আরও পড়ুন: সঞ্চয়ের থেকে বিনিয়োগ করা ভালো কেন?
টাকা তোলার সীমা:
দৈনিক/মাসিক মোট কত নগদ টাকা তোলা যাবে, তা অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ই জানিয়ে দেওয়া হয়। ব্যাঙ্ক প্রদত্ত সুবিধা এবং পরিষেবা অনুযায়ী এই অঙ্ক বাড়ে অথবা কমে।
মোট লেনদেনের সীমা:
সেভিংস অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি দৈনিক অথবা মাসিক মোট লেনদেনের সীমা নির্ধারিত করে দেয়। মোট লেনদেন-এর অর্থ হল-- তুলে নেওয়া টাকা এবং অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানো মোট অর্থের সমষ্টি। ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সীমার বেশি টাকা তোলা যায় না। মোট লেনদেনের সীমা সাধারণত টাকা তোলার সীমার দ্বিগুণ হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: মিউচুয়াল ফান্ডের সুবিধাগুলি কী কী? কোথায় বিনিয়োগ করলে সব চেয়ে বেশি লাভবান হবেন
সাধারণত বেতনভোগী এবং নিয়মিত আয় আছে, এমন উপভোক্তারা মাসিক উপার্জন থেকে কিছু টাকা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে সেভিংস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে থাকেন। ব্যাঙ্কগুলি এই অ্যাকাউন্টে জমা অর্থের ওপর সুদ প্রদান করে। এই সুদের পরিমাণ ২.৭০% থেকে ৫.২৫% হতে পারে। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সুদের পরিমাণ ভিন্ন হয়। যে হেতু সেভিংস অ্যাকাউন্ট সঞ্চয়ের জন্য পরিকল্পিত এবং ব্যাঙ্কের তরফে বার্ষিক সুদ দেওয়া হয়, সেই কারণে মাসিক অথবা দৈনিক মোট লেনদেন এবং টাকা তোলার অঙ্কে সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও এই সীমা ব্যাঙ্ক অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে থাকে।
আরও পড়ুন: সরকার আজ দিচ্ছে ৫০০ টাকা সস্তায় সোনা কেনার সুযোগ, জেনে নিন কি করতে হবে
সেভিংস অ্যাকাউন্টের মোট পাঁচটি ভাগ রয়েছে-- রেগুলার সেভিংস অ্যাকাউন্ট, বেতন-ভিত্তিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট, সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস অ্যাকাউন্ট, মাইনরস্ সেভিংস অ্যাকাউন্ট, জিরো ব্যালেন্স সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং উইমেনস্ সেভিংস অ্যাকাউন্ট। ব্যাঙ্কের তরফে অ্যাকাউন্টগুলিতে ভিন্ন ভিন্ন বিশেষ পরিষেবা দেওয়া হয়। একটি সেভিংস অ্যাকাউন্টের ধরনের উপর ভিত্তি করে ব্যাঙ্ক টাকা তোলা এবং লেনদেনের সীমা নির্ধারণ করে।
কোন ব্যাঙ্ক থেকে কত নগদ টাকা তুলতে পারবেন এবং মোট কত লেনদেন করা যাবে, তার একটি তালিকা নীচে দেওয়া হল--
RBL ব্যাঙ্ক: এই ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা ATM কার্ড ব্যবহার করে দৈনিক ৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১.৫ লক্ষ টাকা অবধি তুলতে পারবেন। অন্য দিকে এই ব্যাঙ্কগুলি দৈনিক ১০,০০০ টাকা থেকে ৩ লক্ষ টাকা অবধি লেনদেনের স্বাধীনতা প্রদান করে। এর মধ্যে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, নেট ব্যাঙ্কিং এবং অনলাইন শপিংকেও ধরা হয়। সেভিংস অ্যাকাউন্টের ধরনের উপর এই সীমা নির্ভর করে। মাইনরস্ সেভিংস অ্যাকাউন্টের তুলনায় রেগুলার বা সিনিয়র সিটিজেন অ্যাকাউন্টে দৈনিক বেশি টাকা তোলা যায়।
ইয়েস ব্যাঙ্ক: ইয়েস ব্যাঙ্কের উপভোক্তাদের জন্য ব্যাঙ্ক নির্ধারিত টাকা তোলার সীমা হল-- ১০,০০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা। কম পরিষেবাযুক্ত অ্যাকাউন্টে মোট ১ লক্ষ টাকা দৈনিক লেনদেন করা যায় এবং বিশেষ সুবিধাভোগী সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে দৈনিক ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লেনদেনের স্বাধীনতা পাওয়া যায়।
কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক: কোটাক মহিন্দ্রা সেভিংস অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক নির্দেশিকা অনুযায়ী, দৈনিক ৪০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২.৫ লক্ষ টাকা অবধি তোলা যায়। মোট লেনদেনের সীমা টাকা তোলার সীমার প্রায় দ্বিগুণ। দৈনিক ৫০,০০০ থেকে শুরু করে করে সর্বোচ্চ ৪.৫ লক্ষ টাকা তোলা যেতে পারে।
ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক: অন্যান্য ব্যাঙ্কের ন্যায় এই ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের বেশি টাকা তোলার এবং লেনদেন করার সুবিধা রয়েছে। টাকা তোলা এবং লেনদেনের অঙ্ক সেভিংস অ্যাকাউন্টের ধরনের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। এই ব্যাঙ্কে এক জন উপভোক্তা দৈনিক ৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা অবধি তুলতে পারবেন। অন্য দিকে দৈনিক ৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করতে পারবেন।
HDFC ব্যাঙ্ক: এই ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে দৈনিক ২০,০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত তোলার সুবিধা পাবেন গ্রাহকেরা। HDFC ব্যাঙ্কে টাকা তোলার লিমিট বা সীমা বাকিদের তুলনার কম মনে হলেও এই ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের মোট লেনদেনে যথেষ্ট স্বাধীনতা প্রদান করে। এক জন HDFC সেভিংস অ্যাকাউন্টধারী গ্রাহক দৈনিক ২.৭৫ লক্ষ টাকা থেকে ৩.৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করতে পারেন।
AXIS ব্যাঙ্ক: অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক ভারতের অন্যতম প্রথম সারির ব্যাঙ্ক, যারা উপভোক্তাদের সব চেয়ে ভালো পরিষেবা এবং সুবিধা প্রদান করে। এই ব্যাঙ্কের তরফে নির্ধারিত দৈনিক টাকা তোলার সীমা হল-- ৪০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ লক্ষ টাকা। অন্য দিকে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের গ্রাহক দৈনিক ১ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করতে পারেন।
লক্ষ্মী বিলাস ব্যাঙ্ক: এই ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা দৈনিক ১০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা তুলতে পারবেন।