যে দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কথা বলা হচ্ছে তারা হলেন সুমি খাতুন এবং রুমি খাতুন। তাদের বাড়ি বীরভূমের নলহাটির দু'নম্বর ব্লকের অন্তর্গত বারা মিরপাড়ায়। এই দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বোবা এবং কালা। তবে ছোট থেকেই তাদের পড়াশোনার প্রতি ছিল অদম্য জেদ। তাদের এই অদম্য জেদ দেখে তার বাবা সমিরুদ্দিন শেখ দুজনের চাহিদামত স্কুল না পেয়ে স্থানীয় বারা লোহাপুর চারুবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। সেখান থেকেই তারা দুজন এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়, তাদের মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছিল লোহাপুর এমআরএম হাইস্কুলে।
advertisement
স্কুল সূত্রে জানা যাচ্ছে বিশেষ ভাবে চাহিদা সম্পন্ন এই দুই পরীক্ষার্থী কোনরকম রাইটারের সাহায্য না নিয়ে পরীক্ষায় বসেন এবং প্রতিটি পরীক্ষা সফলতার সঙ্গে দেন। শুক্রবার তাদের রেজাল্ট বের হতে দেখা যায়, দুজনে একসঙ্গে সফলতা অর্জন করেছেন। শুধু সফলতা অর্জন করেছেন এমনটা নয়, পাশাপাশি স্কুলের সাধারণ অনেক পরীক্ষার্থীর তুলনায় তাদের নম্বর বেশি। এই মাধ্যমিক পরীক্ষায় রুমি খাতুন পেয়েছেন ৩৫৩ এবং সুমি খাতুন পেয়েছেন ৩৯৫। এই পরীক্ষায় সুমি অঙ্কে ৮৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন - Purba Medinipur News: ‘‘জীবে প্রেম করে যেই জন’’... অবলা পশু-পাখিদের জন্য ফ্রি খাবার মিলছে এখানে
এই দুই পরীক্ষার্থী বোবা ও কালা হওয়ার জন্য তাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনেক অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুমিত্রা খাঁ। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু তারা দুজনেই বোবা এবং কালা তাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভাষা তাদের পক্ষে সবসময় বুঝতে পারা অথবা তাদের ভাষা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বুঝে ওঠার ক্ষেত্রে অনেক সম্ভব হয়নি। তবে তা সত্ত্বেও তারা যেভাবে সফলতা অর্জন করেছে তা প্রশংসনীয়।
অন্যদিকে এই দুই যমজ বোনের পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পড়াশুনার প্রতি অদম্য জেদ ছাড়াও তারা দুজনে খেলাধূলা, নাচ এবং ছবি আঁকতে বেশ পারদর্শী। তারা আগামী দিনে যতটা পড়তে চাইবেন তারা ততটাই পড়াবেন।
Madhab Das