ডবল এমএ এবং বিএড ডিগ্রিধারী অঙ্কিত কুমার জৈন নামে ওই যুবক পড়াশোনা শেষ করে যোধপুরের একটি কোম্পানিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর মাসিক বেতন ছিল ৪০ হাজার টাকা। ঘরের ছেলে চাকরি পাওয়ায় খুশি হয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু বরাবরই কৃষিতে নতুন কিছু করার ইচ্ছে ছিল ওই যুবকের। ফলে ২০১৫ সালে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে নিজের গ্রামে ফিরে আসেন। শুরু হয় কৃষিকাজের পরিকল্পনা।
advertisement
আরও পড়ুন: বেড়েই চলেছে সোনার দাম! জেনে নিন আজ ১০ গ্রাম সোনার দাম কত হল
এর পরের বছর অঙ্কিত বেঙ্গালুরু থেকে ৩৫০টি গাছ এনে একটি নতুন পরীক্ষা শুরু করেন। এর মধ্যে ২৭০টি আবার ছিল দশেরির আমের চারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সব গাছই নষ্ট হয়ে যায়। তবে হাল ছাড়েননি ওই যুবক। এই ক্ষতির পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করেছিলেন তিনি। এর মধ্যেই শিখরজি-তে তীর্থ যাত্রার সুযোগ আসে। সেখান থেকে অঙ্কিত কলকাতায় এসে পৌঁছন। শহরের ফলের বাজারে তিনি আপেল কুলের সন্ধান পান। আর সেখান থেকেই আপেল কুলের একটি গাছ নিয়ে ফেরেন তিনি। সেই গাছটাকেই মাদার প্ল্যান্ট হিসেবে কাজে লাগিয়েছিলেন অঙ্কিত।
আরও পড়ুন: অস্বস্তি বাড়াচ্ছে অশোধিত তেল! কলকাতায় পেট্রোল ডিজেলের দাম কত হল দেখে নিন
স্ট্রবেরি গাছে গ্রাফটিং করে নতুন আপেল কুলের গাছ:
এমনিতে কৃষকরা ক্ষেতের ধারে আলে জন্মানো স্ট্রবেরি গাছকে আগাছা হিসাবেই বিবেচনা করে। কিন্তু এই স্ট্রবেরি গাছগুলিকে কাজে লাগিয়ে কলম করে নতুন আপেল কুলের গাছ তৈরি করেছেন অঙ্কিত। ক্ষেতের প্রায় পাঁচ একর জমিতে আপেল কুলের চারা তৈরি করেছেন তিনি। এতে একটি গাছ থেকে এক মরসুমে প্রায় ৭০ কেজি আপেল কুল পাওয়া গিয়েছে। আর এক-একটি আপেল কুলের ওজন ৭০ গ্রাম থেকে ১২০ গ্রাম পর্যন্ত। অঙ্কিত এখনও পর্যন্ত তাঁর ক্ষেতে মোট ৮৫টি আপেল কুলের গাছ তৈরি করেছেন, যেখান থেকে তিনি এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত মুনাফা পাচ্ছেন।
সাগর জেলার ফল বাজারে অঙ্কিতের ফলানো কুলের চাহিদা রয়েছে। তবে ফলন বাড়লে বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন ওই যুবক। অঙ্কিতের এই উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার কথা দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের গ্রাম থেকে অনেক কৃষকই তাঁর কাছে পরামর্শ নিতে আসেন। অনেকেই তাঁর কাছে গ্রাফটিংয়ের পদ্ধতিও শিখতে আসছেন।