আরও পড়ুন: এক নজরে দেখে নিন দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথারিটির (DDA) তৈরি ফ্ল্যাটের দামের তালিকা
মনে রাখতে হবে যে, রেরা শুধুমাত্র আবাসন নির্মাতা বা নির্মাণ কোম্পানির ক্ষেত্রেই লাগু হচ্ছে, এমনটা কিন্তু একেবারেই নয়। প্রোমোটার, এজেন্টদের মতো আবাসন শিল্পের মধ্যস্থতাকারীদের জন্যও এই আইন সমান ভাবে প্রযোজ্য হয়। আর সমস্ত আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং কমিউনিটি প্রোজেক্টকেই রেরা-র আওতায় রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।
advertisement
কোনও আবাসন প্রকল্পের আয়তন ৫০০ বর্গমিটারের বেশি এবং আবাসন ইউনিটের সংখ্যা ৮-এর অধিক হলেই তা রেরা আইনের আওতায় আসবে। সেই প্রকল্প শুরু করার আগে এবং প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দেওয়ার আগে প্রোমোটার বা নির্মাতাকে রেরা আইনে রেজিস্টার করতে হবে।
আরও পড়ুন: আরইআরএ বা রেরা আইনের সুবিধাগুলি কী কী?
এক জন আবেদনকারী শুধুমাত্র একটি ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর’ দিয়েই আবেদন করতে পারবেন। আর সেই নম্বরটি দেওয়া হবে রেজিস্ট্রেশন করার সময়।
দেখে নেওয়া যাক, রেরা-তে রেজিস্ট্রেশন করাতে কী কী নথিপত্র হাতের কাছে রাখতে হবে। নির্মাণ সংস্থার ক্ষেত্রে যা যা লাগবে --
- কী প্রকল্প হচ্ছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ।
- প্রতিষ্ঠানের ইনকর্পোরেশন সার্টিফিকেট।
- রেজিস্টার্ড প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা।
- কোম্পানির ই-মেল।
- প্যান কার্ড (PAN Card)।
- ট্যান কার্ড (TAN Card), ট্যানের অর্থ-- ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যান্ড কালেকশন অ্যাকাউন্ট নম্বর (Tax Deduction and Collection Account Number)।
- সিআইএন বা কোম্পানি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর।
- আগের রিয়েল এস্টেট অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তথ্য।
- কোম্পানির ডিরেক্টর এবং শেয়ারহোল্ডারদের তথ্য।
- বর্তমানে কোনও রিয়েল এস্টেট প্রোজেক্ট চালু থাকলে তার সম্পর্কে তথ্য।
স্বতন্ত্র প্রমোটারের ক্ষেত্রে যা লাগবে:
- নাম।
- প্যান কার্ড (PAN Card)।
- পিতার নাম।
- জীবিকা।
- ঠিকানার প্রমাণপত্র।
- আয়করের বিবরণ।
- বার্ষিক লেনদেন সংক্রান্ত অডিটের তথ্য।
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।
- আয়কর রিটার্ন।
- পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতা।
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
- ই-মেল
এজেন্টের ক্ষেত্রে যে সব তথ্য এবং নথিপত্র লাগবে:
- রাজ্য।
- জেলা।
- তহশিলের বিবরণ।
- ব্যাঙ্কের ডিটেলস।
- ডিজিটাল স্বাক্ষর সার্টিফিকেট।
- রেজিস্ট্রেশন ফি।
- রেজিস্ট্রেশনের তারিখ।
- পেমেন্টের তারিখ।
- নাম।
- প্যান কার্ড।
- বাবার নাম।
- জীবিকা।
- ঠিকানার প্রমাণপত্র।
- আয়করের বিবরণ।
- বার্ষিক লেনদেন সংক্রান্ত অডিটের তথ্য।
কী ভাবে রেরা-র আওতায় কোনও প্রকল্পের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে?
- রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রথমেই আবেদনকারীকে রেরা-র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
- এ বার ই-মেল এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এ সময় অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্যও লাগবে।
- অ্যাকাউন্ট তৈরির পর ‘ফর্ম এ’ পূরণ করে জমা দিতে হবে। এটিই রেজিস্ট্রেশনের জন্য মূল আবেদনপত্র। এর সঙ্গে ‘ফর্ম বি’-ও পূরণ করে জমা দিতে হবে। রেরা আইনের ৪ নম্বর ধারায় এটা প্রোমোটারের ঘোষণাপত্র। এর সঙ্গে লাগবে ‘ফর্ম জি’। এটা প্রকল্পের বরাদ্দ বা বিক্রয় সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া। এটিও পূরণ করে জমা দিতে হবে।
- ‘ফর্ম জি’-তে দেওয়া তথ্যগুলি যে রেরা নির্ধারিত নিয়ম লঙ্ঘন করছে না, তা জানিয়ে একটি হলফনামা জমা দিতে হবে।
- রেরা আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কোনও ক্রেতার কাছ থেকে বুকিংয়ের টাকা নেওয়া হয়নি জানিয়ে আরও একটি হলফনামা জমা দিতে হবে।
- এ বার জমির রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যে এই ফি-র অঙ্ক বিভিন্ন। আবাসিক আবাসন এবং বাণিজ্যিক আবাসনের জন্যও ফি-র অঙ্কে হেরফের ঘটতে পারে।
- এ বার ‘ফর্ম সি’ পূরণ করে জমা দিতে হবে। এই ফর্মের উপর ভিত্তি করেই প্রোমোটারকে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: পোস্ট অফিসের এই স্কিমে ডবল হবে টাকা, মিলবে আরও একাধিক সুবিধা
রেজিস্ট্রেশন পেতে এজেন্টদের যা করতে হবে:
- আবেদনপত্র পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র এবং ফি-সহ রেরা-র দফতরে জমা দিতে হবে।
- এর পর একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হবে। প্রতিটি সম্পত্তি বিক্রিয়ের সময় এই নম্বরটি উল্লেখ করতে হবে।
- প্রতি তিন মাস অন্তর লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড, নথিপত্র, অ্যাকাউন্ট আপ-টু-ডেট রাখতে হবে।
- প্রকল্প সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এবং নথি ক্রেতাকে দেখাতে হবে।
- রেজিস্ট্রেশন চলাকালীন কোনও ভুল তথ্য দিলে বা জালিয়াতি করলে এজেন্টকে বরখাস্ত করবে রেরা।
অনলাইনে বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে না-করে সশরীরে রেরা-র দফতরে গিয়েও রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করতে পারেন প্রোমোটাররা। অথবা সমস্ত নথিপত্র স্পিড পোস্টের মাধ্যমে রেরা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো যায়। অবশ্য সে ক্ষেত্রেও এই একই কাগজপত্র লাগবে।