ক্রেডিট কার্ডে বিল পরিশোধ: কেন এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিল পরিশোধ করা এখন সুবিধাজনক। এর বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে:
সুবিধা এবং গতি: ঘরে বসেই মাত্র কয়েকটি ক্লিকে বিল পরিশোধ করা যেতে পারে।
রিওয়ার্ড পয়েন্ট এবং ক্যাশব্যাক: অনেক কার্ড বিল পরিশোধে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক অফার করে, যা সঞ্চয় বাড়ায়।
advertisement
ক্রেডিট স্কোর উন্নত করা: সময়মতো বিল পরিশোধ করলে ক্রেডিট স্কোর উন্নত হয়।
নমনীয়তা: জরুরি পরিস্থিতিতে বা যখন কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কম টাকা থাকে, তখন একটি ক্রেডিট কার্ড লাইফলাইন হিসেবে কাজ করে।
আরও পড়ুন: ৫ বছরের মেয়াদে FD পোস্ট অফিসে করা ভাল না ব্যাঙ্কে? কোথায় বেশি রিটার্ন দেখে নিন
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিল পরিশোধ করা কি নিরাপদ
হ্যাঁ, ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিল পরিশোধ করা সাধারণত নিরাপদ, যদি কেউ কিছু মৌলিক বিষয় মনে রাখে। ব্যাঙ্ক এবং পেমেন্ট গেটওয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে, তবে নিজেদের পক্ষ থেকে সতর্কতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. সর্বদা একটি বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে হবে
নিয়ম: পরিষেবা প্রদানকারী (যেমন ইউটিলিটি কোম্পানির ওয়েবসাইট বা অ্যাপ), একটি বিশ্বস্ত ব্যাঙ্কের পোর্টাল অথবা প্রতিষ্ঠিত পেমেন্ট অ্যাপের (যেমন গুগল পে, ফোনপে, পেটিএম, অ্যামাজন পে) মাধ্যমে সরাসরি নিজেদের বিল পরিশোধ করতে হবে।
বিঃদ্রঃ: অজানা লিঙ্ক বা ই-মেলের মাধ্যমে কখনও অর্থ প্রদান করা যাবে না, কারণ স্ক্যামাররা প্রায়শই আসলের মতো দেখতে ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে। সর্বদা URL (ওয়েবসাইট ঠিকানা) পরীক্ষা করে দেখতে হবে, যাতে এটি https:// দিয়ে শুরু হয় এবং একটি প্যাডলক থাকে।
২. OTP এবং ৩D সিকিউর ভেরিফিকেশন
নিয়ম: প্রতিটি অনলাইন ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের জন্য নিজেদের রেজিস্টার মোবাইল নম্বরে একটি এককালীন পাসওয়ার্ড (OTP) পাওয়া যাবে। ৩D সিকিউর অথবা Visa/Mastercard SecureCode দ্বারা যাচাই-এর মতো পরিষেবাগুলি পাসওয়ার্ড প্রবেশ করানোর মাধ্যমে অতিরিক্ত সুরক্ষা প্রদান করে।
বিঃদ্রঃ: OTP বা ৩D সিকিউর পাসওয়ার্ড কখনও কারও সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না, এমনকি যদি তারা নিজেকে ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা বলে দাবি করে। এটি আর্থিক তথ্যের সুরক্ষার শেষ কথা।
৩. ক্রেডিট কার্ডের তথ্য গোপন রাখতে হবে:
নিয়ম: ক্রেডিট কার্ড নম্বর, CVV (কার্ডের পিছনের তিনটি সংখ্যা) এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ কোনও পাবলিক স্থানে বা কোনও অনিরাপদ কম্পিউটারে এন্টার করা যাবে না।
বিঃদ্রঃ: কার্ডের CVV নম্বর মুখস্থ করা এবং কার্ড থেকে মুছে ফেলাও নিরাপত্তা কিছুটা বৃদ্ধি করে, বিশেষ করে যদি কারও কার্ড কখনও চুরি হয়ে যায়।
৪. লেনদেন সতর্কতা এবং বিবৃতি পরীক্ষা
নিয়ম: ব্যাঙ্ক থেকে SMS এবং ই-মেল লেনদেন সতর্কতার জন্য রেজিস্টার করতে হবে। এটি প্রতিটি ব্যয় সম্পর্কে অবিলম্বে সতর্ক করবে এবং নিয়মিত মাসিক ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট পরীক্ষা করবে।
বিঃদ্রঃ: যদি কেউ এমন কোনও লেনদেন লক্ষ্য করে যা নিজে করেননি, তাহলে অবিলম্বে ব্যাঙ্ককে অবহিত করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি কেউ রিপোর্ট করবেন, জালিয়াতি এড়ানোর সম্ভাবনা তত বেশি।
৫. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করা এড়িয়ে চলতে হবে
নিয়ম: ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিল পরিশোধ করার সময় পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা এড়িয়ে চলতে হবে (যেমন ক্যাফে বা বিমানবন্দরে)। এই নেটওয়ার্কগুলি বেশিরভাগ সময়েই অনিরাপদ।
বিঃদ্রঃ: নিজেদের বাড়ির সুরক্ষিত এবং পাসওয়ার্ড-সুরক্ষিত ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে হবে অথবা নিজেদের মোবাইল ডেটা ব্যবহার করতে হবে, যা পাবলিক ওয়াই-ফাইয়ের চেয়ে বেশি নিরাপদ।
৬. অটো-পে বৈশিষ্ট্যটি বুদ্ধিমানের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে:
নিয়ম: অনেক পরিষেবা প্রদানকারী একটি অটো-পে বৈশিষ্ট্য অফার করে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্রেডিট কার্ড থেকে বিল কেটে নেয়। যদিও এটি সুবিধাজনক, তবে নিশ্চিত করতে হবে যে পর্যায়ক্রমে নিজেদের বিলের পরিমাণ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বিঃদ্রঃ: কেবলমাত্র সেই বিলগুলির জন্য অটো-পে সেট আপ করতে হবে যার পরিমাণ খুব বেশি পরিবর্তন হয় না, যেমন সাবস্ক্রিপশন। বিদ্যুৎ বা জলের মতো বিলের জন্য, যার পরিমাণ প্রতি মাসে পরিবর্তিত হতে পারে, ম্যানুয়ালি চেক করে অর্থ প্রদান করা নিরাপদ।
কিছু ভুল হলে কী করণীয়
নিজের ক্রেডিট কার্ডে জালিয়াতি হয়েছে বলে সন্দেহ হলে:
তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাঙ্ককে অবহিত করতে হবে: বিলম্ব না করে ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাঙ্ককে অবহিত করতে হবে।
কার্ডটি ব্লক করতে হবে: আরও জালিয়াতি রোধ করতে ব্যাঙ্ক অবিলম্বে সেই কার্ড ব্লক করবে।
এফআইআর দায়ের করতে হবে: কিছু ক্ষেত্রে, ব্যাঙ্ক এফআইআর (প্রথম তথ্য প্রতিবেদন) দায়ের করারও সুপারিশ করতে পারে।
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিল পরিশোধ করা একটি নিরাপদ এবং সুবিধাজনক পদ্ধতি, একমাত্র যদি কেউ সতর্ক থাকে এবং উপরে বর্ণিত নিরাপত্তা বিধিগুলি অনুসরণ করে। এটি রিওয়ার্ড অর্জন করতে, ক্রেডিট স্কোর উন্নত করতে এবং আর্থিক চাহিদা সহজেই পূরণ করতে সহায়তা করে। কেবল নিজের তথ্য নিরাপদ রাখতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে এবং বিজ্ঞতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।
