এই পরিস্থিতিতে সোনাই সবচেয়ে নিরাপদ। এমনটাই মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রাচীনকাল থেকেই হলুদ ধাতু অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের সময় “সেফ হ্যাভেন” বা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিবেচিত। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। বাজারে সোনার চাহিদা বাড়ছে লাফিয়ে, সেইসঙ্গে বাড়ছে বিনিয়োগের হারও। যদিও এখনও পর্যন্ত ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে সোনার দামে বড়সড় কোনও পরিবর্তন হয়নি, তবে আশু ভবিষ্যতে তার সম্ভাবনা প্রবল।
advertisement
সম্প্রতি একটি ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, “অনেক দেশই মার্কিন ট্যারিফ এড়াতে নিজেদের ট্যারিফ কমাতে পারে। বহু বছর ধরেই আমেরিকান পণ্যের উপর তারা অতিরিক্ত ট্যারিফ বসিয়ে আসছে। শুনেছি ভারতও ট্যারিফ কমানোর পরিকল্পনা করছে।” এই মন্তব্যে বাজারে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। লগ্নিকারীরা বুঝতে পারছেন, সামনে হয়তো বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হবে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে পণ্য ও শেয়ারের দামে।
বিশ্ববাজারে যখনই অর্থনৈতিক টানাপোড়েন দেখা দেয়, তখনই সোনা হয়ে ওঠে বিনিয়োগকারীদের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বিকল্প। এই পরিস্থিতিও তার ব্যতিক্রম নয়। এমনকী ট্যারিফ ঘোষণার আগে থেকেই সোনার দাম বাড়তে শুরু করেছিল। বর্তমানে ২৪ ক্যারেটের ১০ গ্রাম সোনার দাম ৯০ হাজার টাকা ছুঁয়েছে। যা সর্বকালের সর্বোচ্চ।
MCX-এর তথ্য অনুযায়ী, ৩ এপ্রিল সকাল ১১:০৬ মিনিট পর্যন্ত সোনার দাম ০.১৯ শতাংশ বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও ছবিটা একই। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম পৌঁছেছে ৩,১১৭.৬৯ ডলার প্রতি আউন্স (EDT)। ডলারের হিসেবে ৩,১৪৮.৮৮ ডলার প্রতি আউন্স-এ পৌঁছে সোনা রেকর্ড উচ্চতা ছুঁয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, “বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে, আগামীদিনে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে।” অনেকে মনে করছেন, আগামী মাসগুলিতে সোনার দাম আরও ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এমনকি ২০২৬ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকের মধ্যেই দাম ৩,৬০০ ডলারে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সুতরাং যাঁরা নিরাপদ ও স্থিতিশীল বিনিয়োগের কথা ভাবছেন, তাঁদের কাছে এই মুহূর্তে সোনা হতে পারে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত বিনিয়োগ বিকল্প। কারণ ট্রাম্পের ট্যারিফ যুদ্ধ, চিনের পাল্টা পদক্ষেপ, আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা এবং বিনিয়োগকারীদের মানসিকতা সব মিলিয়ে সোনার দাম আগামীদিনে আরও বাড়তে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে।