ঐতিহ্য-স্মৃতিকে থোড়াই কেয়ার, শান্তিনিকেতনে এখন ‘নতুন’ তৈরির তড়িঘড়ি, ক্ষুব্ধ আশ্রমিকরা
- Published by:Debalina Datta
- news18 bangla
Last Updated:
শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘেরা আর ব্যস্ততা ,ঐতিহ্যশালী ঘণ্টাতলা ও চৈতীবাড়ি ভেঙে পড়ে রয়েছে ৷
advertisement
অন্যদিকে ঐতিহ্যশালী চৈত্যগৃহেরও অবস্থা তথৈবচ। দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে মাটির প্রলেপ, জানালার একটি কাঁচ সম্পূর্ণ উধাও। গোটা শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে শেষের দিন গুনছে শান্তিনিকেতনের সাধের চৈতীবাড়ি। মৃণালিনী ছাত্রীনিবাসের বেড়ার গায়ে বিনা বাধায় জেগে উঠেছে মানুষ সমান আগাছার জঙ্গল। পাঠভবনের আত্মার আত্মীয় সুসজ্জিত আম্রকুঞ্জেও আগাছার ছড়াছড়ি। সবমিলিয়ে এক অভূতপূর্ব দৈন্যদশায় দিন কাটাচ্ছে শান্তিনিকেতনের মূল আশ্রমপ্রাঙ্গণ।
advertisement
অন্যদিকে পাঁচিল তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। মেলার মাঠ ঘেরার কাজ প্রায় শেষ। বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও আন্তর্জাতিক অতিথিনিবাসের সামনেও তৈরি হয়েছে দুটি বিশাল দরজা। যাদের নামকরণ করা হয়েছে যথাক্রমে 'বলাকা' ও 'পূরবী'৷ আশ্রমিকদের একাংশের স্পষ্ট বক্তব্য, দরজার নামকরণে গুরুদেবের সৃষ্টিকে ব্যবহার করা হচ্ছে কিন্তু আশ্রমের ঐতিহ্যরক্ষার দিকে কোনও নজরই নেই কর্তৃপক্ষের।
advertisement
বিশিষ্ট আশ্রমিক শুভলক্ষ্মী গোস্বামী বলেন, “রবীন্দ্র আদর্শ ও ঐতিহ্যকে সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে এখন দরজার নামকরণে রবীন্দ্রনাথকে ঢাল করছেন উপাচার্য। উপাচার্যের প্রত্যেকটি পদক্ষেপেই প্রকাশ পায়, যে তিনি রবীন্দ্রনাথকে জানেন না, চেনেন না”।করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় ৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ পাঠভবনের পঠনপাঠন। বন্ধ বহিরাগতদের প্রবেশও। এমনকি সাংবাদিকদেরও প্রবেশাধিকার নেই আশ্রমপ্রাঙ্গণে। ফলে আশ্রমের অভ্যন্তরীণ অবস্থা সম্পর্কে কিছু ভেসে আসা টুকরো কথা আর টুকরো ছবিই ছিল একমাত্র ভরসা।
advertisement
শনিবার আশ্রমে প্রবেশ করে দেখা গেল প্রকৃত অবস্থা শোনা কথার থেকেও বেশি খারাপ। ঘন্টাতলার পুনর্নির্মাণ ও চৈতীবাড়ির আশু সংস্কার না হলে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য থেকেই হারিয়ে যাবে এই দুই বিখ্যাত স্থাপত্য। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র ঋষভ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘণ্টাতলা ও চৈতীবাড়ি বিশ্বভারতীর কৃষ্টির অঙ্গ। সেগুলি সংরক্ষণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের এই নিরাসক্তি যেমন আশ্চর্যের, তেমনই আশঙ্কারও”।
advertisement
বর্তমানে বেশকিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি বা জিনিসপত্র নিতে সাময়িকভাবে হস্টেলে আসছেন ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ। মৃণালিনী ছাত্রীনিবাসে আগাছার স্তুপ সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিশ্বভারতীর ছাত্র সোমনাথ সৌ বলেন, “হস্টেলের যা অবস্থা তাতে ভিতরের ঘরগুলিতে সাপখোপ থাকাও বিচিত্র নয়। কোনও ছাত্রীর সঙ্গে যদি কোনও দূর্ঘটনা ঘটে তার দায় কিন্তু কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে”। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কোনও উত্তর দেননি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার। Input-Indrajit Ruj