ধরা যাক, কারও কাছে জমি নেই, কিন্তু তিনি কৃষিকাজে আগ্রহী। সেক্ষেত্রে তাঁর মুশকিল আসান করতে পারে হাইড্রোপনিক চাষের পদ্ধতি। বোঝাই যাচ্ছে যে, এই কৌশলটি ঐতিহ্যবাহী কৃষিকাজ থেকে একেবারেই আলাদা। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে বসবাসকারীদের জন্য তা অত্যন্ত উপযোগী। যাঁরা নিজেদের বাড়িতে অর্গ্যানিক সবজি চাষ করতে চাইছেন, এই প্রক্রিয়াটি তাঁদের জন্য খুবই উপকারী।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ভয়াবহ আগ্নিকাণ্ড খিদিরপুরে! পুড়ে ছাই হাজার হাজার দোকান
হাইড্রোপনিক কৃষি আসলে একটি উন্নত কৌশল। যেখানে মাটি ছাড়াই গাছপালা জন্মাতে পারে। তবে এক্ষেত্রে গাছপালার জন্য প্রয়োজন হয় শুধুমাত্র পুষ্টিগুণে ভরা জলের। জলের পাইপ অথবা পাত্র ব্যবহার করে গাছের শিকড় সরাসরি জলে স্থাপন করা হয়। তবে অবশ্য সেই জলে গাছের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ এবং পুষ্টি উপাদান যোগ করা হয়।
কৃষি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কপিল দেব আমেতা বলেন যে, এই কৌশলে কৃষিকাজ এখন ভারতেও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে, যেখানে জায়গার অভাব রয়েছে, সেখানে এই পদ্ধতিতে কৃষিকাজের চাহিদা বাড়ছে। এই কৌশলটি অবলম্বন করে কেবল পালং শাক, ধনেপাতা কিংবা লেটুসের মতো শাকই নয়, বেগুন, টম্যাটো, ঢেঁড়শের মতো সাধারণ সবজিও সফল ভাবে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে।
হাইড্রোপনিক চাষের সুবিধা হল, এই ধরনের চাষবাসের জন্য জমির প্রয়োজন হয় না। এটি ছাদ, বারান্দা বা যে কোনও খালি জায়গায় করা যেতে পারে। এর আর একটি বড় বৈশিষ্ট্য হল – কম জলে বেশি ফলন পাওয়া যায়। যদিও ঐতিহ্যবাহী চাষের তুলনায় এতে ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ কম জল ব্যবহার করা হয়।
তবে হাইড্রোপনিক কৌশলে চাষ শুরু করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। এই কৌশলের উপর ভিত্তি করে চাষবাস শুরু করার আগে কিছু প্রাথমিক খরচ হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল – পাইপলাইন, ফসলের পুষ্টির ব্যবস্থা এবং জল সঞ্চালন ব্যবস্থা সংক্রান্ত খরচ। তবে একবার গোটা সিস্টেমটি স্থাপন হয়ে গেলে, এর রক্ষণাবেক্ষণ সহজ এবং তা সাশ্রয়ীও বটে!
যাঁরা কৃষিকাজে আগ্রহী, অথচ জমি না থাকায় সেই সাধ পূরণ করতে পারছেন না, তাহলে তাঁদের জন্য হাইড্রোপনিক কৌশলে চাষবাস একটি দুর্দান্ত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। আর এই কৌশলে চাষ করে দিব্যি ব্যবসাও করা যেতে পারে। বলাই বাহুল্য যে, আগামী দিনে নগর কৃষিকাজের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি হয়ে উঠবে এটি।