কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ৬৭ শতাংশ করদাতাই নতুন কর কাঠামো বেছে নিয়েছেন। তাঁদের মনে হয়েছে, বিভিন্ন পরিবর্তনের পর এটাই লাভজনক। কিন্তু নতুন কর কাঠামোয় কী ট্যাক্স কম দিতে হবে? অধিক কর বাঁচানো সম্ভব?
ধরে নেওয়া যাক, কোনও কর্মী বার্ষিক ১৫ লাখ টাকা রোজগার করেন। নতুন কর কাঠামোয় ১৫ লাখ টাকা আয়ে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। পুরনো কর কাঠামোয় ১০ লাখ টাকার বেশি আয় হলেই কর ধার্য হয় ৩০ শতাংশ হারে।
advertisement
আরও পড়ুন: ফের হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে সোনার দাম, দেখে নিন কলকাতায় ১ ভরির দাম কত হল
তাহলে দেখা যাচ্ছে, বার্ষিক ১৫ লাখ টাকা আয়ে দুটি কর কাঠামোতেই ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হচ্ছে। তাহলে এখন তিনি কোন কর কাঠামো বেছে নেবেন? কয়েকটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি বুঝে নেওয়া যাক।
পুরনো কর কাঠামো:
পুরনো কর কাঠামোয় ৫০ হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন পাওয়া যায়। এটা আয় থেকে বাদ যাবে। ১৫,০০,০০০ – ৫০,০০০ = ১৪,৫০,০০০ টাকা, অর্থাৎ এখন ১৪.৫০ লাখ টাকার উপর ট্যাক্স দিতে হবে।
EPF, PPF, ELSS, NSC-তে বিনিয়োগ করলে ধারা ৮০ সি-এর আওতায় ১.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়। দুই সন্তানের টিউশন ফি-তেও ১.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড়ের সুবিধা নিতে পারেন করদাতা। ১৪,৫০,০০০ – ১,৫০,০০০ = ১৩,০০,০০০ টাকা, অর্থাৎ এখন ১৩ লাখ টাকার উপর কর চাপবে।
যদি তিনি ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেমে বছরে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেন, তাহলে ধারা ৮০সিসিডি(১বি) –এর আওতায় আরও ৫০ হাজার টাকা ছাড় মিলবে। তাহলে এখন ১৩,০০,০০০ – ৫০,০০০ = ১২,৫০,০০০ টাকার উপর কর দিতে হবে।
আরও পড়ুন: SBI-এর ‘এই’ FD স্কিমে যখন খুশি টাকা তোলা যায়, কোনও জরিমানা নেই, উচ্চ হারে সুদও মেলে, দেখুন বিশদে
হোম লোন থাকলে অতিরিক্ত ২ লাখ টাকা বাঁচবে। ধারা ২৪বি-এর আওতায় ২ লাখ টাকার সুদের ওপর আয়কর ছাড় পাওয়া যায়। এটাও বার্ষিক আয় থেকে বাদ যাবে। তাহলে করযোগ্য আয় দাঁড়াবে ১২,৫০,০০০ – ২,০০,০০০ = ১০,৫০,০০০ টাকা।
আয়করের ধারা ৮০ডি-এর আওতায় নিজের, নিজের স্ত্রী এবং সন্তানের নামে স্বাস্থ্য বিমায় ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়। এছাড়া মা-বাবা প্রবীণ নাগরিক হলে এবং তাঁদের নামে স্বাস্থ্য বিমা নিলে আরও ৫০ হাজার টাকা ডিডাকশন পাওয়া যাবে। আর বয়স ৬০-এর কম হলে ২৫ হাজার টাকা। এখানে ২৫ হাজার টাকাই ধরে নেওয়া হল। ১০,৫০,০০০ – ৫০,০০০ = ১০,০০,০০০ টাকা দাঁড়াচ্ছে। পুরনো কর কাঠামোয় এই সমস্ত ডিডাকশনের পর আয়কর দাঁড়াচ্ছে,১,১৭,০০০ টাকা।
এবার নতুন কর কাঠামো:
এবার নতুন কর কাঠামোয় ১৫ লাখ টাকা আয়ে কত কর দিতে হবে দেখা যাক। এতে করদাতা ৭৫ হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন পাবেন। এই টাকা আয় বাদ দিলে দাঁড়াবে ১৫,০০,০০০ – ৭৫,০০০ = ১৪,২৫,০০০ টাকা। ইনকাম ট্যাক্স ক্যালকুলেটর অনুযায়ী, নতুন কর কাঠামোয় ১৪.২৫ লাখ টাকার আয় হলে ১,৩০,০০০ টাকা আয়কর দিতে হবে।
সোজা কথায়, যদি কেউ বিনিয়োগ করে ডিডাকশনের সুবিধা নিতে চান তাহলে পুরনো কর ব্যবস্থাই লাভজনক। আর যদি তিনি বিনিয়োগ না করেন তাহলে পুরনো কর কাঠামোয় তাঁর আয়কর দাঁড়াবে ২,৫৭,৪০০ টাকা। সে ক্ষেত্রে নতুন কর কাঠামো তাঁর জন্য লাভজনক। কারণ বিনিয়োগ ছাড়া নয়া কর কাঠামোয় ১,৩০,০০০ টাকার ইনকাম ট্যাক্স দিতে হবে। তিনি ১,২৭,৪০০ টাকা বাঁচাতে পারবেন।