আজকের দিনে সোনার গয়না ঘরে রাখাটা মোটেও নিরাপদ নয়। কারণ চুরির ভয় সবসময় থাকে। তাই সোনা কেনার পরই কোথায় রাখা হবে, সেই ভাবনা ঘিরে ধরে প্রত্যেককেই। সোনা কেনার সঙ্গে তা নিরাপদে রাখার ভাবনা খুবই স্বাভাবিক। এখানে সোনা রাখার কয়েকটি সর্বোত্তম উপায় নিয়ে আলোচনা করা হল।
আরও পড়ুন: ভারতে আসছে সবচেয়ে সস্তার ইলেকট্রিক গাড়ি! দেখে নিন কত দাম রাখা হয়েছে
advertisement
ডিজিটাল গোল্ড: বাড়িতে সোনা রাখাটা চাপের। দায়িত্ব বেড়ে যায়। সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। এক্ষেত্রে অনলাইনে ডিজিটাল সোনায় বিনিয়োগ করাই আদর্শ। এক্ষেত্রে বাড়িতে সোনা রাখার ঝামেলা নেই। অথচ সোনাতে বিনিয়োগ করাও হল। তার লাভও পাওয়া যাবে। ডিজিটাল সোনায় বিনিয়োগ করার মানে পছন্দ মতো হলুদ ধাতু কেনা ও বিক্রি করার ছাড়পত্র পাওয়া। এক্ষেত্রে বিপুল টাকা বিনিয়োগ করতে হবে, তেমনও নয়। পছন্দ বা সামর্থ্য অনুযায়ী, সামান্য পরিমাণ সোনাতেও বিনিয়োগ করা যায়। এমনকী ডিজিটাল গোল্ডে মাত্র ১০০ টাকাও বিনিয়োগ করা যায়। অর্থাৎ ১০০ টাকা মূল্যের কম সোনাতেও বিনিয়োগের সুবিধে এখানে রয়েছে।
গোল্ড এফডি: গোল্ড ডিপোজিট স্কিম গোল্ড মানিটাইজেশন স্কিম নামেও পরিচিত। কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকা সোনাকে সৃজনশীল উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্যই এই স্কিম তৈরি হয়েছে। এটা দেশে সোনা আমদানির উপর নির্ভরতা কমাতেও সহায়তা করে। যে কোনও ভারতীয় নাগরিক এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারেন। গোল্ড এফডি-তে যাতে যৌথভাবে ২ জন বা তার বেশি বিনিয়োগকারী একসঙ্গে বিনিয়োগ করতে পারেন, সেই সুবিধেও রয়েছে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩০ গ্রাম কাঁচা সোনায় (বার, কয়েন বা গয়না আকারে) বিনিয়োগ করতে হয়। তবে সর্বোচ্চ বিনিয়োগের কোনও সীমা নেই।
আরও পড়ুন: সেভিংস স্কিমে মিলছে ৭ শতাংশের বেশি সুদ, দেখে নিন কীভাবে ডবল করবেন টাকা
এই স্কিমের অধীনে প্রাপ্ত সুদ সোনা পরিমার্জনের পর কিংবা ব্যাঙ্কের নির্বাচিত শাখা থেকে সোনা প্রাপ্তির ৩০ দিন পরে ট্রেডযোগ্য গোল্ড বারে রূপান্তরের তারিখ থেকে জমা হতে শুরু করে। সাধারণত দু’ধরনের গোল্ড ডিপোজিটে বিনিয়োগ করা যায়। একটি হল স্বল্পমেয়াদি ব্যাঙ্ক আমানত এবং অন্যটি মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি সরকারি আমানত। এটা উল্লেখ করার মতো যে এসটিবিডি-র মূল এবং সুদ স্বর্ণে চিহ্নিত করা হবে। যদি এমএলটিজিডি-তে বিনিয়োগ করা হয়, তাহলে মূল অর্থ স্বর্ণে ধার্য করা হবে। এমএলটিজিডি-তে সুদ জমা করার সময় সোনার মূল্যের সঙ্গে রেফারেন্স সহ আইএনআর-এ গণনা করা হয়।
ব্যাঙ্ক লকার: সোনা নিরাপদে রাখার সবচেয়ে ভাল উপায় হল লকারে রাখা। এতে সোনা নিরাপদে থাকবে। বিনিয়োগকারীর উদ্বেগও কমে। ব্যাঙ্ক লকারগুলো ইদানীং স্টোরেজ প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুকূল বিকল্প নিয়েও হাজির হয়েছে। মূল্যবান জিনিসপত্র ব্যাঙ্কের লকারে রাখলে গ্রাহকও ঝাড়া হাত-পা। চুরির ভয় থাকে না। ব্যাঙ্কে সোনা রাখার দুটি পদ্ধতি রয়েছে। প্রথমটি হল ব্যাঙ্ক ভল্ট এবং দ্বিতীয়টি সেফটি ডিপোজিট বক্স। অন্যের কাছে নিজেদের সম্পদ রাখতে যাদের অসুবিধে নেই, তাঁরাই ব্যাঙ্ক ভল্ট ব্যবহার করেন। অন্য দিকে, সেফটি ডিপোজিট বক্স যে কোনও গ্রাহক ব্যক্তিগত সম্পদ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
মেটাল ডিপোজিটরি: আর্দ্রতা বেশি হলে সোনার গয়না, বার বা কয়েন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেটাল ডিপোজিটরিতে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের সুব্যবস্থা রয়েছে। তাই সোনার গয়না, বার বা কয়েন রাখার জন্য এই ব্যবস্থা সবচেয়ে নিরাপদ। সোনা বা রুপোর বার বা কয়েন একজন ডিলারের কাছ থেকে কিনে তৃতীয় পক্ষের ডিপোজিটরিতে রাখা যেতে পারে। এখানে স্টক বা বন্ডের মতো সিকিউরিটিজ আমানতও জমা রাখা হয়। যখন এই সম্পদগুলি জমা করা হয়, তখন প্রতিষ্ঠান সিকিউরিটিগুলিকে ইলেকট্রনিক আকারে রাখে যা বই-এন্ট্রি ফর্ম নামেও পরিচিত বা ডিমেটেরিয়ালাইজড বা কাগজের ফর্ম্যাটে যেমন একটি ফিজিক্যাল সার্টিফিকেট। এগুলিতে ধারাবাহিক নজরদারি চালানো হয়। মোড়া থাকে নিরাপত্তা বলয়ে। তাছাড়া মেটাল ডিপোজিটরিতে যে কোনও প্রবেশ বা প্রস্থান ট্র্যাক এবং রেকর্ড করা হয়।