এর পাশাপাশি সাইকেল তো রয়েছেই ৷ প্যাডেলে চাপ দিতেই চাকায় ঘূর্ণিপাক, দু'চাকার পক্ষীরাজ ছুটে চলে গন্তব্যের দিকে। করোনার জেরে বিশ্বের ছোট-বড় অনেক শহরেই এটা এখন 'নিউ নর্ম্যাল'। কোভিড পরিস্থিতিতে মেট্রো, বাসের ভিড় এড়াতে দু'চাকার সাইকেল বা বাইক-স্কুটারকেই বেছে নিয়েছেন নিত্যযাত্রীদের একটা বড় অংশ। আর তার ফলে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দু’চাকার চাহিদা। চাহিদা মতো জোগান দিতে কখনও কখনও সমস্যায়ও পড়ছে সংস্থাগুলো। তবে সেইভাবেই আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত তারা। পরিবেশ বান্ধব সাইকেলের সপক্ষে দীর্ঘদিন ধরে সওয়াল করে চলেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। পিছিয়ে নেই ভারতও। নয়াদিল্লি, পুণে এবং দক্ষিণ ভারতের কিছু জায়গায় অতি সম্প্রতি সাইকেল বে তৈরির কাজ শুরু হয়েছে, আর সেটাও কোভিড পরিস্থিতি মাথায় রেখেই।
FAME II স্কিম নতুন করে গড়ে তোলায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছনোর কাজ আরও সহজ হয়েছে ৷ গোটা দেশকেই দিশা দেখাচ্ছে মোবিলিটি সেক্টর ৷ এবং ভারতের পরিবহণ ব্যবস্থাকেও আরও উন্নত করে তুলেছে ৷
*Author is CEO, NITI Aayog, Views Expressed are personal.