TRENDING:

স্বাস্থ্য বিমা নিচ্ছেন? পলিসি কেনার আগে সবকটা শর্ত খতিয়ে দেখা কেন জরুরি জানেন কি?

Last Updated:

স্বাস্থ্য বিমায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট আছে কি না, কেনার আগে তা খতিয়ে দেখা উচিত। কোন বৈশিষ্ট? দেখে নেওয়া যাক সেগুলোই।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: শরীর থাকলে, শরীর খারাপও হবে। আর বড়সড় কিছু হলে কয়েক লক্ষ টাকার ধাক্কা। ওষুধপত্র তো আছেই, লম্বা বিল ধরাবে হাসপাতালও। তখন জমানো টাকায় হাত পড়বে। মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যাবে সঞ্চয়। এই পরিস্থিতি থেকে একমাত্র বাঁচাতে পারে স্বাস্থ্য বিমা।
advertisement

করোনা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য বিমার চাহিদা বেড়েছে। তবে এখনও অনেকেই শুধুমাত্র ট্যাক্স বাঁচানোর জন্যই বিমা পলিসি কেনেন। ফলে পলিসির বিভিন্ন বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানার আগ্রহ অতটা থাকে না। সোজা কথায়, দায়সারা ভাব কাজ করে। কিন্তু নিজের এবং পরিবারের জন্য উপযুক্ত স্বাস্থ্য বিমা পলিসি করানো একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তাই এর নীতি এবং সুবিধাগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, স্বাস্থ্য বিমায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট আছে কি না, কেনার আগে তা খতিয়ে দেখা উচিত। কোন বৈশিষ্ট? দেখে নেওয়া যাক সেগুলোই।

advertisement

আরও পড়ুন: আজকের দিনে LIC করা মানে কি ঠকে যাওয়া? দেখে নিন অন্যান্য বিনিয়োগ বিকল্পগুলো কোথায় এগিয়ে!

ডিডাক্টিবল: স্বাস্থ্য বিমায় ডিডাক্টিবল হল, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তির পর যে পরিমাণ অর্থ বিমাকারীকে নিজের পকেট থেকে দিতে হবে। অন্য ভাবে বললে, ধরা যাক চিকিৎসা খরচ বা দাবির পরিমাণ ২ লাখ টাকা। এবং স্বাস্থ্য বিমা প্ল্যানে ডিডাক্টিবল অ্যামাউন্ট ৫০ হাজার টাকা। এই ক্ষেত্রে দাবির পরিমাণ পেতে প্রথমে হাসপাতালে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। তারপর পলিসিধারক বিমাকারীর কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা পাবেন কিংবা বিমা কোম্পানি বিল পরিশোধের জন্য সরাসরি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। ইউনিভার্সাল সোম্পো জেনারেলের হেড হেলথ বিকাশ মাথুর বলছেন, ‘ডিডাক্টিবল যত বেশি হবে প্রিমিয়াম হবে তত কম। এটা এড়াতে চাইলে অপ্ট আউট করা যায়। কিংবা ডিডাক্টিবল ছাড়া কোনও প্ল্যান বা কম ডিডাক্টিবল বিমা পলিসি বেছে নেওয়া যায়’।

advertisement

কো-পে: কো-পে বা কো পেমেন্ট হল বিমা দাবির সেই অংশ যা পলিসিধারককে নিজেকেই শোধ করতে হয়। এটা বিভিন্ন বিমা পলিসিতে বিভিন্ন রকম। সাধারণত এটা ১০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। ধরা যাক কোনও ব্যক্তি যে বিমা পলিসি নিয়েছেন তার কো পেমেন্ট হল ৩০ শতাংশ। এখন তিনি যদি ১ লাখ টাকা দাবি করেন তাহলে বিমা কোম্পানি তাঁকে ৭০ হাজার টাকা দেবে। বাকি ৩০ হাজার টাকা পলিসিধারককে নিজের পকেট থেকে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, পলিসি হোল্ডার যতবার বিমার টাকা দাবি করবেন ততবারই তাঁকে কো পেমেন্ট দিতে হবে। পলিসি করার সময়ই বিমা কোম্পানি এবং পলিসি ধারকের মধ্যে কো পেমেন্ট নিয়ে চুক্তি হয়। যার মধ্যে পলিসিধারী তাঁর চিকিৎসা বিলের একটা নির্দিষ্ট শতাংশ নিজেই পরিশোধ করে এবং বাকিটা বিমা কোম্পানি বহন করে। গ্রাহকরা যদি কো পেমেন্টের ঝামেলায় যেতে না চান তাহলে অন্য রকম বিমা পলিসি দেখতে পারেন। এছাড়াও কো-পে সহ বিমা পলিসি বেছে নেওয়ার আগে গ্রাহককে তাঁর স্বাস্থ্য এবং ফিটনেসের অবস্থা দেখে নিতে হবে।

advertisement

রিস্টোর বেনিফিট: স্বাস্থ্য বিমা করা থাকলে হাসপাতালের বিল মেটাবে বিমা কোম্পানি। কিন্তু একই পলিসি বছরে দ্বিতীয়বার ভর্তি হলে? পলিসিতে রিস্টোর বেনিফিটের সুবিধা থাকলে সেই টাকাও বিমা কোম্পানিই মেটাবে। রিস্টোর বেনিফিট থাকলে বিমাকৃত অর্থের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেই পরিমাণ পুনরায় পুনরুদ্ধার করা হয়। এর মানে যদি কোনও ব্যক্তি প্রথমবার হাসাপাতালে ভর্তির সময় বিমার পুরো টাকাই ব্যবহার করেন তাহলে বিমা কোম্পানি সেই পরিমাণ অর্থ পুনরায় রিচার্জ করে। অর্থাৎ তিনি যদি দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হন, তাহলেও তিনি পুরো বিমা কভারেজ পাবেন।

advertisement

আরও পড়ুন: এখন সোনা কিনবেন না আরও একটু অপেক্ষা করে যাবেন? দেখে নিন

হাসপাতালে ভর্তির আগে এবং পরের খরচ: বেশিরভাগ মানুষই জানেন না অনেক বিমা পলিসিতে হাসপাতালে ভর্তির আগের এবং পরের খরচও কভার করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির আগের খরচ অর্থাৎ ডাক্তার দেখানো, ডায়গনস্টিক খরচ, ওষুধ ইত্যদি বিমা পলিসিতে পাওয়া যায়। হাসপাতালে ভর্তির আগেই বিমা কোম্পানি সেই টাকা মিটিয়ে দেয়। হাসপাতালে ভর্তির পরের খরচ হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর মেটানো হয়। পুরোটাই পলিসিতে কভার করা থাকে। তবে হাসপাতালে ভর্তির কতদিন আগে এবং পরের খরচ মেটানো হবে সেটা বিমা কোম্পানি অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।

ওয়েটিং পিরিয়ড: স্বাস্থ্য বিমা করানোর সময় বিমা কোম্পানিগুলো কিছু শর্ত দেয়। এর মধ্যে অন্যতম ওয়েটিং পিরিয়ড। অর্থাৎ পলিসি করানোর পর একটা সময় পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা মিলবে না। আসলে স্বাস্থ্য বিমা করানোর অর্থ এই নয় যে পলিসি কেনার প্রথম দিন থেকেই বিমা কোম্পানি কভার দিতে শুরু করবে। বরং দাবি আদায়ের জন্য কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। পলিসি কেনার পর একটা সময় পর্যন্ত বিমার কভার মেলে না। এই সময়কালকেই ওয়েটিং পিরিয়ড বলা হয়। এটা ১৫ দিন থেকে শুরু করে ৪ বছর পর্যন্ত হতে পারে। তাই এমন কোম্পানির থেকে পলিসি কেনা উচিত যার ওয়েটিং পিরিয়ড কম। পলিসিধারীর আগে থেকেই কোনও রোগ থাকলে স্বাস্থ্য বিমায় তার কভার পাওয়া যায়। কিন্তু তার জন্য ৪৮ মাস অপেক্ষা করতে হয়। কোনও কোনও বিমা কোম্পানি আবার ৩৬ মাস পরে কভার দিতে শুরু করে। তবে পলিসি কেনার সময়ই এই রোগগুলোর কথা জানাতে হবে। এই সময়ের আগে পলিসিধারী যদি এই রোগগুলোর কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তাহলে বিমা কোম্পানি তার খরচ বহন করবে না।

রুম চার্জেস রেস্ট্রিকশন: ধরা যাক কারও ৩ লাখ টাকার স্বাস্থ্য বিমা আছে। সেখানে রুম ভার্জেস রেস্ট্রিকশন বিমাকৃত রাশির ১ শতাংশ। অর্থাৎ তিনি ৩ হাজার টাকায় হাসাপাতলের রুম বা কেবিন ভাড়া করতে পারেন। কারণ পলিসি থেকে এই পরিমাণ ভাড়াই দেওয়া হবে। এখন কেউ হাসপাতালে ৫ দিন থাকলেন। কিন্তু কোনও সস্তা রুম পেলেন না। যেটা পেলেন তার ভাড়া ৫ হাজার টাকা। মাথায় রাখতে হবে বিমা পলিসি কিন্তু ৩ লাখ টাকার। এখন মোট বিল এল ২ লাখ টাকা। অনেকে ভাবতে পারেন, ৩ লাখ টাকার বিমা পলিসিতে ২ লাখ টাকার বিল এসেছে। তাহলে নিশ্চয় পুরো টাকাই পাওয়া যাবে। এমনটা কিন্তু হবে না। কারণ রুম ভাড়া বেশি নেওয়া হয়েছে। এখানে বিমা কোম্পানি ২ লাখ টাকা * (৩০০০/৫০০০)= ১.২ লক্ষ টাকা দেবে বিমা কোম্পানি। বাকি ৮০ হাজার টাকা পলিসিধারককে মেটাতে হবে।

অ্যাটেন্ডেন্ট অ্যালাওয়েন্স: আজকাল অনেক স্বাস্থ্য বিমা পলিসিতে অ্যাটেন্ডেন্ট অ্যালাওয়েন্স হিসেবে ইনবিল্ট কভারেজ দেওয়া হয়। সাধারণত হাসপাতালে থাকার সময় ১২ বছর বয়সী শিশুরা এটা পায়। কতদিন এই ভাতা দেওয়া হবে এবং কত দেওয়া হবে তা আগেই ঠিক করা থাকে। অনেকেই এই বিষয়টা জানেন না। তাই হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর বিমা কোম্পানির কাছ থেকে এটাও দাবি করতে হয়। এতে অনেকটা সুরাহা হয়।

গ্রাহকরা কোন বিমা পলিসি কিনছেন তার উপর নির্ভর করে পলিসির সুবিধাগুলি পরিবর্তিত হতে পারে। উপরে উল্লিখিত সুবিধাগুলি সেই সব পলিসিতে থাকতে পারে, আবার নাও থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা তাই, গ্রাহকদের পলিসি সম্পর্কিত সমস্ত ডকুমেন্ট চেক করে নেওয়ার পরামর্শ দেন যাতে সমস্ত বৈশিষ্ট এবং সুবিধা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত থাকা যায়। নেটওয়ার্ক হাসপাতালের তালিকাও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে নিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যে পলিসি ক্যাশলেস পেমেন্ট এবং রিইম্বারসমেন্ট উভয়ই কভার করে।

স্বাস্থ্য বিমা নেওয়ার সময় সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয়, কোন কোম্পানির পলিসি লাভজনক হবে সেটা ঠিক করা। এটাও প্রয়োজন এবং গুরুত্ব অনুযায়ী বাছতে হবে। নিজের বা পুরো পরিবারকে কভার করবে এমন পলিসি বেছে নেওয়া যায়। পলিসিধারক অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের খরচও বিমা কোম্পানি দেয়। অনেক বিমা কোম্পানি স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচও মেটায়। মাথায় রাখতে হবে, স্বাস্থ্য বিমার অধীনে প্রদত্ত প্রিমিয়াম আয়কর আইনের ৮০ডি ধারার আওতায় করছাড় যোগ্য।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুরীর রথ এবার রঘুনাথপুরে, থিমে মন কাড়ছে আপার বেনিয়াসোলের দুর্গাপুজো মণ্ডপ
আরও দেখুন

বয়সের প্রমাণ, পরিচয়ের প্রমাণ, ঠিকানা প্রমাণ এবং পাসপোর্ট সাইজ ছবি স্বাস্থ্য বিমা নেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় নথিগুলির মধ্যে প্রয়োজনীয়। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিমা নিতে পারেন। এছাড়াও, প্রবীণ নাগরিকদের জন্য, অস্ত্রোপচার এবং অন্যান্য গুরুতর রোগের জন্য আলাদা বিমা বেছে নেওয়া যায়।

বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
স্বাস্থ্য বিমা নিচ্ছেন? পলিসি কেনার আগে সবকটা শর্ত খতিয়ে দেখা কেন জরুরি জানেন কি?
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল