পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ২ কোটি ভারতীয়। দ্রুত এবং উচ্চ আয়ের আশায় তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ভার্চুয়াল বাজারে। অনুমান করা হয়, ভারতীয়দের প্রায় ৫.৩ বিলিয়ন ক্রিপ্টো সম্পদ রয়েছে, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ। ভারতীয়রা কীভাবে ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করে লাভ করছেন, এখানে দেখে নেওয়া যাক সেটাই।
ক্রিপ্টোতে ভারতীয়দের বিনিয়োগের ধরন: ক্রিপ্টো থেকে আয়ের উপরে কর আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এটা বিনিয়োগকারীদের কাছে আশীর্বাদস্বরূপ। কারণ তাঁরা একপ্রকার নিশ্চিন্ত হয়েছেন যে ক্রিপ্টো ব্যান হচ্ছে না। এই নিয়ে একটা দোলাচল ছিল। সেটা কেটেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: আরও সস্তা হল সোনা, চলতি সপ্তাহে আরও কমতে পারে গোল্ডের দাম, দেখে নিন লেটেস্ট রেট
ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জগুলি এসআইপি-র মাধ্যমে ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগের অনুমতি দেয়। ফলে বিনিয়োগকারীরা মিউচুয়াল ফান্ডের মতো ক্রিপ্টোতেও দৈনিক, সাপ্তাহিক বা প্রতি মাসে অল্প পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে নামী ক্রিপ্টোকারেন্সিতে এসআইপি-তে ১০০ টাকাও বিনিয়োগ করা যায়।
তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ২০২০ এবং ২০২১ সালে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই ক্রিপ্টোতে এককালীন টাকা বিনিয়োগ করেছেন। অন্য দিকে, এসআইপি-র মাধ্যমে ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করলে বাজার অস্থিরতা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাওয়া যায়। যার ফলে ঝুঁকি কমে। শুধু তাই নয়, এসআইপি-র মাধ্যমে বিনিয়োগ করলে আবেগের মাথায় বেশি টাকা বিনিয়োগের ঝুঁকি থেকেও বাঁচা যায়।
আরও পড়ুন: পোস্ট অফিসের ধামাকা যোজনা! মাত্র ₹৯৫ বিনিয়োগ করেই পান ১৪ লক্ষ টাকা
ইদানীং দ্রুত লাভের আশায় অনেক তরুণই হাত খরচের টাকা ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করছেন। এসআইপি-তে তাঁদের বড় সুবিধা। ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি অত্যন্ত অস্থির এবং এখনও সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রিত নয়। তাই ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে সম্পর্কিত অন্তর্নিহিত প্রযুক্তিটি সম্পূর্ণরূপে বোঝার পাশাপাশি ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করার জন্য কোনও ঋণ না নেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এককালীন এবং এসআইপি বিনিয়োগে কর ব্যবস্থাপনা: ১ ফেব্রুয়ারি বাজেটে ক্রিপ্টো থেকে আয়ের উপর ৩০ শতাংশ কর নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman)। এর সঙ্গে সেস এবং সারচার্জও দিতে হবে। ১ এপ্রিল থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। তবে এসআইপি-র মাধ্যমে কেনা ক্রিপ্টোর জন্য কীভাবে খরচ নির্ধারণ করা হবে তা বাজেটে স্পষ্ট নয়। তাছাড়া, কোন ভিডিএ প্রথম বিক্রি হয়েছিল তা নির্ধারণ করতে ফার্স্ট ইন, ফার্স্ট আউট বা লাস্ট ইন, ফার্স্ট আউট অ্যাকাউন্টিং পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত কিনা তাও উল্লেখ করা হয়নি।
বাজেটে আরও বলা হয়েছে উল্লিখিত আয় গণনা করার সময় কোনও ব্যয় (অধিগ্রহণের খরচ ব্যতীত) বা ভাতা সংক্রান্ত কোনও ছাড় পাওয়া যাবে না। যদি ভার্চুয়াল বিনিয়োগ থেকে বিনিয়োগকারী ক্ষতির সম্মুখীন হন, তা হলে তা অন্য কোনও আয়ের থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
এসআইপি-র মাধ্যমেই মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী। অ্যাসোসিয়েশন অফ মিউচুয়াল ফান্ডস ইন ইন্ডিয়ার তথ্য অনুসারে, মিউচুয়াল ফান্ডে ২০২২-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫.১৭ কোটি এসআইপি অ্যাকাউন্ট ছিল। এই সময়ে এসআইপিতে ১.১ লক্ষ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। তাই এটা স্পষ্ট বিনিয়োগকারীরা এসআইপি-র মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন। তবে ভারতে প্রচুর মানুষ ক্রিপ্টোতে এককালীন বিনিয়োগও করেন।