দুই পায়েই জীবন, শারীরিকভাবে সক্ষম জুহির ভরসা তার দু’পা, পায়ের ভরসাতেই মাধ্যমিকের জোর প্রস্তুতি

পড়ার বই নাকি পায়ে ঠেকাতে নেই...বিরূপ হন সরস্বতী । কিন্তু হাওড়ার কালাচাঁদ নন্দী লেনের জুহি পাঁজার পায়েই যে সরস্বতীর বাস। শারীরিকভাবে সক্ষম জুহির ভরসা তার দু’পা। সেই পায়ের ভরসাতেই এখন চলছে মাধ্যমিকের জোর প্রস্তুতি। এ এক অন্য সরস্বতীর গল্প।

দু-পায়েই জীবন। লেখাপড়া থেকে আঁকা। খাওয়া থেকে মোবাইল সার্ফিং। সবকিছুর সঙ্গী দু’ পা। জন্মের সময়েই জীবন জবাব দিতে চেয়েছিল। ছোট্ট জুহির শরীরের কোনো অংশই কাজ করত না। আশা ছেড়ে দেন বাবা-মা। চিকিৎসকের পরামর্শে শুরু হয় ফিজিওথেরাপি। ধীরে ধীরে সচল হয়ে ওঠে দু-পা। হাত আজও অচল-ই।

অশক্ত শরীর.....তবু মনের জোর অটুট। ছোট থেকেই লেখাপড়ায় আগ্রহ। আঁকাও বেশ পছন্দের। নিজের চেষ্টাতেই পা দিয়ে লেখার চেষ্টা করে জুহি। সফলও হয়। ইচ্ছের কাছে হার মানে প্রতিবন্ধকতা। পা দিয়ে লিখতে ও আঁকতে দুটোতেই পারদর্শী হয়ে ওঠে জুহি। স্কুলে এক থেকে পাঁচের মধ্যে র‍্যাঙ্ক তার বাধা। ছবি এঁকে মিলেছে প্রচুর মেডেল, ট্রফি। এবার জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসতে চলেছে ৷

মাধ্যমিকে রাইটার নিচ্ছে না জুহি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে তাকে পরীক্ষায় উত্তর লেখার জন্য অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। মেয়ের এই লড়াই সাহস যোগাচ্ছে মা-কেও।

মাধ্যমিক...তারপর উচ্চমাধ্যমিক.....তারপর আরও ..আরও উঁচুতে উঠতে চায় জুহি। চায় মাথা উঁচু করে বাঁচতে। হাজার কষ্টেও হাসতে ভোলেনি দেবের এই অন্ধ-ভক্ত। জীবন যত যন্ত্রণাই দিক, তাকে নিয়ে আক্ষেপ নেই কোনও। শুধু চায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একবার দেখা করতে। বাগদেবীর আরাধনায় মগ্ন এক অন্য সরস্বতী।