কেউ করতে চায় নিজের একটা দোকান। কোন মহিলা করতে চান নিজের একটি সেলুন। কোন কাঠের মিস্ত্রি এসেছেন নিজের ব্যবসা শুরু করতে। প্রত্যেকের চোখেই রয়েছে ভবিষ্যতে বড় হওয়ার স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই তারা প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা প্রকল্পের নাম নথিভুক্ত করতে তৎপর।
জানা যায় এই প্রকল্পের অধীনে পড়বেন ছুতোর, কামার, হাতুড়ি ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক, তালা প্রস্তুত কারক, স্বর্ণকার, কুমোর, ভাস্কর, পাথর খোদাইকারি, পাথর ভাঙা, মুচি, রাজমিস্ত্রি, ঝুড়ি প্রস্তুতকারক, পুতুল ও খেলনা প্রস্তুতকারক, নাপিত, মালাকার, ধোপা, দর্জি এবং মাছের জাল প্রস্তুতকারক।
advertisement
পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্পের অধীনে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিরা পাবেন পিএম বিশ্বকর্মা সার্টিফিকেট এবং পরিচয় পত্র, নিজের দক্ষতার উন্নতিসাধন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিতে বিশেষ ছাড়, লোন গ্রহণযোগ্যতা, ডিজিটাল লেনদেনের জন্য প্রণোদনা, এবং নিজেদের মার্কেটিং এর সুবিধা।
তবে এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীর ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর। সুবিধাভোগীকে নিবন্ধনের তারিখে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যে নিযুক্ত থাকতে হবে। এই প্রকল্পের অধীনে নিবন্ধন এবং সুবিধাগুলি পরিবারের একজন সদস্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। সরকারি চাকরিতে থাকা ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এই প্রকল্পের অধীনে গ্রহণযোগ্য হবেন না।
এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তি www.pmvishwakarma.gov.in পোর্টালে নিবন্ধন করতে পারেন।
নিবন্ধন করার সময় প্রয়োজনীয় নথি বা তথ্য যেমন সুবিধাভোগীদের বাধ্যতামূলকভাবে আধার, মোবাইল নম্বর, ব্যাংকের বিবরণ, রেশন কার্ডের মতো নথিগুলি দরকার পড়বে। একজন সুবিধাভোগীর রেশন কার্ড না থাকলে তাদের পরিবারের সকল সদস্যের আধার কার্ড তৈরি করতে হবে বলে জানা যায় সূত্র মারফত।
জানা যায় তপশিলি বাণিজ্যিক ব্যাংক, আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাংক, ক্ষুদ্র আর্থিক ব্যাংক, সমবায় ব্যাংক, ননব্যাঙ্কিং ফাইন্যান্স কোম্পানি এবং মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন গুলি এই প্রকল্পের অধীনে ঋণ দেওয়ার যোগ্য।
সূত্র মারফত খবর অনুযায়ী প্রাথমিক জামানতমুক্ত, “এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট লোন” এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ১৮ মাসের মেয়াদে দেওয়া হবে। ঋণের জন্য সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে প্রদেয় সুদের হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হবে। ভারত সরকার কর্তৃক সুদের সাবভেনশন ৮% পর্যন্ত হবে এবং ব্যাংকগুলোকে অগ্রিম প্রদান করা হবে। এছাড়াও ঋণ গুলি প্রকল্পের অধীনে গ্যারান্টি কভারেজের জন্য যোগ্য এবং সুবিধাভোগীকে ঋণের জন্য কোন গ্যারান্টি ফিও দিতে হবে না। ঋণ বিতরণের ৬ মাস পরে কারিগর এবং কারিগরদের কাছ থেকে কোনও পূর্ব প্রদানের জরিমানা নেওয়া হবে না।
এছাড়াও পিএম বিশ্বকর্মার অধীনে দক্ষতা হস্তক্ষেপ এর প্রধান লক্ষ্য হল ঐতিহ্যবাহী কারিগরদের ক্ষমতা বাড়ানো, যারা প্রজন্ম ধরে হাত বা ঐতিহ্যবাহী সরঞ্জাম দিয়ে কাজ করে আসছেন। তাদেরকে সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কাজের আরও উন্নতি সাধন করায় এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য। এই হস্তক্ষেপ্ তিনটি উপাদান নিয়ে গঠিত দক্ষতা যাচাই, মৌলিক দক্ষতা এবং উন্নত দক্ষতা। এছাড়াও প্রশিক্ষণের সময় দিনপ্রতি ৫০০ টাকা করে উপবৃত্তি পাওয়া যাবে বলেও সুত্র মারফত খবর।
এই প্রকল্পের অধীনে গুণমান শংসাপত্র, ব্র্যান্ডিং, বিজ্ঞাপন, প্রচার এবং অন্যান্য বিপণন ক্রিয়া-কলাপের আকারে বিপণন সহায়তা সুবিধাভোগীদের কাছে প্রসারিত করা হবে যাতে এমএসএমই এবং প্রতিষ্ঠিত সংস্থাগুলির মান শৃংখলের সঙ্গে তাদের সংযোগ উন্নত করা যাতে।
এই প্রকল্পের সুবিধা নিতেই শান্তিপুরের বেশ কিছু ডিজিটাল সেবা কেন্দ্রগুলিতে ভিড় করেছেন নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমাজের খেটে খাওয়া মানুষজনেরা। এই প্রকল্প এর সুবিধা নিয়ে ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আর্থিক স্বাবলম্বী হওয়ায় তাদের এখন মূল লক্ষ্য।
Mainak Debnath