বছরের প্রথম এই সূর্য গ্রহণের প্রভাব সব রাশিতে কম বেশি পড়বে বলে মনে করছে জ্যোতিষমহল। বেশ কিছু রাশির জাতকদের সাবধান থাকতে বলা হয়েছে। দীর্ঘ ১৯ বছর পর অশ্বিনী নক্ষত্রে এই সূর্য গ্রহণ হবে। গ্রহণের প্রভাব থেকে বাঁচতে নানা রকম পন্থা বাতলে দিয়েছেন জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞরা।
তবে সব রাশির জন্য বশিষ্ঠ আচার্য শাস্ত্রী বাতলে দিয়েছেন একটি উপায়। গ্রহণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে এই উপায়ে অবলম্বন করার উপদেশ দিয়েছেন তিনি। বশিষ্ঠ আচার্য শাস্ত্রী জানিয়েছেন, গ্রহণের কুপ্রভাব থেকে রক্ষা পেতে সমস্ত রাশির জাতক-জাতিকাদের জন্য হনুমানজি অর্থাৎ বজরংবলীর পুজো করা বেশ কার্যকর হবে। গ্রহণের সময় লালমুখো বানরদের খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে গ্রহণ চলাকালীন যতবার সম্ভব হনুমান চালিশা পাঠ করতে বলেছেন এই জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞ। তিনি জানিয়েছেন চলতি বছরের এই গ্রহণ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই গ্রহণ বিজ্ঞানী মহলে হাইব্রিড সূর্যগ্রহণ বলা হচ্ছে। তিন রকম ভাবে এই গ্রহণ দেখতে পাওয়া যাবে।
advertisement
মেষ রাশি এবং অশ্বিনী নক্ষত্রে হবে এই গ্রহণ। ফলে মেষ রাশির ক্ষেত্রে ভালই কুপ্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জ্যোতিষ মতে গ্রহণের সময় মঙ্গল মিথুনে এবং বুধ মেষ রাশিতে থাকবে। যার ফলে তৈরি হচ্ছে অশুভ যোগ। সূর্যগ্রহণের অশুভ যোগ থেকে সমস্ত রাশি জাতির জাতিকাদের সাবধান থাকতে হবে। তবে এই সময় গ্রহণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এড়াতে হনুমানজির পুজো করার উপদেশ দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু কেন হনুমানজির পুজোর নিদান দিয়েছেন বৈশিষ্ট আচার্য শাস্ত্রী? তিনি জানিয়েছেন, সূর্যদেবের প্রিয় পাত্র পবন পুত্র হনুমান। অঞ্জনি পুত্র ছোট বয়সে সূর্যদেবকেই গ্রাস করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তার কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেছেন হনুমানজি। রামভক্ত হনুমানকে দেবাদিদেব মহাদেবের ১১ তম অবতার বলা হয়। সমস্ত দেব দেবীর আশীর্বাদে তিনি অষ্টসিদ্ধি এবং নব নিধির দাতা। বিষ্ণু অবতার রামচন্দ্রের কাছে থেকে তিনি চিরঞ্জীবী হওয়ার বরদান পেয়েছিলেন। অনেকেই বজরংবলিকে কলির রক্ষাকর্তা বলেন। অনেকেই বলেন, হনুমানজি নাকি লিভিং গড। ভক্তিভরে তাকে ডাকলে, বিভিন্ন সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে হনুমানজির অপর নাম সংকটমোচন। আবার তিনি বরদান লাভের জন্য তিনটি কূল অর্থাৎ দেবকূল, জীবকূল ও প্রেতকূলে বিরাজ করতে পারেন। ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে রক্ষা করতে পারেন নিজের ভক্তকে। হনুমান চালিশা পাঠ করলে মুক্তি পাওয়া যায় বিভিন্ন সংকট থেকে। তাই গ্রহণের সময় যেহেতু নেতিবাচিক শক্তির প্রভাব বৃদ্ধি পায়, তাই গ্রহণের কুপ্রভাব থেকে বাঁচতে হনুমানজির পুজো করার নিদান দিয়েছেন এই জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞ।
আবার রাবণ যখন ছলচাতুরিতে নব গ্রহকে বন্দি বানিয়েছিলেন নিজের পুত্র মেঘনাদকে রক্ষা করতে, তখন সমস্ত গ্রহকে রক্ষা করতে ত্রাতা রূপে হাজির হয়েছিলেন হনুমানজি। ফলে নবগ্রহের আশীর্বাদ রয়েছে হনুমানজির উপর। সেই আশীর্বাদের কৃপায় রক্ষা পান তার ভক্তরাও। যেহেতু সূর্য গ্রহণের সময় গ্রহগুলির উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে, তাই সেই প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করতেও বজরংবলীর আরাধনা যথেষ্ট কার্যকরী বলে জানিয়েছেন বশিষ্ট আচার্য শাস্ত্রী। পাশাপাশি গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে সমস্ত রাশির জাতক জাতিকাদের তিনি যতবার সম্ভব হনুমান চল্লিশা পাঠ করার নিদান দিয়েছেন।
Nayan Ghosh