বয়স কম থাকাকালীন:
বয়স কম থাকাকালীন কিংবা তরুণ-তরুণী যাঁদের ভাড়া থেকে আয় রয়েছে, তাঁরা সেই টাকা উচ্চ রিটার্ন প্রদানকারী কোনও কিছুতে বিনিয়োগ করতে পারেন। সে-ক্ষেত্রে সেই রোজগার এসআইপি-র মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। আবার দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ভাড়া থেকে হওয়া আয়ের ছোট একটা ভাগ বিনিয়োগ করা যেতে পারে। আর বিভিন্ন ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ড ক্যাটাগরিতে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে এসআইপি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনতে হবে।
advertisement
আরও পড়ুন: UPI ATM: টাকা খুচরো করা নিয়ে দূর হবে টেনশন! UPI ATM আনতে পারে RBI
এতে নিজের মাসিক আয়ের কিছু অংশও সরাসরি ভাবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা যাবে। কখনও কখনও কিছু জরুরি দরকারের ক্ষেত্রে ভাড়া থেকে হওয়া আয়ের কিছু অংশ লিক্যুইড ফান্ড এসআইপি অথবা রেকারিং ডিপোজিটে বিনিয়োগ করতে হবে। বয়স এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বিনিয়োগের ধরন বদলাতে হবে। তাই পঁয়ত্রিশ বছরে পা দেওয়ার পরে বিনিয়োগের ধরন ধীরে ধীরে বদলাতে হবে। কারণ এই সময় আর্থিক দায়িত্ব, লক্ষ্য এবং লাইফস্টাইলের ক্ষেত্রেও বদল আসে।
মধ্যবয়সীদের জন্য:
সাধারণ ভাবে ৩৫ থেকে ৫০-এর মধ্যে বেশির ভাগ মানুষই বিবাহিত জীবনযাপন করেন। সন্তানসন্ততিও এসে যায়। ফলে একাধিক আর্থিক দায়িত্ব ঘাড়ে এসে পড়ে। যার মধ্যে রয়েছে সন্তানের পড়াশোনা, তাদের বিয়ে, ঋণ পরিশোধ ইত্যাদি। তাই তাঁরা মাঝারি ঝুঁকি পূর্ণ কোনও মাধ্যমেই বিনিয়োগ করতে পারেন। এটা করতে হবে ৩৫ বছরেই। এর পর পঞ্চাশের দিকে যত এগোতে থাকবেন, বিনিয়োগকারীকে কম ঝুঁকিপ্রবণ বিনিয়োগ মাধ্যমের উপর নজর দিতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ভাড়া থেকে হওয়া আয়ের বড় একটা অংশ রাখা যেতে পারে ব্যালেন্সড ফান্ড অথবা ডেট ফান্ডে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের উচিত ছোট ছোট সেভিং স্কিমে বিনিয়োগ করা। এর মধ্যে অন্যতম হল পিপিএফ, পোস্ট অফিস মান্থলি সেভিং স্কিমস।
অবসরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময়:
যত অবসরের দিকে এগোবেন, বিনিয়োগকারীকে ঝুঁকি এড়িয়ে বিনিয়োগকে সুরক্ষিত করতে হবে। ৫০-এর কোঠায় এসে বিনিয়োগকারীকে কম ঝুঁকিপ্রবণ বিনিয়োগ মাধ্যমেই বিনিয়োগ করতে হবে। এর মধ্যে পড়বে পিপিএফ, ব্যাঙ্ক আরডি, ডেট ফান্ডে এসআইপি ইত্যাদি। আর যদি আগে থেকেই লোনের বোঝা থাকে, সে-ক্ষেত্রে তা সময়ের আগেই পরিশোধ করার জন্য ভাড়া থেকে হওয়া আয়কেই কাজে লাগাতে হবে। যাতে অবসর নেওয়ার আগেই লোন পরিশোধ হয়ে যায়।
অবসরপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে:
অবসর গ্রহণের পরে রোজকার খরচের জন্য একটা নিয়মিত আয়ের প্রয়োজন হয়। ফলে এই সময় ভাড়া থেকে হওয়া আয়ই সহায়ক হয়ে ওঠে। আর সমস্ত জরুরি খরচের পর কিছুটা অংশ যদি বেঁচে যায়, তা-হলে তা বিনিয়োগ করা যেতে পারে লিক্যুইড ফান্ড, হাই-ইন্টারেস্ট সেভিংস অ্যাকাউন্ট অথবা ব্যাঙ্ক এফডি-তে। এ-ছাড়া সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম (এসসিএসএস)-এও টাকা বিনিয়োগ করা যায়। কিন্তু বিনিয়োগ করার আগে সতর্ক থাকতে হবে লক-ইনের বিষয়ে।
ভাড়া থেকে হওয়া আয় খুবই উপযোগী হবে, যদি তা একটা কার্যকর ইনভেস্টমেন্ট ইনস্ট্রুমেন্টে রাখা হয়। এতে সম্পদের পরিমাণ বাড়বে এবং দীর্ঘ মেয়াদের জন্য মুদ্রাস্ফীতিও দূর করা যাবে। ব্যাঙ্কবাজার.কম-এর সিইও আদিল শেট্টি জানান, অধিকাংশ মানুষই ভাড়া থেকে আসা আয়কে রোজকার খরচ মেটাতে কাজে লাগায়। অথচ এই উপার্জন যদি সঠিক ভাবে কাজে লাগানো হয়, তা-হলে আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়বে।
আরও পড়ুন: বাড়ি-ফ্ল্যাট-জমি কিনলে মিলবে সুবিধা? বাজেট ঘিরে বাড়ছে প্রত্যাশা
সম্পদ বাড়ানোই যদি বিনিয়োগকারীর লক্ষ্য হয়, তা-হলে তাঁদের উচিত ইক্যুইটি ফান্ডের মতো মাধ্যমেই পুনর্বিনিয়োগ করা। ঋণ পরিশোধ করার জন্য কিংবা জরুরি অবস্থাকালীন ফান্ড তৈরি করার জন্য অথবা ইনস্যুরেন্স কভারেজের জন্যও এই অর্থ রাখা যেতে পারে। বিনিয়োগের পরিকল্পনা করতে হবে, যা আর্থিক লক্ষ্য পূরণ করবে।
আর সব থেকে বড় কথা হল, ভাড়া থেকে হওয়া আয় কিন্তু বছরে বছরে বাড়তে থাকে। আর সেই অনুযায়ী, বিনিযোগকারী নিজের বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়াতে পারবেন। আর নিজের সম্পত্তি যদি সঠিক ভাবে রাখা যায়, তা-হলে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য তা ভাড়া দিয়ে আয় করা যাবে। ভাড়া দেওয়া সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও একটা পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা রেখে দেওয়া উচিত।
দ্বিগুণ উপকার:
মাসিক ভাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে বিনিয়োগ করার জন্য এসআইপি-র পন্থা বেছে নিতে হবে।
অবসর গ্রহণের পরে মাসিক ভাড়া থেকে আয়ের কিছুটা অংশ চলে যাবে রোজকার খরচ মেটাতে।
ভাড়া দেওয়া সম্পত্তি থেকে হওয়া আয়ের কিছু অংশ রাখতে হবে ভাড়া দেওয়া সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।