পুরনো লোনের ক্ষেত্রে -
যাঁরা আগে থেকেই হোম লোন অথবা কার লোন নিয়ে রেখেছেন তাঁদের জন্য সবথেকে ভাল উপায় হলো প্রি-পেমেন্ট করা। প্রি-পেমেন্ট করে দিলে গিয়ে ইএমআইয়ের বোঝা অনেকটাই কমে যাবে। লোনের ক্ষেত্রে প্রায় সব সরকারি ব্যাঙ্ক এবং প্রাইভেট ব্যাঙ্ক প্রি-পেমেন্ট করার সুবিধা দেয়। প্রি-পেমেন্ট করে দিলে সেই টাকা সরাসরি লোনের প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়। এর ফলে লোনের মূলধন অনেকটাই কমে যায়। যা সরাসরি লোনের সুদের ওপর প্রভাব ফেলে। এর ফলে সুদের পরিমাণ অনেকটাই কম হয়ে যাওয়ার ফলে ইএমআই-এর ওপরে তার প্রভাব পড়ে না। এর ফলে ইএমআই খুব কম পরিমাণে দিতে হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: বাড়িতে নগদ টাকা রাখছেন? জেনে নিন ক্যাশ রাখার লিমিট, না হলে হতে পারে তদন্ত
নতুন লোনের ক্ষেত্রে -
যদি নতুন হোম লোন অথবা অটো লোন নেওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে লোন নেওয়ার সময় বেশি পরিমাণে ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে। হোম লোনের ক্ষেত্রে এক-দু'লাখ টাকা বেশি দিয়ে দিলে প্রতি মাসের ইএমআই অনেকটাই কম হবে। যদি কেউ ৩০ লাখ টাকার লোন ৭.৫০ শতাংশ সুদের হারে ২০ বছরের জন্য নিয়ে থাকেন, তাহলে প্রতি মাসে তাঁকে ইএমআই দিতে হবে ২৪,১৬৮ টাকা। যদি কেউ ২ লাখ টাকা ডাউন পেমেন্ট করে দেন তাহলে ২৮ লাখ টাকার ওপর তাঁকে ইএমআই দিতে হবে ২২,৫৫৭ টাকা। এর ফলে প্রতিমাসে ১৬১১ টাকা বেঁচে যাবে। সুতরাং লোন পুরো শোধ হওয়া পর্যন্ত প্রায় ৩.৮৬ লাখ টাকা বেঁচে যাবে।
লোনের সময়সীমা বাড়িয়ে নিতে হবে -
ইএমআই-এর বোঝা কমানোর জন্য সবথেকে ভাল উপায় হল লোনের সময়সীমা বাড়িয়ে নেওয়া। লোনের সময়সীমা বাড়িয়ে নিলে প্রতি মাসে ইএমআই-এর বোঝা অনেকটাই কমে যাবে। অর্থাৎ কেউ যদি ৩০ লাখ টাকা ৭.৫ শতাংশ সুদের হারে ২০ বছরের জন্য নেন, তাহলে প্রতি মাসে তাঁকে ইএমআই দিতে হবে ২৪,১৬৮ টাকা। অর্থাৎ ২০ বছরে তাঁকে মোট দিতে হবে ২৮,০০,২৭১ টাকা।
কিন্তু এই লোন যদি পাঁচ বছর বাড়িয়ে ২৫ বছরের জন্য করা হয়, তাহলে প্রতি মাসে ইএমআই দিতে হবে ২২,১৭০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি মাসে ২০০০ টাকা কম ইএমআই দিতে হবে। কিন্তু মোট টাকা শোধ করতে হবে ৩৬,৫০,৯২১। সময় বাড়ালে ৮.৫০ লাখ টাকা বেশি দিতে হবে।
আরও পড়ুন: লঙ্কা চাষ করে বিপুল লাভ! ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মুনাফা, জেনে নিন উপায়
সুদের হার কমানোর জন্য ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে -
যদি গ্রাহকদের লেনদেনের রেকর্ড ভাল থাকে এবং খুবই ভাল সিভিল অর্থাৎ ক্রেডিট স্কোর থাকে তাহলে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে সুদের হার কমানো যেতে পারে। অনেক সময় ব্যাঙ্কের তরফে ভালো ট্র্যাক রেকর্ড দেখে সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ ব্যাঙ্কের তরফের যদি ০.২৫ শতাংশ সুদের হার কমানো হয় তাহলে সুদের হার হয়ে যাবে ৭.২৫ শতাংশ। অর্থাৎ ২০ বছরের জন্য নেওয়া ৩০ লাখ টাকা লোনের ওপর ইএমআই দিতে ২৪,১৬৮ টাকার বদলে ২৩,৭১১ টাকা।
অন্য ব্যাঙ্কে টান্সফার করা যেতে পারে লোন -
যদি ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাতে না চায় তাহলে অন্য ব্যাঙ্কে সেই লোন ট্রান্সফার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে গ্রাহক যে ব্যাঙ্ক থেকে হোম লোন নিয়েছেন, সেই ব্যাঙ্ক বেশি হারে সুদ নিয়ে থাকলে, অন্য কোনও ব্যাঙ্কে সেই লোন ট্রান্সফার করা যেতে পারে। এর ফলে গ্রাহকদের ইএমআই এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে। নতুন ব্যাঙ্কে যদি ০.৫০ শতাংশ কম সুদের হারে লোন অফার করা হয় তাহলে ২০ বছরের জন্য ৭.৫০ শতাংশ হারে ৩০ লাখ টাকার লোনের ওপর ২৩,২৫৯ টাকা ইএমআই হবে। যা ছিল ২৪,১৬৮ টাকা অর্থাৎ প্রতি মাসে ৯০৯ টাকা কম হয়ে যাবে। বছরে প্রায় ১০,৯০৮ টাকা কম হবে।
