ভারতে 5G পরিষেবা চালুর ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বাধা ছিল এয়ারওয়েজ অর্জন করা। সে বাধা কাটিয়ে এখন সংস্থাগুলি বিনিয়োগ, পরিকাঠামো, উপকরণ এবং বৈশ্বিক মানের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের দিকে নজর দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের সুদের হারে বদল! বাড়ল না কমল দেখে নিন এখনই!
ভারতে 5G-এর বর্তমান অবস্থা—
স্পেকট্রাম বণ্টনের আগেই ভারতের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। গত বছর এয়ারটেল (Airtel) এবং নোকিয়ার (Nokia) অংশীদারিত্বে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। কলকাতায় লো ফ্রিকোয়েন্সি ৭০০ MHz ব্যান্ডে 5G পরীক্ষা করে ফেলেছে তারা। হায়দরাবাদেও পরীক্ষা করা হয়েছিল।
advertisement
চলতি বছর মে মাসে, ভোডাফোন (Vodafone) ৬ জিবিপিএস গতি অর্জনের জন্য পুণেতে উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি এমএম ওয়েভ ব্যান্ড পরীক্ষা করেছে। পাশাপাশি জিও (Jio) তার নিজস্ব ডিভাইস ব্যবহার করে ৪২০ এমবিপিএস ডাউনলোড গতি এবং ৪১২ এমবিপিএস আপলোড গতি অর্জন করেছে।
পরিকাঠামো এবং বিনিয়োগ—
টেলিকম সংস্থাগুলি প্রাথমিক ভাবে কিছু শহরে 5G পরিষেবা চালু করতে চায়। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে যে পরিকাঠামো রয়েছে তাতে পরিষেবা শুরু করা সম্ভব। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে অন্তত ৭০ শতাংশ টেলিকম টাওয়ারকে ফাইবারাইজড করতে হবে। এখন তা ৩৩ শতাংশের কিছু বেশি রয়েছে।
2G এবং 3G ওয়্যারলেস প্রযুক্তির তুলনায় ভারতে অনেক বেশি ফাইবারাইজেশন (Fiberization) প্রয়োজন 5G-এর জন্য। UBS-এর অনুমান অনুসারে, টেলিকম অপারেটর Airtel, Jio এবং Vodafone Idea (Vi)-এর সাইট ফুটপ্রিন্ট এবং ফাইবার ব্যাকহল বাড়ানোর জন্য অন্তত ৩০.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে৷ পাশাপাশি রেডিও অ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক, ট্রান্সমিশন এবং কোর নেটওয়ার্কের জন্যও উচ্চ মানের বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে৷
আরও পড়ুন: মাত্র ৭৫,০০০ টাকা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসতে পারবেন নতুন গাড়ি
প্রস্তুতি—
টেলিকম সংস্থাগুলিকে 5G এর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। সে জন্য অপটিক্যাল ফাইবার এবং অন্য সেমি-কন্ডাক্টর-ভিত্তিক সরঞ্জাম-সহ নেটওয়ার্কিং সরঞ্জাম প্রয়োজন। এই ধরনের যন্ত্রপাতি ভারতে তৈরি হয়। কিন্তু বাজারে রয়েছে চিন, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সস্তা সরঞ্জাম। ভারত নিজে এ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন আনলে অনেক বেশি লাভ হতে পারে আগামী ২০ বছরে।
প্রযুক্তিগত বাধা রয়েছে—
পরিকাঠামো ছাড়াও, আরও কিছু সমস্যা রয়েছে। দেশীয় 5Gi মান এবং বিশ্বব্যাপী 3GPP মানগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। 5Gi তৈরি করা হয়েছে IIT মাদ্রাজ, IIT হায়দ্রাবাদ, TSDSI এবং সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ইন ওয়্যারলেস টেকনোলজি (CEWiT)-এর সহযোগিতায়। ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে পরিষেবা উন্নত করার জন্য এটি 5G এর তুলনায় উন্নত প্রযুক্তি। বলা যায় এটি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি 5G মানক। এ দিকে বিশ্বব্যাপী 5G-এর জন্য 3GPP-এর বৈশ্বিক মান নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২১ সালে অবশ্য ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (ITU) একটি সূত্রের অধীনে 5G-এর মানগুলির সঙ্গে 5Gi-কে একীভূত করার অনুমোদন দিয়েছে।
তবে স্পেকট্রাম বণ্টনের পরে সকলেই আশাবাদী। একটি সফল 5G রোল আউটের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি রাখা দরকার।