Success Story: রোজ ৮ ঘণ্টা কাজে ৩৫ টাকা মজুরি, মদ খাওয়ার ভয়ে যেতে চাইতেন না পার্টিতে, ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই হিরো আজ কী করছেন

মুম্বই: ভারতীয় দল যখন ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল তখন সেই দলের সদস্যই শুধু ছিলেন না, দলের বিশ্বকাপ অভিযানে তাঁর অবদানও ছিল চোখে পড়ার মতো৷  তাঁর স্বভাব এবং বিনয়ী -শুরু থেকে আজও মুনাফ প্যাটেল লাইমলাইট থেকে দূরেই থাকেন। মুনাফ একজন ভীষণ সাধাসিধা মানুষ- অনেকেই তাঁকে বোকা হিসেবেও বলেন৷ তিনি এতটাই নিজের ছোটবেলার মূল্যবোধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন যে  যিনি ম্যাচের পরের পার্টিতে যাওয়াও এড়িয়ে চলতেন যতক্ষণ না তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু গৌতম গম্ভীর তাঁকে আশ্বস্ত করতেন যে সেখানে মদ্যপান বাধ্যতামূলক নয়। (AFP Photo)

মুনাফ প্যাটেল গুজরাতে জন্মেছিলেন৷ প্রথমে ভারতের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক কিরণ মোরের নজরে পড়েন এরপর সচিন তেন্ডুলকরের নজরেও তাঁর প্রতিভা পড়ে৷  তরুণ এই ফাস্ট বোলিং সেনসেশন ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বইয়ের হয়ে খেলেছেন। (AFP Photo)

মুনাফ প্যাটেলকে একসময় ভারতের দ্রুততম ফাস্ট বোলার হিসেবে বিবেচনা করা হত। তাঁর প্রতিভা চোখে পড়ার পর তাঁর নৈপুণ্যকে আরও উন্নত করার জন্য  তাঁকে এমআরএফ পেস অ্যাকাডেমিতে পাঠানো হয়েছিল। তবে, ভারতে অভিষেকের কয়েক বছর আগে, মুনাফ কাঁধের চোট পেয়েছিলেন যে জন্য তাঁকে পেস ছাড়তে হয়েছিল৷  (Picture Credit: IG/munafpatel13)

২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের হয়ে অনুশীলন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে মুগ্ধ করার পর ভারতের হয়ে অভিষেক হয় মুনাফ প্যাটেলের। এরপর তিনি ১৩টি টেস্ট, ৭০টি ওয়ানডে এবং তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলে ১২৫টি উইকেট নেন। (Picture Credit: IG/munafpatel13)

মুনাফ একজন খুবই সাধাসিধে মানুষ- একবার একটি ম্যাচ চলাকালীন সময়ে শার্টটি প্যান্টের ভিতরে গুঁজে না রাখার জন্য ধারাভাষ্যকাররা তাঁকে কটাক্ষ করেন। যা ঘিকে বিতর্কের সূত্রপাত হয়৷  জানা যায় যে রাহুল দ্রাবিড় সেই সময় তাণকে বলেছিলেন বিক্ষোভ মেটাতে শার্টটি ভিতরে গুঁজে পরে নিতে। যুবরাজ সিং, হরভজন সিং এবং বীরেন্দ্র সেওয়াগ মুনাফের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করতে একটি পদক্ষেপ নেন৷ তাঁরা বলেছিলেন যে তাঁরা পরের ম্যাচ থেকে তাঁদের শার্টও প্যান্টের ভিতরে গুঁজে পরবেন না। (Picture Credit: IG/munafpatel13)

মুনাফ প্যাটেল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন যে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করেননি কারণ তিনি ছোটবেলায় যে স্কুলে পড়তেন সেখানে বাচ্চারা সাদা জুতো পরত না এবং শার্টও পরত না বলেই তিনি এভাবেই অভ্যস্ত ছিলেন। (Picture Credit: IG/munafpatel13)

মুনাফ প্যাটেলের শৈশব কেটেছে কষ্টের মধ্য দিয়ে। তাঁর বাবা অন্যের খামারে কাজ করতেন; বাড়িতে পর্যাপ্ত খাবারও থাকত না এবং নতুন পোশাক ছিল এমন একটি বিলাসিতা যা তাঁরা কেবল ঈদের সময়ই কিনতে পারতেন। সে সময়েও একটাই পোশাক হত৷ স্কুল ছুটির সময় হতাশ মুনাফ একটি টাইলস কারখানায় কাজ করত যেখানে আট ঘন্টার শিফটের জন্য সে প্রতিদিন ৩৫ টাকা পেত। (AFP Photo)

মুনাফ প্যাটেল ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার বাবা তাকে খেলা ছেড়ে কাজ শুরু করতে বলেছিলেন। যে গ্রামে তিনি বড় হয়েছেন, সেখানকার মানুষ জানত না যে ক্রিকেট ভাল জীবনযাপনের সুযোগ করে দিতে পারে। অবশেষে, গ্রামের কেউ তাঁকে জুতা কিনতে সাহায্য করে এবং তার ক্রিকেট দলে খেলার জন্য বরোদাতে নিয়ে যায়। (Picture Credit: IG/munafpatel13)

মুনাফ প্যাটেল প্রথমে কিরণ মোরের অধীনে প্রশিক্ষণ নেন, যিনি পরে তাকে চেন্নাইয়ের এমআরএফ পেস অ্যাকাডেমিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন, যেখান থেকে ডানহাতি এই পেসারের কেরিয়ার শুরু হয়। (AFP Photo)

মুনাফ প্যাটেলের ফর্ম এবং ফিটনেসের কারণে তিনি দলের বাইরে চলে যান কিন্তু প্রবীণ কুমারের ইনজুরির কারণে ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেয় এবং তাঁকে ডাকা হয়। মুনাফ টুর্নামেন্ট শেষ করেন ১১ উইকেট নিয়ে - যা প্রতিযোগিতায় ভারতের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ। ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল এবং মুনাফকে পরে জয়ের "অখ্যাত নায়ক" হিসেবেই থেকে যান৷ (AFP Photo)

এই জয় সত্ত্বেও, মুনাফ আবারও নির্বাচকদের আস্থা ফিরে পেতে ব্যর্থ হন এবং পরে টিম ম্যানেজমেন্ট তরুণদের দলে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে বাদ দিয়ে দেন। যদিও তিনি বরোদার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যান এবং ২০১৮ সালে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। (Picture Credit: IG/munafpatel13)