গত দু দশক ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে রাজ্যের মেধা তালিকায় যেমন একেবারে উপরের দিকে নাম রয়েছে বাঁকুড়া জেলার তেমনই প্রতি বছরই একটু একটু করে বৃদ্ধি পাচ্ছিল পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা। কিন্তু এবারই উলটপুরান। এক ধাক্কায় জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৩ শতাংশ কমে যাওয়ায় রীতিমত চিন্তার ভাঁজ শিক্ষা দফতরের কপালে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গেছে সারা রাজ্যেই চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে বাঁকুড়া জেলায়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী গতবছর জেলায় মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার ১৫২ জন। এবার জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ৩০ হাজার ২১৩ জন। ছাত্র ছাত্রী উভয় ক্ষেত্রেই কমেছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। গত বছর জেলায় ২৫ হাজার ৫২৭ জন ছাত্র ও ২৭ হাজার ৬২৫ জন ছাত্রী মাধ্যমিক দিয়েছিল। এবার দুই ক্ষেত্রেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৪ হাজার ৬০ জন ও ১৬ হাজার ১৫৩ জন।
advertisement
আরও পড়ুন - Valentine's Day: হায় ভালবাসা, পণ নিয়ে টানাপোড়েন, বউকে প্রেমের দিনে ছুরি মারল খোদ স্বামী
খাতড়া মহকুমা এলাকায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে পঞ্চাশ শতাংশের বেশি। শিক্ষা দফতরের দাবি ২০১২ সালে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সসীমা ন্যুনতম ৫ বছর ৮ মাস থেকে বাড়িয়ে ৬ বছর করা হয়েছিল। তার ফলে ওই বছর ৩০ শতাংশ কম ছাত্র ছাত্রী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। সেই ব্যাচই এবার মাধ্যমিক দিচ্ছে। তাছাড়াও করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল ছুটের সংখ্যা বৃদ্ধি ও একটা অংশের পড়ুয়া পড়াশোনায় অনিয়মিত হয়ে পড়ায় মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় পর্ষদ নির্ধারিত মানে পৌঁছাতে না পারাতেই এই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে বলে ধারনা শিক্ষা দফতরের।
আরও পড়ুন - Madhyamik Exam Tips: হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন, রইল ইতিহাসের পরীক্ষার জন্য শেষ মহূর্তের টিপস
ভর্তির বয়স বদলকে পরীক্ষার্থী কমার মূল কারণ হিসাবে মনে করলেও বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ র দাবি করোনা পরিস্থিতি ও তার পরবর্তীতে স্কুলের পঠন পাঠন স্বাভাবিক ছন্দে আনার ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের খামতিও এই পরীক্ষার্থী কমার অন্যতম কারণ। সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়াকেও এজন্য কাঠগোড়ায় তুলছে এবিটিএ। বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের এই দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল শিক্ষা সেল। তাঁদের দাবি করোনা পরিস্থিতিতে পড়াশোনা অনিয়মিত হলেও পরবর্তীতে সরকারি উদ্যোগে দ্রুত তা ছন্দে ফিরেছে। ২০১২ সালে ভর্তির বয়স বদলই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক ধাক্কায় এতটা কমিয়ে দিয়েছে। পরের বছর ফের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা স্বাভাবিক জায়গায় পৌঁছাবে।
Priyabrata Goswami