আরও পড়ুন: আবারও আমবাগানে! এক আমবাগানের যুদ্ধে বদলেছিল বাংলার ভাগ্যাকাশ, এবার যা হল…
মাত্র পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে এক লক্ষ টাকার বেশি মুনাফা করার এক দুর্দান্ত সুযোগ এসে গিয়েছে। এমনকি শুধু মাত্র সিজিনে নয়, অফ সিজিনেও হবে আয়। আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হতে পারেন আপনিও। ঠিক এই উপায়ে বিপুল আয় করেছেন মনতোষ রাজবংশি।
advertisement
গতানুগতিক চাষের পদ্ধতি পরিবর্তে চলতি মরশুমে এক বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষ করেছিলেন ওই কৃষক। জুলাই মাসে শুরু করেছিলেন চাষ। গতানুগতিক পদ্ধতিতে চাষ করলে বছরে মাত্র তিন মাস করলা ফলে। মালদহের কৃষকেরা এতদিন সাধারণত এই তিন মাসই করলার ফলন পেয়ে এসেছেন। তারপরই গাছ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু পুরাতন মালদহের কৃষক মনোতোষ রাজবংশি এই বছর মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষ শুরু করেন। আর তাতেই ঘটেছে ম্যাজিক। প্রায় সাত মাস গাছের বয়স হয়ে গেলেও এখনও নিয়মিত ফলন পাচ্ছেন। এই ঘন কুয়াশায় শীতের মরশুমেও গাছে ফল হচ্ছে। এমনকি নতুন করে আবারও গাছ সতেজ হয়ে উঠছে। আগামী আরও তিন থেকে চার মাস এই গাছ ফল দেবে বলে মনে করছেন।
এক বিঘা জমিতে করলা চাষে সবমিলিয়ে ওই কৃষকের খরচ হয়েছিল ৩৫ হাজার টাকা। আর এখন পর্যন্ত তিনি করলা বিক্রি করে আয় করেছেন ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকার। আরও তিন মাস ফলন দেবে। ফলে তাঁর লাভের পরিমাণ লক্ষ টাকা ছাপিয়ে যাবে বলেই মনে করছেন। মালচিং পদ্ধতিতে চাষের জন্য অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে মনতোষ রাজবংশি বলেন, গতানুগতিক চাষ করে তেমন লাভ হয় না। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ শুরু করে আমি প্রায় দ্বিগুণ বেশি লাভ পেয়েছি। এমনকি দীর্ঘদিন গাছ সতেজ থাকছে। ফলন প্রায় দশ মাস পর্যন্ত পাচ্ছি।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
কী এই মালচিং পদ্ধতি? এর উপকারীতাই বা কী? মূলত সবজি চাষে এই মালচিং পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। আধুনিক এই চাষের পদ্ধতিতে গাছের গোড়া ভাল থাকে। কারণ বিশেষ এক ধরনের পলিথিন দিয়ে গাছের গোড়া ঢাকা দেওয়া হয়। প্রথমে জমির উপর ফালি তৈরি করা হয়। জৈব সার ভাল করে মিশিয়ে গাছের চারা লাগানো হয়। পলিথিনে ছোট ছোট ছিদ্র করা হয় চারা রোপন করার জন্য। বাকি অংশে মাটি ঢাকা থাকে। এই বিশেষ পলিথিনে নিচের দিকটা কালো ওপরের অংশ সাদা চকচকে। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করলে জমিতে একেবারে আগাছা জন্মায় না। এতে করে মাটির জৈব পুষ্টি গাছের মধ্যে চলে যায়। আরও একটি বিশেষ উপকার হল, পোকামাকড়ের আক্রমণ একেবারেই গাছে হয় না। গাছের রোগ কম হয়। কারণ চকচকে পলিথিন থাকায় সমস্ত পোকা সেখানে গিয়েই বসে, গাছের উপর বসে না। বিভিন্ন চাষের ক্ষেত্রে এই মালচিং পদ্ধতি এখন ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে। গতানুগতিক চাষের পদ্ধতি ছেড়ে কৃষকরা যদি এই পদ্ধতিতে চাষ করেন তাহলে লাভের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।
হরষিত সিংহ