মানিকন্ট্রোলের খবর অনুযায়ী, ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত ইপিএফও বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থা। ২০২১ সালে এই সংস্থার মোট পরিচালনাযোগ্য সম্পদ ছিল ১৫.৭ লক্ষ কোটি টাকা। যা ২০১৯-২০ সালের জিডিপির ৭.৭ শতাংশ। ইপিএফও-এর প্রায় ৬.৯ কোটি সদস্য রয়েছে। ৭১ লক্ষ মানুষকে পেনশন দেওয়া হয়। এত বড় সংস্থা হওয়া সত্ত্বেও পিএফ অ্যাকাউন্টধারীরা তাদের সুদের টাকা সময়মতো পান না কেন?
advertisement
গত কয়েক বছর ধরেই ইপিএফও বোর্ড সুদের হার নির্ধারণ করার পরেও অ্যাকাউন্টধারীদের টাকা পেতে দেরি হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষের উদাহরণ নেওয়া যাক। সে বার মার্চ মাসেই পিএফ-এর উপর ৮.৫ শতাংশ হারে সুদ স্থির হয়। কিন্তু সুদের হার ঘোষণা হয় অক্টোবরে। আর সুদের টাকা গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে জমা হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। মার্চ থেকে ডিসেম্বরের ব্যবধান ৯ মাস। অর্থাৎ অনেকটা দেরি হয়। এবছরও ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৮.১০ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে তা অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাওয়ার কথা বলা হয়। অর্থাৎ চার মাস দেরি।
আরও পড়ুন: এলআইসি-র ধনবর্ষা, এই ইনস্যুরেন্স স্কিমে বিনিয়োগ করলেই কিন্তু কেল্লাফতে!
সুদ দিতে দেরি হয় কেন: এর প্রধান কারণ ইপিএফও আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন মানে না। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পরেও এরা কাগজে-কলমেই কাজ করে। দ্বিতীয়ত সুদের হার নির্ধারণের পর ইপিএফও-কে অর্থ মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হয়। কারণ সুদের টাকা দেওয়ার জন্য তাদের নিজস্ব তহবিল নেই। তাই অর্থ মন্ত্রকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা মেটানো হয়। এতেও দেরি হয়।
এতে ক্ষতিটা কোথায়: ধরা যাক একজন ইপিএফও অ্যাকাউন্টধারীকে ২০২২-এর মার্চ মাসে ২০০০ টাকা সুদ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। এবং সেই টাকা জমা পড়ে জুলাই মাসে। তাহলে চার মাস পর গ্রাহক টাকা পেলেন। এই চার মাস তিনি নিজের টাকা ব্যবহার করতে পারলেন না। যদি বছরের পর বছর ধরে একই জিনিস চলতে থাকে তাহলে কর্মীর অবসর গ্রহণের সময় মূল ফান্ডে তার প্রভাব পড়ে। এর পাশাপাশি সরকারেরও ক্ষতি রয়েছে, কারণ নতুন সুদের হার অনুযায়ী অর্থ প্রদানের আগে যদি কোনও কর্মচারী তার পিএফ নিষ্পত্তি করে, তবে সরকারকে পুরানো সুদের হার অনুযায়ী পরিশোধ করতে হবে।
বিকল্প কী: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে সুদের হার পরিশোধে বিলম্ব থেকে রেহাই পেতে ভগ্নাংশ আমানতের পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। অর্থাৎ সুদের হার নির্ধারণের সঙ্গে সঙ্গে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করতে হবে এবং বাকি অর্থ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইপিএফও তার পরিষেবাগুলিতে অনেক পরিবর্তন করেছে, তবে সুদের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে এখনও পুরনো পদ্ধতিই বজায় রেখেছে।